ঢাকা, রবিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৮ মে ২০২৫, ২০ জিলকদ ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ভুটান ভ্রমণ: জুলাইয়ে যুক্ত হচ্ছে বড় ফ্লাইট

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩:২৭, মে ১৮, ২০২৫
ভুটান ভ্রমণ: জুলাইয়ে যুক্ত হচ্ছে বড় ফ্লাইট ...

চট্টগ্রাম: বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য ভুটান ভ্রমণে আগে থেকেই অন এরাইভাল ভিসা সুবিধা আছে। কিন্তু পর্যটকদের জন্য বাড়তি সাসটেইনেবল ডেভলপমন্ট ট্যাক্স (এসডিএফ) আরোপ, ঢাকা থেকে পর্যাপ্ত ফ্লাইট না থাকা এবং অনলাইনে ফ্লাইট বুকিং সুবিধা না থাকার কারণে চাহিদা থাকা সত্ত্বেও বিপুল বাংলাদেশি পর্যটক ভুটান যেতে পারতেন না।

এখন সেই ভোগান্তি কমাতে নতুন সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে ভুটান ট্যুরিজম করপোরেশন লিমিটেড (বিটিসিএল)।  

এরই অংশ হিসেবে জুন থেকেই ঢাকায় নতুন অফিস দিয়ে কার্যক্রম শুরু করেছে বিটিসিএল।

পর্যটকদের জন্য এসডিএফ যাত্রী প্রতি ২শ মার্কিন ডলার থেকে কমিয়ে মাত্র ১৫ ডলার নির্ধারণ করেছে। জুলাই মাসে ঢাকা থেকে বড় ফ্লাইটে যাত্রী পরিবহন করবে। এর ফলে আগের তুলনায় দ্বিগুণ যাত্রী পরিবহন সম্ভব হবে।

বিটিসিএল এর সাথে ঢাকার জিটেক অ্যাভিয়েশন লিমিটেড এবং চট্টগ্রামের ট্রেফেল ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এই ঘোষণা আসে। শনিবার (১৭ মে) সন্ধ্যায় জিইসি মোড়ের ট্রেফেল ট্যুরস এর কনফারেন্স হলে এই মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। এতে অন্তত ২০ জন ট্রাভেল এজেন্ট অংশ নেন।  

সভায় বিটিসিএল এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (ভুটান হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট) চেনচো শেরনিং বলেন, ‘বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য আমরা ট্যাক্স জনপ্রতি ২শ ডলার থেকে কমিয়ে মাত্র ১৫ ডলারে নির্ধারণ করেছি। এর ফলে পর্যটকদের খরচ অনেক কমবে। এখন ঢাকা থেকে ভুটানে সপ্তাহে দুটি ফ্লাইটে যাত্রী পরিবহন হয় অর্থাৎ মাসে ৮টির মতো। সবগুলোই ছিল ৪০ সিটের ছোট ফ্লাইট। জুলাই মাস থেকে আমরা ৪টি এয়ারবাস দিয়ে যাত্রী পরিবহন শুরু করছি। এতে একসাথে ১২০ যাত্রী ভুটান নেওয়া সম্ভব হবে। আশা করছি, আগের চেয়ে দ্বিগুণ বেশি যাত্রী আমরা বাংলাদেশ থেকে পাবো’।

বাংলাদেশি পর্যটকদের সার্বিক সহযোগিতা দিতে বিটিসিএল এর সাথে কাজ করছে জি টেক অ্যাভিয়েশন লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ তানভীর আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশি পর্যটকদের ফ্লাইট টিকিট বুকিং, ট্যুর প্যাকেজ, পর্যটকদের যাবতীয় সমস্যা দেখার আগে কোনও অফিস ছিল না। এখন ঢাকায় একটি অফিস খুলেছে ভুটান ট্যুরিজম করপোরেশন। ফলে আগের চেয়ে বেশি পর্যটক বাংলাদেশ থেকে যাবে বলে আমার বিশ্বাস। একেবারে অর্গানিক ন্যাচার যারা ভালোবাসেন তাদের জন্য সেরা গন্তব্য ভুটান’।

ট্রেফেল ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরস এর ম্যানেজার মোহাম্মদ মামুন বলেন, ‘ঢাকা-ভুটান ফ্লাইট পরিচালনা করছে কেবল ভুটানভিত্তিক সরকারি এয়ারলাইনস ড্রুক এয়ার। এখানে বাংলাদেশি এয়ারলাইনসে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দিলে প্রতিযোগিতার কারণে টিকিট ভাড়া অনেক কমে আসবে। আর অনলাইনে ফ্লাইট টিকিট বুকিং সুবিধা না থাকায় অনেক পর্যটককে ভুটান ভ্রমণের সুবিধা আমরা দিতে পারি না। অনলাইনে টিকিট ইস্যুর ব্যবস্থা নেওয়া এবং টিকিট ভাড়া কমানোর পদক্ষেপ নিলে বাংলাদেশিদের আকর্ষণীয় গন্তব্য হবে ভুটান’।  

মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বিটিসিএল এর সিনিয়র ম্যানেজার কান্দু ইয়েতসো, ট্রেফেল ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরসের কর্মকর্তা ইখতিয়ার উদ্দিন সাবিথ, কর্মকর্তা শৈবাল দাশ গুপ্ত, এস আর ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেলসের কর্মকর্তা প্রবাল সাহা, এয়ারবাংলা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইয়াসিন আরাফাত, এয়ার স্টার ট্রাভেলস ইন্টারন্যাশনালের কর্মকর্তা ফারুক হোসাইন, এক্সপো ট্যুরসের ইব্রাহিম খলিল, সাঙ্গু ট্যুরসের এমডি হান্নান, কুহেলিয়া ট্যুরসের সাইফুল কবির প্রমুখ।

সভায় বক্তারা ড্রুক এয়ারের পাশাপাশি বাংলাদেশি এয়ারলাইনসগুলোকে ভুটানে ফ্লাইট চলাচলে অনুমতির দাবি জানান। বিটিসিএল কর্মকর্তারা স্বীকার করেন, অন্য এয়ারলাইনসকে ফ্লাইট পরিচালনা করতে দিলে ভাড়া কমে আসবে। এজন্য ভুটানে নতুন বিমানবন্দর চালু  হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে, যেটি ২০৩০ সাল নাগাদ চালু হতে পারে।  

সভায় জানানো হয়, বর্তমানে ড্রুক এয়ার ঢাকা থেকে মাসে ৩২০ জন যাত্রী পরিবহন করতে পারে। জুলাই থেকে সেই সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৬শ জনে উন্নীত হবে। ২০২৬ সালে তিন লাখ পর্যটক আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ভুটান সরকার। এর একটি অংশ বাংলাদেশ থেকে আনতে চায় ভুটান সরকার।  

বিটিসিএল এর তথ্যমতে, ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে ২৮ হাজার ৬৭৪ জন পর্যটক ভুটান ভ্রমণ করেছেন। ২০২৪ সালের এপ্রিলে এই সংখ্যা ছিল ১৬ হাজারের বেশি। আর ২৮ হাজার ৬৭৪ পর্যটকের মধ্যে সাড়ে ১৫ হাজারই ছিল ভারতীয়। দ্বিতীয় স্থানে আছে আমেরিকান ১৭৩৪ জন, তৃতীয় স্থানে আছে ব্রিটিশ নাগরিক; যার সংখ্যা ৬৯৭ জন। আর পঞ্চম স্থানে থাকা বাংলাদেশি গেছেন ৫৫৯ জন।  

ঢাকা থেকে দেড় ঘন্টার ফ্লাইটে ভুটান যেতে পারছেন বাংলাদেশি পর্যটকরা। আসা-যাওয়ার ভাড়া ন্যূনতম ৪৭ হাজার ৫শ টাকা। তবে গ্রুপগুলোর ট্যুর প্যাকেজে গেলে খরচ অনেক কমে আসে। ট্রাভেল এজেন্সিগুলো ভুটানে তিন রাত-চার দিনের প্যাকেজ দিচ্ছে ১৯ হাজার টাকায়। এই খরচের মধ্যে আছে বিমান টিকেট ছাড়া থাকা-খাওয়া, এয়ারপোর্ট ট্রান্সফার, ট্যুর গাইড।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৩ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০২৫
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।