ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৪ আশ্বিন ১৪৩২, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭ রবিউস সানি ১৪৪৭

সারাদেশ

স্ত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক ও জমি বিরোধে ইজিবাইক চালককে হত্যা  

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:৩৫, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৫
স্ত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক ও জমি বিরোধে ইজিবাইক চালককে হত্যা   পুলিশের সংবাদ সম্মেলন

স্ত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক এবং জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে আকবার ফকির (৬০) নামে এক ইজিবাইক চালককে গলা ও পুরুষাঙ্গ কেটে হত্যা করেছেন বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন গ্রেপ্তার হওয়া বাবু সর্দার (৫৯)।  

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নড়াইল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে একথা জানান পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলাম।

 

জেলা গোয়েন্দা পুলিশ অভিযুক্ত বাবু সর্দারকে রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে লোহাগড়া উপজেলার মশাঘুনি গ্রামের লোহাগড়া-নড়াইল সড়কের পাশ থেকে গ্রেপ্তার করে। বাবু সর্দার সদর থানার শড়াতলা গ্রামের বাসিন্দা এবং নিহত আকবর ফকিরের প্রতিবেশী।  

গ্রেপ্তারকৃত বাবু সর্দার হত্যার কথা স্বীকার করে সম্পূর্ণ ঘটনা একাই ঘটিয়েছেন মর্মে সোমবার দুপুরে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।  

পুলিশ জানায়, জমিজমা নিয়ে বিরোধ এবং প্রায় ১৫ বছর আগে ১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে শোধ না করায় বাবু সর্দারের স্ত্রীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক সম্পর্ক চালিয়ে আসছিলেন আকবার ফকির। এছাড়া মেয়ে ও পুত্রবধূর দিকেও আকবার কুনজর দিতেন বলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন বাবু সর্দার। ঘটনার ১০/১২ দিন আগে বাবু সর্দার আকবার ফকিরকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন। সে লক্ষ্যে একটি চাকু ক্রয় করেন এবং স্থানীয় বাজারের ওষুধের দোকান থেকে ২০টি অ্যালার্জির ওষুধ কিনে রাখেন।  

পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন রাতে কৌশলে আকবার ফকিরকে ডেকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যান বাবু সর্দার। সেখানে আগে থেকে প্রস্তুত করে রাখা কোমল পানীয় (স্পিড এর সঙ্গে অ্যালার্জির ওষুধ গুলিয়ে) খেতে দেন। আকবার ফকির এটা পান করার কিছুক্ষণ পরই অচেতন হয়ে পড়েন। পরে ভিকটিমের কাছে থাকা গামছা টুকরো টুকরো করে তার হাত পা গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন। অভিযুক্ত বাবুর কাছে থাকা চুরি দিয়ে প্রথমে গলা কেটে হত্যা করেন। পরে অণ্ডকোষসহ পুরুষাঙ্গ কেটে ঘটনাস্থল সংলগ্ন ডোবায় ফেলে দেন।  

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে সদর থানার শড়াতলা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে রাত ৮টার দিকে চা পান করার কথা বলে বের হন ইজিবাইক চালক আকবার ফকির। ওই দিন রাতে তিনি আর বাড়িতে ফেরেননি। পরের দিন শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আউড়িয়া ইউনিয়নের বুড়িখালি গ্রামের একটি বাঁশ বাগানের মধ্যে তাল গাছের সঙ্গে বাঁধা আকবার ফকিরের লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। এ সময় লাশটির গলা ও পুরুষাঙ্গ কাটা অবস্থায় ছিল। পরে নড়াইল সদর থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে।  

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নিহতের বড় ছেলে জিনার ফকির অজ্ঞাতদের আসামি করে নড়াইল সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যার রহস্য উদঘাটনসহ হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে।  

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।