অধিনায়ক মিচেল মার্শের একার লড়াইয়ে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাপেল-হ্যাডলি সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতে নিল অস্ট্রেলিয়া।
১৫৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মার্শের অপরাজিত ১০৩ রানের মহাকাব্যিক ইনিংসের কাছে ম্লান হয়ে যায় বাকি অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটারদের সম্মিলিত ৪৯ রান।
বৃষ্টির কারণে দেরিতে শুরু হওয়া ম্যাচে টস জিতে নিউজিল্যান্ডকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠায় অস্ট্রেলিয়া। সিম বোলিং সহায়ক কন্ডিশনে মাত্র দুই ওভার খেলা হতেই ডেভন কনওয়েকে (০) হারায় কিউইরা। এরপর আবার ৩৫ মিনিটের জন্য বৃষ্টি নামলে খেলা বন্ধ থাকে।
খেলা শুরুর পর প্রথম বলেই ছক্কা মেরে ইতিবাচক সূচনা করেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান টিম রবিনসন। তাকে সঙ্গ দেন টিম সেইফার্ট। কিন্তু পাওয়ার প্লের মধ্যেই রবিনসন এবং মার্ক চ্যাপম্যানকে দ্রুত ফিরিয়ে দিয়ে ম্যাচে ফেরে অস্ট্রেলিয়া। পাওয়ার প্লে শেষে নিউজিল্যান্ডের স্কোর দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৪৬।
মার্কাস স্টয়নিসের করা দশম ওভারটি ছিল উইকেট-মেডেন। প্রথম বলেই ড্যারিল মিচেলকে ফেরান তিনি। একপ্রান্ত আগলে রেখে আক্রমণাত্মক খেলতে থাকা সেইফার্টও ১৩তম ওভারে নিজের অর্ধশতক থেকে মাত্র দুই রান দূরে থাকতে আউট হয়ে যান। এরপর মাইকেল ব্রেসওয়েল এবং জিমি নিশাম দ্রুত গতিতে রান তুলে নিউজিল্যান্ডকে বড় স্কোরের স্বপ্ন দেখালেও নিজেদের ইনিংস বড় করতে পারেননি। ১৭তম ওভারে নিশাম এবং ১৮তম ওভারে ব্রেসওয়েল আউট হন। শন অ্যাবট পরের ওভারে আরও দুটি উইকেট তুলে নিলে নিউজিল্যান্ডের ইনিংস ১৫৬/৯ রানে থেমে যায়।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস ছিল পুরোটাই 'ওয়ান ম্যান শো'। তৃতীয় ওভারে ম্যাট হেনরিকে দুটি চার ও একটি ছক্কা মেরে শুরু করেন মার্শ। পরের ওভারে নিজের ওপেনিং সঙ্গীকে হারালেও তিনি থামেননি। ষষ্ঠ ওভারে বেন সিয়ার্সের ওপর চড়াও হয়ে দুই ছক্কা ও দুই চারে ২২ রান তুলে নেন তিনি। পাওয়ার প্লের পরেই ম্যাট শর্ট আউট হলেও মার্শের আগ্রাসন কমেনি। অষ্টম ওভারে পরপর দুটি ছক্কা হাঁকিয়ে মাত্র ২১ বলে নিজের অর্ধশতক পূর্ণ করেন তিনি।
একদিকে যখন মার্শের ব্যাটে রানের ফোয়ারা ছুটছিল, অন্যদিকে তখন নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়ছিল। নবম ওভারে জিমি নিশাম টিম ডেভিড এবং অ্যালেক্স ক্যারিকে (চ্যাপম্যানের দুর্দান্ত ক্যাচ) ফিরিয়ে নিউজিল্যান্ডকে ম্যাচে টিকিয়ে রাখেন। ১১তম ওভারে স্টয়নিসকেও ফেরান তিনি এবং শেষ পর্যন্ত ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করেন।
নিউজিল্যান্ড ধারাবাহিকভাবে উইকেট তুলে নিলেও মার্শের তাণ্ডবের কোনো জবাব খুঁজে পায়নি। সঙ্গী হারানোর ভয় বা বাড়তি দায়িত্বের চাপ, কোনো কিছুই তাকে দমাতে পারেনি। ১৫তম ওভারে ১৫ রান এবং ১৭তম ওভারে আরও ১৫ রান তুলে মার্শ ম্যাচ পুরোপুরি অস্ট্রেলিয়ার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন। পরের ওভারে পুল করতে গিয়ে মিসটাইম শটে নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। এরপর শন অ্যাবট কভার দিয়ে ড্রাইভ করে জয়সূচক রানটি তুলে নিলে সিরিজ জয় নিশ্চিত হয় অস্ট্রেলিয়ার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউজিল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৫৬/৯ (টিম সেইফার্ট ৪৮, মাইকেল ব্রেসওয়েল ২৬; শন অ্যাবট ৩-২৫)
অস্ট্রেলিয়া: ১৮ ওভারে ১৬০/৭ (মিচেল মার্শ ১০৩*, মিচেল ওয়েন ১৪; জিমি নিশাম ৪-২৬)ফলাফল: অস্ট্রেলিয়া ৩ উইকেটে জয়ী।
এমএইচএম