ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

টানা বৃষ্টিতে প্রাণ ফিরে পেলেন কৃষকরা, বাঁচলো কোটি টাকার ডিজেল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২
টানা বৃষ্টিতে প্রাণ ফিরে পেলেন কৃষকরা, বাঁচলো কোটি টাকার ডিজেল

নড়াইল: বৃষ্টি মৌসুমের মধ্যে অনাবৃষ্টির পর গত তিন দিনের টানা ভারী বর্ষনে আবাদি জমিসহ ডোবা ও নালাগুলো পানিতে ভরে উঠেছে। এতে নড়াইলের আমন ধান ও পাট চাষীরা যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছেন।

একই সঙ্গে বেঁচে গেছে প্রায় এক কোটি টাকার ডিজেল। ঝর-ঝর বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে জমি তৈরীসহ আমনের চারা রোপণে যেমন ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা, তেমনি পাট কেটে জাগ দেওয়াটাও অনেক সহজ হয়ে পড়েছে চাষিদের জন্য।

জেলা অফিস সূত্রে জানা গেছে, বৃষ্টির অভাবে ইতোপূর্বে রোপণকৃত আমনের চারা প্রায় শুকিয়ে যেতে চলেছিল। কিন্তু টানা বর্ষণে সেগুলো যেন আবার নতুন জীবন পেতে শুরু করেছে। সব মিলিয়ে কৃষকরা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়েই কোমর বেঁধে নেমেছেন মাঠে। চলতি আমন মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ৩৫ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে।

কালিয়া উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, কালিয়ায় ২৬ হাজার ৪৩৫ হেক্টর আবাদ যোগ্য জমি রয়েছে। চলতি বছর ১১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারন করা হয়েছে। এর মধ্যে সেচ সুবিধা বর্হিভূত জমির পরিমান প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমি। আর চার হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে পাট উৎপাদন করা হয়েছে যেগুলো জাগ দিতে পানির ঘাটতি দেখা দিয়েছিল। এ সময়ে বৃষ্টি না হলে কৃষকের প্রায় ৯৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা মূল্যের ১৩০ মেট্রিকটন ডিজেল খরচ করতে হতো।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, চলতি বছর আমন মৌসুম শুরুর পর থেকে গত কয়েক মাস যাবত অনাবৃষ্টির ছিল। এ কারণে প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল আমন ধান চাষিরা পানি সংকটে জমি তৈরীসহ চারা রোপণ করতে এবং পাট চাষিরা পাট জাগ দিতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। জমিতে রোপণ করা ধানের চারাও শুকিয়ে যেতে শুরু করেছিল। বৃষ্টির ফলে সেগুলো এখন নতুন জীবন পেতে শুরু করেছে। মৌসুম শেষ হলেও গত তিন দিনের বর্ষণে ওইসব জমিতে পানি জমায় এবং ডোবা-নালা পানিতে ভরে যাওয়ায় কৃষকরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেছেন।

কালিয়ার পাঁচগ্রামের কৃষক বাদশা মিয়া বলেন, তিনি প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে এ বছর দেড় বিঘা জমিতে আগেই চারা রোপণ করেছেন। পানির অভাবে সেই চারাগুলো মরতে শুরু করেছিল। বৃষ্টির সুবাদে সেগুলো আবার জীবন্ত হয়ে উঠছে। এখন তিনি আরও দুই বিঘা জমি তৈরী করেছেন। দুই একদিনের মধ্যে তিনি চারা রোপণ শুরু করবেন।

কালিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুবির কুমার বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, অনাবৃষ্টির দুর্যোগ কাটিয়ে কাঙ্খিত বৃষ্টিতে আমন ধানের চাষ সহজ হয়ে উঠেছে। স্থানীয় কৃষকরা প্রায় কোটি টাকার ডিজেল কেনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন। প্রকৃতির ওপর ভরসা করে ইতোমধ্যে যারা ধানের চারা রোপণ করেছেন, তারাসহ যারা রোপণ করতে পারেননি তারাও এই সুযোগটি কাজে লাগাতে পারবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।