কক্সবাজারে শারদীয় দুর্গোৎসবের সমাপ্তি ভিন্ন আবেগ ছুঁয়ে গেছে। সমুদ্র সৈকতের বালুচরে বিজয়া দশমীর বিসর্জন অনুষ্ঠানে উচ্চারিত হয়েছে ‘ফিলিস্তিন মুক্তির আহ্বান’।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বিকেলে লাখো মানুষের সমাগমে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতা অরুপ শর্মা বলেন, আমরা দেবী দুর্গার বিদায় জানাচ্ছি। কিন্তু মানবতার সংগ্রাম চিরন্তন। তাই এই মুহূর্তে আমরা ফিলিস্তিনের মানুষের শান্তি ও মুক্তির জন্য প্রার্থনা করছি।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি উদয় শঙ্কর পাল জানান, এবারের দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। শুধু ধর্মীয় সম্প্রীতি নয়, মানবিক মূল্যবোধও ফুটে উঠেছে এই আয়োজনের মাধ্যমে। বিদায়ের সুরে ফিলিস্তিনের মুক্তির প্রার্থনা আমাদের সমবেদনা ও সহমর্মিতার বহিঃপ্রকাশ।
অনুষ্ঠানে তরুণ-তরুণীরাও হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানান। অংশগ্রহণকারী অতসী দে বলেন, বিজয়ার শুভেচ্ছার পাশাপাশি আমরা চাই বিশ্বশান্তি। ফিলিস্তিনের মানুষ মুক্তভাবে বাঁচতে পারুক, সেটাই আমাদের আহ্বান।
একই দলে থাকা আবদু রশিদ মানিক বলেন, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানবতার জয়গানই আজ এখানে শোনা যাচ্ছে। বিজয়ার আনন্দকে আমরা ফিলিস্তিনের মুক্তির প্রার্থনার সঙ্গে মিলিয়ে দিয়েছি।
পূণ্যার্থী সীমা দত্ত বলেন, আজকের দিনটা কেবল বিদায়ের নয়, মানবতার ডাকও শোনা গেল। সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গে ফিলিস্তিন মুক্তির আহ্বান শুনে সত্যিই অন্যরকম লাগছে।
স্থানীয় দর্শনার্থী নুরুল হাসান বলেন, আমি মুসলিম হয়েও বিজয়া দশমীর এ দৃশ্যে উপস্থিত হয়ে অভিভূত হয়েছি। এখানে সম্প্রীতির পরিবেশ বিরাজ করছে।
দেবী দুর্গার বিদায়ের সময় দশমীতে আসা লোকজনের মুখে ছিল সম্প্রীতির বার্তা, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। একইসঙ্গে তারা উচ্চারণ করেছে, ফিলিস্তিন হোক মুক্ত।
সৈকতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রায় পাঁচ শতাধিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন ছিল। সেনাবাহিনীও মাঠে ছিল। এক জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা জানান, এত বড় সমাবেশে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুরো সৈকত এলাকায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।
বিজয়ার মঞ্চে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও বক্তব্য দেন। সবাই মিলেই সম্প্রীতির বার্তা দেন। কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্যমতে, এবারের দুর্গোৎসব জেলায় ৩১৭টি পূজামণ্ডপে অনুষ্ঠিত হয়।
এমজে