যশোর: আওয়ামী লীগের তিন নেতা এবং নয়জন পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদার দাবিতে মারপিট ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে যশোরের একটি আদালতে নালিশি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
শার্শা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোস্তফা কামাল মিন্টু সোমবার (০৬ অক্টোবর) সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগটি দায়ের করেন।
আদালতের বিচারক জাকিয়া সুলতানা বিষয়টি তদন্ত করে সিআইডি পুলিশকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন। বাদীর আইনজীবী দেবাশীষ দাস বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বাদী অ্যাডভোকেট মোস্তফা কামাল মিন্টু যশোরের শার্শা উপজেলার শ্যামলাগাছি গ্রামের বাসিন্দা।
তার অভিযোগ, ২০০৮ সালের ১৬ জুন রাত ৮টার দিকে শ্যামলাগাছি গ্রামে চাচা আব্দুল মালেকের বাড়ি থেকে শার্শা থানার তৎকালীন এস আই আব্দুস সালাম, এসআই রকিবুজ্জামান, এসআই ইকবাল আহমেদ এবং শার্শা ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা কবিরউদ্দিন তোতা, রফিকুল ইসলাম ও নজরুল ইসলাম তাকে থানায় নিয়ে যান।
থানার নেওয়ার পরপরই তার হাত-পা বেঁধে আসামিরা মারতে শুরু করেন। একপর্যায়ে আসামি এসএম বদরুল আলম ও রকিবুজ্জামান তার কাছে দশ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে তাকে ‘ক্রসফায়ারে’ দেওয়ার হুমকি দেন।
স্বজনদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আসার জন্য তাকে আবারও মারপিট করেন আসামিরা। এরই মধ্যে ওসি তার দুই চোখ বেঁধে এবং দুই হাত পেছনে নিয়ে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে দেন এবং পায়ের পাতা থেকে হাঁটু পর্যন্ত পানির বোতল, লাঠি ও আগ্নেয়াস্ত্রের বাট দিয়ে মারেন।
এজাহারে বলা হয়েছে, খবর পেয়ে বাদীর চাচাতোভাই আব্দুস সালাম পাঁচ লাখ টাকা এনে ওসিকে দেন। কিন্তু বাকি টাকার জন্য তাকে ছেড়ে না দিয়ে আওয়ামী লীগের ওই তিন নেতার সরবরাহকৃত স্থানীয়ভাবে তৈরি একটি শার্টার গান ও দুই রাউন্ড রাইফেলের গুলি দিয়ে চালান দেওয়া হয়।
ওই নির্যাতনের কারণে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। যে কারণে তিনি দেশ ছাড়াও ভারতে চিকিৎসা নিয়েছেন। সন্তানের এই অবস্থা দেখে তার মা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মার যান।
বাদী জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন চিকিৎসা গ্রহণ, এলাকাছাড়া এবং দেশের পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় মামলা করতে তার দেরি হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন, আওয়ামী লীগনেতা কবিরউদ্দিন তোতা, রফিকুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, শার্শা থানার সাবেক ওসি বদরুল আলম, সাবেক এসআই আব্দুস সালাম, সাবেক এসআই রকিবুজ্জামান, সাবেক এসআই ইকবাল আহমেদ, সাবেক এএসআই আজাদ হাওলাদার, কনস্টেবল সুলতান আলম, কনস্টেবল এরশাদুল হক, কনস্টেবল আবুল কালাম ও কনস্টেবল রিয়াজুল ইসলামসহ অজ্ঞাত ২-৩ জন।
এসএইচ