ঢাকা, রবিবার, ১৩ আশ্বিন ১৪৩২, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৭

সারাদেশ

সাংবাদিককে শ্রমিকলীগ ও যুবলীগ নেতার হুমকি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১:০২, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৫
সাংবাদিককে শ্রমিকলীগ ও যুবলীগ নেতার হুমকি শ্রমিকলীগের সহ-সভাপতি কালাম বিশ্বাস ও যুবলীগ নেতা বালাম বিশ্বাস।  

ফরিদপুরের সালথা প্রেসক্লাবের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার প্রতিনিধি শফিকুল ইসলামকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন সালথা উপজেলা শ্রমিকলীগের সহ-সভাপতি কালাম বিশ্বাস ও যুবলীগ নেতা বালাম বিশ্বাস।  

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এক সালিশ বৈঠকে এ হুমকি দেন তারা।

 

কালাম বিশ্বাস আগে সালথা উপজেলা শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। নতুন করে সালথা উপজেলা শ্রমিকদলের সভাপতি হিসেবে পদ ভাগিয়েছেন। আর বালাম বিশ্বাস যুবলীগ নেতা হলেও নিজেকে যুবদল নেতা দাবি করে থানার দালালি ও সালিশ বাণিজ্য করে বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়ে গেছেন। তার নামে চুরি, চাঁদাবাজী, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তার বাবা ইউনুস বিশ্বাস গ্রাম পুলিশ।  

হুমকির ঘটনায় সালথা থানায় রাতে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন সালথা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও যুগান্তর প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম।  

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, সালথা বাজারের বটতলায় তাদের মালিকানার একটি দোকান ঘর ভাড়া নেন আনোয়ার মোল্যার ছেলে লিয়াকত মোল্যা (৩৩)। পরে ভাড়ার পরিবর্তে ওই দোকান ঘরে নিজেরাই ব্যবসা করবেন সিদ্ধান্ত নিয়ে ভাড়াটিয়া লিয়াকতকে ঘর ছেড়ে দেওয়ার জন্য মৌখিকভাবে জানান। তাকে নিয়মানুযায়ী তিন মাসের নোটিশও দেওয়া হয়। লিয়াকত মোল্লা দোকান ছাড়বেন না বলে জানালে এদিন সালথা বাজার কমিটির সেক্রেটারির অফিসে বিষয়টি নিয়ে সালিশ বসে।

ওই সালিশের একপর্যায়ে জামাল ওরফে বালাম বিশ্বাস (৩০), কালাম বিশ্বাস (৪০), দেলোয়ার মাতুব্বর (৪০), সোহরাপসহ (৩০) আরও অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে এসে এভাবেই হুমকি দিয়ে যায় শ্রমিকলীগের সহ-সভাপতি কালাম বিশ্বাস ও যুবলীগ নেতা বালাম বিশ্বাস।  

সালিশের মধ্যে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। বালাম বিশ্বাস বলেন, 'কোনো সাংবাদিক গুনার টাইম নাই, আমরা এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে বেড়াই। লিয়াকত মোল্যা তোদের দোকান ছাড়বে না, তুই যা পারিস তাই করে দেখা। কালাম বিশ্বাস বলে, তোর মুখ থ্যাতলাইয়্যা দিব।  

একথা বলে তেড়ে ওঠার পর শফিকুলের বড় ভাই দৈনিক নয়াদিগন্তের সালথা উপজেলা প্রতিনিধি মো. রেজাউল করিম (৩৫) এগিয়ে এলে তাকে মারধর করার চেষ্টা করে।  

এসময় সালথা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, দৈনিক সমকালের সালথা উপজেলা প্রতিনিধি সাইফুল ইসলামসহ অন্যরা এগিয়ে এলে তারা প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যায়।  

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতাউর রহমানের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি শুনেছি বিষয়টি। কিন্তু এই মুহূর্তে দুর্গাপূজার ডিউটিতে বাইরে রয়েছি বলে বিষয়টি বলতে পারছি না। থানায় যেয়ে বিষয়টি দেখবো।

সালথা প্রেসক্লাবের সভাপতি নুরুল ইসলাম নাহিদ সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম ও তার ভাইকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকির তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি করেন।

তিনি বলেন, গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর এ ধরনের বর্বরোচিত হামলার চেষ্টা গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য মারাত্মক হুমকি। সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম ও তার ভাইকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকির তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার দাবি করছি।

এ বিষয়ে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন পিয়াল বলেন, একজন সাংবাদিককে প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। প্রশাসনকে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দাবি জানাচ্ছি।  

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।