ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

নীলফামারীতে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২২ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২২
নীলফামারীতে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি

নীলফামারী: ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে নীলফামারীতে তিস্তা নদীর বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি ঘটেছে। এতে তিস্তা অববাহিকার চর ও গ্রামগুলো তলিয়ে গেছে।

বেশকিছু এলাকায় ত্রাণ না পৌঁছায় বন্যার্তরা কষ্টে পড়েছেন।
   
শুক্রবার (১৭ জুন) নীলফামারীর তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে সকাল ৬টায় নদীর পানি বিপৎসীমার (৫২.৬০) ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পাশাপাশি রাতভর ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যা কবলিত মানুষজন চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। পানির চাপ মোকাবিলায় ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট ২৪ ঘণ্টা খুলে রাখা হয়েছে বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা। তিনি বলেন সকাল ৯টায় তিস্তার পানি কিছুটা কমে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সূত্রমতে, গতকাল বৃহস্পতিবার তিস্তার পানি বিপৎসীমা বরাবর প্রবাহিত হলেও শুক্রবার বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই, পূর্ব ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, খালিশাচাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী ও জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি, কৈইমারী, শৌলমারী ইউনিয়নের তিস্তার তীরবর্তী ও লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। কোথাও কোথাও গলা সমান ও হাঁটু পানিতে ডুবে আছে ঘরবাড়িসহ উঠতি ফসল। এতে চরাঞ্চলে চাষ করা বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।

টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ময়নুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে মসজিদপাড়া, টাবুরচর, পূর্বখড়িবাড়ি, বাঘের চর, জিঞ্জিরপাড়াসহ ছয়টি এলাকায় পানি প্রবেশ করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ছয় শতাধিক মানুষ। এই ইউনিয়নের স্বপন বাঁধের ৫০ ফুট বিধ্বস্ত হয়ে নদীর পানি প্রবেশ করে ২৮০ পরিবারের বসতঘর তলিয়ে দিয়েছে। এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়েছে ইউপি চেয়ারম্যান।

স্বপন বাঁধ এলাকার বাসিন্দা সবুজ ইসলাম বলেন, গত বন্যায় আমাদের গ্রাম রক্ষা তিস্তা নদীর স্বপন বাঁধটি ভেঙে যায়। বছর পেরিয়ে গেলেও বাঁধের ভাঙা অংশ মেরামত হয়নি। এই বাঁধটি পিআইও অফিসের অধীনে। বাঁধ মেরামতের বরাদ্দ পেয়ে তিন দিন আগে ইউপি চেয়ারম্যান মেশিন লাগিয়ে বালু মাটি দিয়ে মেরামতের চেষ্টা চালায়। কিন্তু একদিন পর কাজ বন্ধ রেখে ইউপি চেয়ারম্যান আর এদিকে আসেনি ও আমাদের কোনো খবর নেয়নি। রান্না করে খাওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি নেই। শুকনা খাবার বিতরণ জরুরি হয়ে পড়লেও এখন কোনো ত্রাণ এলাকায় পৌঁছেনি।

ডিমলার খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম লিখন বলেন, কিসামত, ছাতনাই ও দোহলপাড়া গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে। এসব পরিবারের অধিকাংশ বাড়ি হাঁটু পানিতে তলিয়ে রয়েছে। অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।
ডিমলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, ইউনিয়নের ঝাড়সিংহেশ্বর, পূর্ব ছাতনাই ও খোকার চরের ৫ শতাধিক পরিবার বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। দ্রুত পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে বলে জানান তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।