কক্সবাজার: কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ থেকে বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদসহ ৫ জন অস্ত্র ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের মাদারবুনিয়া এলাকার মোহাম্মদ ছৈয়দের ছেলে মোস্তাক আহম্মদ (৩৭) ও তার স্ত্রী লতিফা আক্তার (৩৪), একই এলাকার মৃত নুর নবীর ছেলে মো. কাশেম ওরফে মনিয়া (৩৮) এবং মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নের মাঝের ডেইল এলাকার আনজু মিয়ার ছেলে রবিউল আলম (২৮) ও একই ইউনিয়নের শুক্করিয়া পাড়ার মৃত আবুল হাশেমের ছেলে মো. বেলাল হোসেন (৩৮)।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বিকেল ৪টায় কক্সবাজার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহাফুজুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের মাদারবুনিয়া এলাকায় গহীন পাহাড়ে এ অভিযান চালানো হয়।
এর আগে বুধবার (১৫ মে) ভোরে র্যাবের অভিযানে উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড় থেকে রকেট সেল ও গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তারকৃতরা সংঘবদ্ধ অস্ত্র ব্যবসায়ী ও অপরাধী চক্রের সদস্য। এরা মিয়ানমার থেকে অস্ত্র এনে বাংলাদেশের অপরাধীর চক্রের হাতে পৌঁছে দিচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. মাহাফুজুল ইসলাম জানান, টানা ৭২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে উখিয়া ও টেকনাফ থেকে বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার এবং ৫ জন অস্ত্র ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের কাছে গোপন সংবাদ ছিল, দুর্ধর্ষ ডাকাত ও অস্ত্র ব্যবসায়ী পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নিয়ে এসে অপরাধী চক্রের কাছে হস্তান্তরের জন্য সংঘবদ্ধ হয়েছে। এর সূত্র ধরে প্রথমে উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের মাদারবুনিয়া এলাকায় গহীন পাহাড়ে দুর্ধর্ষ ডাকাত মোস্তাকের বাড়ি থেকে মোস্তাক, রবি আলম, কাশেম এবং মোস্তাকের স্ত্রীকে ২টি ওয়ান শুটার গান (এলজি), ৭৭ রাউন্ড গুলি এবং ২৪টি গুলির খোসাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। পরে চক্রটির সদস্য বেলাল টেকনাফ এলাকা থেকে পালিয়ে তার নিজ এলাকা মহেশখালী যাওয়ার সময় রামু উপজেলায় বিজিবির মরিচ্যা চেকপোস্টে গ্রেপ্তার করা হয়।
‘বেলালের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শাপলাপুর এলাকায় সমুদ্র তীরবর্তী ঝাউবাগানের মধ্যে বালির নিচে লুকিয়ে রাখা অবস্থায় ১টি বিদেশি জি থ্রি রাইফেল, ১টি ম্যাগজিন ও ১৫ রাউন্ড তাজা গুলি উদ্ধার করা হয়। ’
পুলিশ সুপার জানান, ডাকাত মোস্তাক একাধিক ডাকাতি, অস্ত্র, মাদক মামলার আসামি এবং তার বিরুদ্ধে ৪টি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মূলতবি রয়েছে। অস্ত্র ব্যবসায়ী রবি আলমের বিরুদ্ধে ৪টি মামলা রয়েছে। এ ব্যাপারে উখিয়া ও টেকনাফ থানায় অস্ত্র আইনে নিয়মিত ২টি মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামিদের ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে অস্ত্র ব্যবসায়ী চক্রের অপর আসামিদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এর আগে বুধবার ভোর ৫টা থেকে উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন গহীন লাল পাহাড়ে রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) আস্তানার সন্ধান পায় র্যাব। যেখানে টানা ৬ ঘণ্টার অভিযানে অস্ত্র, গ্রেনেড ও রকেট সেলসহ দুই সন্ত্রাসীকে আটক করেছে র্যাব।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০২৪
এসবি/এএটি
