ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ফেনীতে রমরমা আতর-টুপির বাজার 

সোলায়মান হাজারী ডালিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০২ ঘণ্টা, মে ২, ২০২২
ফেনীতে রমরমা আতর-টুপির বাজার 

ফেনী: ঈদের কেনা-কাটা প্রায় অনেকেরই শেষ কিন্তু শেষ হয়েও যেনো হলো না শেষ। মাথার টুপি আর গায়ের সুগন্ধি তো কেনা হয়নি এখনও।

আর সে কারণেই রমজানের শেষ দিকে এসে মানুষ ভিড় করছে আঁতর, টুপি ও জায়নামাজ কিনতে।  

ফেনী শহরের অভিজাত বিপণিবিতানগুলোর আউটলেট থেকে শুরু করে রাজাঝির দিঘির পাড়ের আঁতর-টুপির দোকানগুলোতে বাহারি টুপি ও আঁতর কিনতে আসছেন নানা শ্রেণি-পেশার ক্রেতারা। ঈদগাহে গিয়ে ঈদের নামাজ পড়ার জন্য কেউ কিনে নিচ্ছেন জায়নামাজও।  

বিক্রেতারা জানিয়েছেন অন্যান্য সময়ের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি বিক্রি হচ্ছে এসব সামগ্রী।

শহরের বড় মসজিদ মার্কেট, ট্রাংক রোড ও রাজাঝির দিঘি পাড়ের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,  গত দুই বছর সেভাবে তাদের ব্যবসা না হলেও এবার বেচাকেনা ভালো। ঈদকে কেন্দ্র করে ভালোই কাটতি এসব পণ্যের।  

শেষ মুহূর্তের ‘কেনাকাটা’ বলতে আতর, তসবি, টুপি, জায়নামাজ। এসব না হলে ঈদের পরিপূর্ণতা অনেকটা না হওয়ার মতো। নতুন জামা-কাপড় পরে সকালে নামাজ পড়তে যাওয়ার আগে সুগন্ধি আতর লাগিয়ে ঈদগাহে যাওয়া হয়। ঈদগাহে নামাজ পড়তে হাতে থাকে জায়নামাজ।

ফেনী পৌর শহর থেকে শুরু করে উপজেলা শহর ও ইউনিয়নের বড় বাজারগুলোর দোকানগুলোতেও চলছে নানা ধরনের সুগন্ধি বিকিকিনি।  

প্রায় প্রতিটি বাজারে ব্যবসায়ীরা টুপি, আতর, জায়নামাজ বিক্রির জন্য পসরা সাজিয়ে বসেছেন। ধনী-গরিব সব শ্রেণির মানুষ এখন আতর, টুপি ও প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ কেনাকাটায় ব্যস্ত। ফুটপাতে মাইকে চটকদার বিজ্ঞাপন বাজিয়ে আতর, গোলাপ, টুপি বিক্রি করছে। সব শ্রেণি-পেশার লোকজনকেই এসব ভাসমান দোকানগুলো ভিড় করতে দেখা গেছে।

এছাড়া সব বয়সের ক্রেতাদের চাহিদাকে মাথায় রেখে দোকানগুলোতে সাজানো রয়েছে দেশি-বিদেশি নানা ধরনের সুগন্ধির পসরা। মার্কেটগুলোতে প্রসাধনীর সঙ্গে নানা ধরনের সুগন্ধির সম্ভার সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা।

শুধু বড় বড় বিপণিবিতান নয়, ফুটপাতের দোকানে দোকানেও এখন আতর-টুপি-জায়নামাজ কেনার ভিড় দেখা গেছে। এছাড়া বিভিন্ন মসজিদের সামনেও পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা।

ফেনী বড় মসজিদ মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, আকর্ষণীয় নকশা আর নানা কারুকার্যে সুসজ্জিত টুপির প্রতি ঝোঁক রয়েছে বেশি। দোকানিরা জানালেন, নকশা ও কারুকার্যের টুপির প্রতি ক্রেতা আকর্ষণ বেশি। এবার বিদেশি টুপির চেয়ে দেশি টুপি বেশি কিনছেন ক্রেতারা। সেখানে গোল টুপি ৫০ থেকে ৫শ টাকা, সোনালি সুতার কারুকাজ করা টুপি ৮শ থেকে এক হাজার টাকা, পুঁতির কারুকাজ করা টুপি দুই থেকে ৩শ টাকা, বাচ্চাদের চুমকি বসানো টুপি ৮০ থেকে ২শ টাকা, জালের তৈরি টুপি এবং সাধারণ টুপি পাওয়া যাচ্ছে ৫০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে।  

সাধারণত ঈদেই আঁতরের চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। ঈদের দিন মনমাতানো সুরভীতে চারপাশ সুভাসিত করতে আতরের বিকল্প নেই।  

ঈদকে সামনে রেখে ফ্রান্স, সৌদি আরব, আমিরাত, মিশর, তুরস্ক ও ভারত থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আতর এসেছে এবারের ঈদ বাজারে।

বিদেশি আতরের পাশাপাশি দেশি আতরের চাহিদাও রয়েছে বেশ। এবার বেশি বিক্রি হচ্ছে ফুলের হালকা সুগন্ধযুক্ত আতর। আতরের দাম ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা, আম্বার কস্তুরি আতর পাওয়া যাচ্ছে ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে। আর দেশীয় সাধারণ আতর পাওয়া যাচ্ছে ৫০ থেকে ৪শ টাকার মধ্যে।

রাজাঝির দিঘি পাড়ের টুপি বিক্রেতা আফসার উদ্দিন জানান, এবারের ঈদে তিনি এসব পণ্য বিক্রি করার জন্য কয়েক লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। মাশাআল্লাহ, ১০ রমজানের পর থেকেই মানুষের কাছ থেকে ভালো সাড়া পাচ্ছেন। ২৭ রমজানের পর থেকে বিক্রি বেড়েছে কয়েকগুণ। প্রায় ৩ লাখ টাকার টুপি আতর কিনেছেন বিক্রির জন্য।  

ফেনী বড় মসজিদ মার্কেটের কয়েকজন ক্রেতা জানান, অনান্য বছরের থেকে এবার টুপি প্রতি ১০/২০ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন করোনার প্রভাবে বেড়েছে সুতার দাম বেড়েছে আর সে কারণে বাড়ানো হয়েছে টুপির দামও।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, মে ০২, ২০২২
এসএইচডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।