ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

ভারত

হায়দ্রাবাদ এনএসটিআইতে ‘স্কিল ইন্ডিয়া’র এক ঝলক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৯
হায়দ্রাবাদ এনএসটিআইতে ‘স্কিল ইন্ডিয়া’র এক ঝলক এনএসটিএআই’র একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। ছবি: বাংলানিউজ

এনএসটিআই, বিদ্যানগর ক্যাম্পাস (হায়দ্রাবাদ) ঘুরে: পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহৎ জনগোষ্ঠী ভারতের। এই জনগোষ্ঠী যেন কেবল সংখ্যার বলয়েই না থাকে, বরং যেন জনশক্তি হয়ে ওঠে সেজন্য নানামুখী পদক্ষেপ-কর্মসূচি নিয়ে কাজ করে চলেছে দেশটির সরকার। এরই অংশ হিসেবে ২০১৪ সালের নভেম্বরে গঠন করা হয় মিনিস্ট্রি অব স্কিল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড এন্ট্রাপ্রিউনারশিপ।

দক্ষতা উন্নয়ন ও উদ্যোগ দেখভালের জন্য গঠিত এই মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করছে ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (এনএসডিএ), ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন (এনএসডিসি), ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (এসএসডিএফ) এবং ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ট্রেইনিং। এই ডিরেক্টরেট জেনারেলের অধীনে ভারতজুড়ে কাজ করছে ন্যাশনাল স্কিল ট্রেইনিং ইনস্টিটিউট (এনএসটিআই)।

দিল্লি-আগ্রা ঘুরে হায়দ্রাবাদ পৌঁছানোর পর চতুর্থ দিন সকালে বাংলাদেশ ইয়ুথ ডেলিগেশন টু ইন্ডিয়া টিমের গন্তব্য এনএসটিআই’র বিদ্যানগর ক্যাম্পাস। ৩৫ একর জমির ওপর গড়ে ওঠা এ সবুজ ক্যাম্পাসে প্রথমে ডেলিগেশন টিমকে বরণ করে নেওয়া হয়। সেখানে একটি মিলনায়তনে ডেলিগেশন টিমের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ট্রেইনিংয়ের রিজিওনাল ডিরেক্টর (তেলেঙ্গানা) এ ভেঙ্কটেশ্বর রাও। তার সঙ্গে ছিলেন এনএসটিআইয়ের বিদ্যানগর ক্যাম্পাসের শীর্ষ কর্মকর্তা ও প্রশিক্ষকরা। মঞ্চে ছিলেন ডেলিগেশন টিমের নেতৃত্বে থাকা ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি (পলিটিক্যাল) নবনীতা চক্রবর্তী। প্রথমেই ডেলিগেটদের সামনে মিনিস্ট্রি অব স্কিল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড এন্ট্রাপ্রিউনারশিপের অধীন ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ট্রেইনিং এবং এর অধীন এনএসটিআইয়ের কার্যক্রম নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। এরপর ডেলিগেটদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ভেঙ্কটেশ্বর রাও। এনএসটিআইতে চলছে প্রশিক্ষণ।  ছবি: বাংলানিউজভারতকে ‘দক্ষ জনশক্তির দেশ’ হিসেবে গড়ে তুলতে ২০১৫ সালের জুলাইয়ে চারটি কর্মসূচি চালু হয়। ওই কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়ন হচ্ছে ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ট্রেইনিংসহ বিভিন্ন পরিদপ্তরে। এই কার্যক্রমের উদ্দেশ্য ২০২২ সালের মধ্যে ভারতে ৪০ কোটি লোককে প্রশিক্ষিত জনশক্তিতে রূপান্তরিত করা। সেসময় ‘স্কিল ইন্ডিয়া’ লোগো উন্মোচনের সঙ্গে সঙ্গে সরকার ট্যাগলাইন প্রচার করে ‘কৌশল ভারত, কুশল ভারত’।

সরকারের সেই লক্ষ্যমাত্রার বিষয়টি উল্লেখ করে মতবিনিময়কালে ভেঙ্কটেশ্বর রাও বলেন, কেবল সরকারি নয়, অসংখ্য বেসরকারি উদ্যোগে ভারতজুড়ে জনশক্তি গড়ে তোলার কাজ চলছে, এটা দেখভাল করছে মিনিস্ট্রি অব স্কিল ডেভেলপমেন্ট। আমরা চাইছি মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি সম্ভাবনায় শিল্পখাতগুলোতে জনশক্তির দক্ষতার আরও বিকাশ ঘটাতে। স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণগুলো চলছে হাতে-কলমে। উদ্দেশ্য বলতে গেলে জনগোষ্ঠীকে জনশক্তি বানিয়ে কাজ পাওয়ার পথ দেখিয়ে দেওয়া এবং উদ্যোগে প্রেরণা যোগানো।

ব্রিফিংয়ের পর এনএসটিআইয়ের বিদ্যানগর ক্যাম্পাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা-প্রশিক্ষকরা ডেলিগেশন টিমকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ঘুরিয়ে দেখান।

এখানে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরস ট্রেইনিং স্কিমের (সিআইটিএস) আওতায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় ইলেক্ট্রিশিয়ান, ওয়ারম্যান, ফিটার, টার্নার, মেশিনিস্ট, ইলেক্ট্রনিক মেকানিককে। প্রশিক্ষণ আছে মোটর মেকানিক ভেহিকল, ওয়েল্ডিংয়েরও।

অন্যদিকে অ্যাডভান্সড ভোকেশনাল ট্রেইনিং কর্মসূচির (এভিটিএস) আওতায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় কম্পিউটার নিউমেরিক্যাল কন্ট্রোল (সিএনসি), কম্পিউটার এইডেড ড্রাফটিং, অ্যাডভান্সড ওয়েল্ডিং, কম্পিউটার সায়েন্স, কন্ট্রোল টেকনোলজি, হিট ইঞ্জিনস, অটোমোবাইল, ইলেকট্রিক্যাল মেইনটেন্যান্স, মেশিন টুল অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স, ইনডাকশন টু ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনোলজি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অটোম্যাশন, মেট্রোলজি অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সপেকশন এবং রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনিংয়ের ওপর। এনএসটিআই বিদ্যানগর ক্যাম্পাসের সামনে বাংলাদেশ ডেলিগেশন টিম।  ছবি: বাংলানিউজএরমধ্যে সিআইটিএসের প্রায় সবগুলো বিভাগের প্রশিক্ষণ সরাসরি দেখার সুযোগ পান ডেলিগেটরা। এভিটিএসে সিএনসি ল্যাব এবং কন্ট্রোল টেকনোলজিসহ আরও কিছু বিভাগের কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন ডেলিগেটরা। সেখানে প্রশিক্ষণার্থীদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন তারা।

প্রশিক্ষকরা জানান, পুরুষ প্রশিক্ষণার্থীদের পাশাপাশি নারী প্রশিক্ষণার্থীদের কথা মাথায় রেখে এখানে বিশেষ সুবিধা রয়েছে। তাদের জন্য আলাদা হোস্টেল রয়েছে। ৩৪০ জন পুরুষ প্রশিক্ষকের বিপরীতে আছেন ৫৩ জন নারী প্রশিক্ষক। এছাড়া সবার জন্য রয়েছে লাইব্রেরি, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থাও।

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ভারতের ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর ভোকেশনাল ট্রেইনিংয়ের (এনসিভিটি) সার্টিফিকেটধারীরা অথবা স্বীকৃত বোর্ড অব টেকনিক্যাল এডুকেশন বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিপ্লোমা বা ডিগ্রিধারীরা আবেদন করতে পারবেন এই হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের জন্য। মে-জুনের দিকে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আবেদন আহ্বান করা হয়। প্রতিবছর আগস্ট থেকে শুরু হয় প্রশিক্ষণ।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৯
এইচএ/

আরও পড়ুন...

**মহাকালের সাক্ষী আগ্রা দুর্গে বাজে বিরহের সুর
** যমুনাপাড়ের বিস্ময় ‘ঐশ্বরিক নিবাস’
** রামোজি ফিল্ম সিটি: এক পাড়াতেই দেশ-বিদেশ
** সালার জং জাদুঘর যেন এক দুষ্প্রাপ্য সংগ্রহশালা
** সান্ধ্যকালীন সাউন্ড-লাইট শো নিয়ে গেলো গোলকোন্ডা যুগে
** উত্তম-সুচিত্রা-শাহরুখ-ঐশ্বরিয়াদের সঙ্গে লাঞ্চ!
** থিয়েটারে ঢুকেই নায়িকা কানেতা, ‘ফিল্ম’ তৈরি ১৫ মিনিটে!
** উষ্ণ অভ্যর্থনা-বর্ণিল আয়োজনে শতযুবাকে আপন করলো জেএনটিইউ
** কেক কেটে জাহানারার জন্মদিন উদযাপন করলো শতযুবা
** নাম লেখা হয়ে গেলো বিল ক্লিনটনের সঙ্গে
** মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ৩৮৪৩ ভারতীয় সেনার স্মৃতিরমিনারে
** মোহনীয় সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীর জয়গান
** ২৫শ বছরের ইতিহাসের জাদুঘরে বাজছে 'কারার ওই লৌহ কপাট'
** ভারতের সংসদে বাংলাদেশের শতযুবা
** মেঘের রাজ্যে মাথা উঁচিয়ে হঠাৎ হিমালয়
** নয়াদিল্লি পৌঁছেছে বাংলাদেশের শতযুবা
** ভারতের পথে ১০০ ‘বাংলাদেশি-বন্ধু’ 
** ১০০ ‘বাংলাদেশি-বন্ধু’ ভারত যাচ্ছে বৃহস্পতিবার
** ভারত যাচ্ছে আরও ‘১০০ বাংলাদেশি-বন্ধু

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।