ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সুন্দর গরুর চাহিদা বেশি চট্টগ্রামে

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯:২১, মে ১৯, ২০২৫
সুন্দর গরুর চাহিদা বেশি চট্টগ্রামে ...

চট্টগ্রাম: দরজায় কড়া নাড়ছে কোরবানি। সরগরম গৃহস্থের গোয়াল, পশুর খামার।

আনাগোনা বাড়ছে বেপারীর। সাজ সাজ রব পশুর হাটগুলোতে।
বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের কোরবানিদাতাদের পছন্দ দেশি সুন্দর রঙের মোটাতাজা গরু।  

মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি থাকে প্রতিবছর। বিশেষ করে ‘রেড চিটাগাং’ জাতের লাল বিরিষ। কারও পছন্দ নেপালি, অস্ট্রেলিয়ান কিংবা ব্রাহামা জাতের গরু। শুধু গরু নয়, কোরবানির বাজারে মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বাও বিক্রি হয় এখানে। কেউ শখ করে গয়ালও কোরবানি দেন চট্টগ্রামে।  

চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার হিসাব অনুযায়ী চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলা এবং নগরের তিনটি থানায় এবার কোরবানির চাহিদা প্রায় ৮ লাখ ৯৬ হাজার ২৬৯টি পশু। এর মধ্যে কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর উৎপাদন বা প্রাপ্যতা ৮ লাখ ৬০ হাজার ৮৮২টি। ঘাটতি প্রায় ৩৫ হাজার ৩৮৭টি পশু।  

আশার কথা হচ্ছে- চট্টগ্রামের স্থায়ী, অস্থায়ী পশুরহাটগুলোতে আশপাশের বিভিন্ন জেলা বিশেষ করে খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবান, কক্সবাজার, ফেনী থেকে প্রচুর পশু বিক্রির জন্য আনেন গৃহস্থ ও বেপারীরা। ট্রাকে ট্রাকে পশু আসে উত্তরবঙ্গ থেকেও। চট্টগ্রামের স্থানীয় পরিবারগুলো কোরবানির বাইরে নতুন বিয়ে দেওয়া কন্যার শ্বশুর বাড়ির জন্য সামর্থ্য অনুযায়ী কোরবানির গরু, ছাগল কিনে থাকেন। অনেকে শিল্পকারখানার শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন। সব মিলে দেশের অন্যতম বড় পশুর বাজার চট্টগ্রাম। তাই এখানে পশুরু সংকট হওয়ার আশঙ্কা নেই। উল্টো যে বছর বাজারে বেশি পশু থাকে সেবার দাম পড়ে যায়। চাহিদা ও জোগানই নির্ধারণ করে পশুর দর। নগর ও জেলার বিভিন্ন ছোট বড় খামারে যোগাযোগ করেও অনেকে কোরবানির পশু কিনেন। বাসাবাড়িতে পশু কেনার পর রাখার অসুবিধা, খাবার খাওয়ানো, মারা যাওয়ার ঝুঁকি ইত্যাদি বিবেচনায় বেশিরভাগ ক্রেতা কোরবানির আগের দিন পশু কিনতে দেখা যায়।    

চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আলমগীর বাংলানিউজকে বলেন, সরকারি নানা উদ্যোগ, প্রণোদনা ও পৃষ্ঠপোষকতার কারণে গৃহস্থ পর্যায়ে গবাদি পশুর লালন পালন, খামার, উৎপাদন বাড়ছে। এবার চট্টগ্রামে কোরবানির যে চাহিদা আশাকরি তা অভ্যন্তরীণ প্রাপ্যতা থেকে পূরণ হবে, কোনো ধরনের সংকট হবে না।   

সরকারি হিসাবে চট্টগ্রামে কোরবানির জন্য ষাঁড়ের সংখ্যা তিন লাখ ৬৫ হাজার ২৯টি, বলদ ১ লাখ ২১ হাজার ৬৭০টি, গাভি ৪৯ হাজার ১১৪টি এবং মহিষ ৬৪ হাজার ১৬৩টি প্রস্তুত রয়েছে। এর বাইরে দুই লাখ ৫ হাজার ১৭৪টি ছাগল, ৫৫ হাজার ৬৯৭টি ভেড়াও রয়েছে।  অন্যান্য পশু আছে ৩৫টি।

উপজেলা পর্যায়ে চাহিদার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সন্দ্বীপে। এবার সেখানে চাহিদা প্রাপ্যতার সমানই, ৮৫ হাজার ২৫০টি পশুর। চাহিদা সবচেয়ে কম বোয়ালখালীতে, ২৯ হাজার ৭৪২টি। আর চট্টগ্রাম নগরীতে পশুর চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৯ হাজার ৭৫৭টি।

সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম জেলায় ২০১১ সালে ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৭৬৭টি পশু কোরবানি দেওয়া হয়। পরের তিন বছর যথাক্রমে ৪ লাখ ৫৬ হাজার, ৪ লাখ ৬০ হাজার, ৪ লাখ ৮৭ হাজার পশু কোরবানি হয়। আর ২০১৫ সালে কোরবানি হয় ৫ লাখ পশু। ২০২৪ সালে চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগরে ৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৬৮টি পশু কোরবানি হয়েছে।     

এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।