ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ১২ আগস্ট ২০২৫, ১৭ সফর ১৪৪৭

সারাদেশ

৫০০ টাকার জন্য ঘুমের মধ্যে বড়ভাইকে কুপিয়ে খুন

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:৫৬, আগস্ট ১১, ২০২৫
৫০০ টাকার জন্য ঘুমের মধ্যে বড়ভাইকে কুপিয়ে খুন পুলিশের সংবাদ সম্মেলন, ইনসেটে রাফি। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের সিদ্ধেশ্বরপুর গ্রামে সংঘটিত আব্দুর রহিম রাফির (২৬) নৃশংস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে জেলা পুলিশ।

সোমবার (১১ আগস্ট) দুপুরে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক বিফ্রিংয়ে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নোবেল চাকমা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসিফ মহিউদ্দিন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার পরপরই পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং প্রাথমিকভাবে হত্যার কারণ ও অভিযুক্ত ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে তদন্ত করে। গোপন সোর্স, তথ্য প্রযুক্তি, এলাকাবাসীর বক্তব্য এবং আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় নিহতের ছোট ভাইকে (বয়স ১৬) ৯ আগস্ট জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে নিহতের স্ত্রী এবং আশেপাশের মানুষের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ১০ আগস্ট সে তার ভাইকে ঘুমের মধ্যে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করে।  

হত্যার কারণ সম্পর্কে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নোবেল চাকমা বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, ঘটনার আগের দিন অর্থাৎ ৮ আগস্ট রাত অনুমান ৮টার সময় তার ভাই নিহত রাফির কাছে সে ৫শ টাকা চায়। রাফি ছোট ভাইকে টাকা না দিয়ে গালিগালাজ এবং দুর্ব্যবহার করে। এই ঘটনায় বড় ভাইয়ের ওপর ক্ষিপ্ত হয়। পরের দিন শনিবার ৯ আগস্ট সকাল ৭টার সময় ঘুম থেকে উঠে ঘাতক ছোট ভাই দেখে তার মা বাড়িতে নেই। বাড়িতে স্ত্রী না থাকায় সেদিন রাফির ঘরের সব দরজাও খোলা ছিল। বাড়িতে কেউ নেই আর রাফি ঘুমিয়ে ছিল, এই সুযোগে আগের রাতের ঘটনায় ভাইয়ের ওপর রাগের বশবর্তী হয়ে খাটের নিচে থাকা ধারালো দা দিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় ভিকটিম রাফিকে ঘাড়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যা করে।

পরবর্তীতে ঘাতক ছোট ভাই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা বেসিনে ধুয়ে পরিষ্কার করে পুনরায় খাটের নিচে রেখে দেয় এবং তার পরনে থাকা রক্তমাখা লুঙ্গিও খাটের নিচে রেখে দেয়। ঘটনার পর সে বাড়ি থেকে বের হয়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম করতে থাকে।

তবে শুধু এটাই হত্যাকাণ্ডের পেছনে একমাত্র কারণ নয় বলে তিনি জানান। পরিবারিক অশান্তি এবং প্রায়ই দেবর-ভাবি এবং ভাইয়ের সাথে পারিবারিক অশান্তির তথ্য পাওয়া যায় সময়ের সাথে সাথে এই বিষয়গুলো নিয়ে বড় ভাইয়ের ওপর ক্ষোভ বাড়তে থাকে। যেটা শেষ পর্যন্ত হত্যার মাধ্যমে শেষ হয়। গ্রেফতার আসামির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা এবং তার ঘরের খাটের নিচ থেকে তার রক্তমাখা লুঙ্গি উদ্ধার করা হয়েছে।  

দুই দিন আগে অর্থাৎ গত ৯ আগস্ট সকালে নিজ ঘরে আব্দুর রহিম রাফি (২৬) নামে এক ব্যক্তির গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় ভিকটিমের মা মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে কমলগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

সারাদেশ এর সর্বশেষ