ঢাকা, সোমবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

আগরতলা

ত্রিপুরা সরকারের তীব্র সমালোচনা করলেন গৌতম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৯
ত্রিপুরা সরকারের তীব্র সমালোচনা করলেন গৌতম

আগরতলা (ত্রিপুরা): ‘গত ১৯ মাসে প্রায় প্রতিদিনই ত্রিপুরা রাজ্যের শাসক দল বিজেপির আশ্রিত দুষ্কৃতিরা বিরোধী দলীয় কর্মী-সমর্থকদের, বিশেষ করে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিআইএম) কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এ হামলায় সিপিআইএমের কয়েকশ’ কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন।’

শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) আগরতলার মেলার মাঠ এলাকার দশরথ দেব স্মৃতি ভবনের অবস্থিত দলের রাজ্য কমিটির অফিসের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের সমালোচনা করে এমন অভিযোগের কথাই জানান সিপিআইএম ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির সম্পাদক গৌতম দাস।

তিনি বলেন, দলের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনায় রাজ্যের বিভিন্ন থানায় শতাধিক অভিযোগ দায়ের করা হলেও এখন পর্যন্ত শাসকদলীয় কোনো দুর্বৃত্তকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।

তার অভিযোগ, রাজ্যের সিপাহীজলা জেলার অন্তর্গত বিশালগড় এবং বিশ্রামগঞ্জ পার্টি অফিসে শাসকদলের আশ্রিত দুষ্কৃতিরা আক্রমণ চালিয়েছে। এই অফিসগুলোতে পেট্রোল বোমাসহ অন্যান্য আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে আক্রমণ চালিয়ে ভেতরে থাকা কর্মীদেরকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

শুক্রবার সিপিআইএম দলের পক্ষ থেকে এক দল প্রতিনিধি পার্টি অফিসগুলোর বর্তমান পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে যান। এসময় বন্ধ থাকা এসব পার্টি অফিসগুলো তারা পুনরায় খুলে দেন।

প্রতিনিধিদলে গৌতম দাস ছাড়াও ছিলেন- দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী তপন চক্রবর্তী, সংসদ সদস্য ও নারীনেত্রী ঝর্ণা দাস বৈদ্য, সাবেক মন্ত্রী বিজিতা নাথ প্রমুখ। এখনও রাজ্যের বহু জায়গায় সিপিআইএম দলের কার্যালয় জোরপূর্বক বন্ধ করে রাখা হয়েছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

এদিন গৌতম দাস রাজ্য সরকারের প্রতি দ্বিতীয় অভিযোগ হিসেবে বলেন, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ত্রিপুরা স্টেট রাইফেল বাহিনীর (টিএসআর) দু’টি ব্যাটালিয়নকে বন্ধ করে দেওয়া হবে। একইসঙ্গে রাজ্যের গ্রামীণ এলাকা থেকে টিএসআর ক্যাম্প তুলে নেওয়া হবে। এই বিষয়ে তার দাবি, রাজ্য সরকার যেন অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে। কারণ রাজ্যে এখন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এমনিতেই খুব খারাপ অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্পগুলো যদি তুলে নেওয়া হয়, তবে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে। এমন সিদ্ধান্তের পেছনে তিনি ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন বলেও জানান।  

তিনি বলেন, আর কিছুদিন পরে ত্রিপুরা রাজ্যের উপজাতি স্বশাসিত জেলা পরিষদের নির্বাচনের আগে গ্রাম-পাহাড় থেকে ক্যাম্প তুলে নিয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে শাসকদল এই স্বশাসিত জেলা পরিষদ দখলের চক্রান্ত চালাচ্ছে।

তৃতীয় অভিযোগের গৌতম দাস বলেন, আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগে বর্তমানে গ্রেফতার রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমান বিধায়ক বাদল চৌধুরী। শাসক দল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাদল চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। অসুস্থ হয়ে আইসিইউতে (নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র) চিকিৎসারত ছিলেন বাদল চৌধুরী।

‘সেখান থেকেই পুলিশ তাকে আটক করেছে। যা অত্যন্ত অমানবিক। আমরা বাদল চৌধুরীর হয়ে মামলা লড়ার জন্য অন্য রাজ্য থেকে আইনজীবী আনিয়েছি। ওই আইনজীবী জানিয়েছেন, বাদল চৌধুরীর বিরুদ্ধে যেসব ধারায় মামলা করা হয়েছে, ওইসব মামলা হতেই পারে না,’ যোগ করেন গৌতম দাস।

এদিনের এই সংবাদ সম্মেলনে গৌতম দাসের পাশাপাশি দলের অন্যান্য নেতা-কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৯
এসসিএন/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।