ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ কার্তিক ১৪৩২, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৭

সারাদেশ

গৌরনদীতে আলোচিত ২ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটিত হয়নি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:৫৮, অক্টোবর ২১, ২০২৫
গৌরনদীতে আলোচিত ২ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটিত হয়নি ফটো সংগৃহীত

ব‌রিশালের গৌরনদীতে আলোচিত দুইটি হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। এরমধ্যে হত্যাকাণ্ডের শিকার যুবক মামুন রাঢ়ী উপজেলার বাটাজোর বন্দর থেকে নিজের ইজিবাইকসহ নিখোঁজ হয়েছিলেন।

তিনি উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের উত্তর মোড়াকাঠী গ্রামের আব্দুস সালাম রাঢ়ীর ছেলে। এ ছাড়াও হত্যাকাণ্ডের শিকার অজ্ঞাতপরিচয় অপর যুবকের পরিচয় গত ১৫ মাসেও নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।  

হত্যাকাণ্ডের শিকার যুবক মামুনের স্বজনরা জানিয়েছেন, ২০২০ সালের ১৯ আগস্ট রাতে গৌরনদীর বাটাজোর বন্দর থেকে নিজের ইজিবাইকসহ নিখোঁজ হয় যুবক মামুন রাঢ়ী। নিখোঁজের সাতদিন পর (২৬ আগস্ট) সকালে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী বার্থী বাজার সংলগ্ন খালের মধ্যে ভেসে ওঠে মামুনের মুখ থেঁতলানো গলাকাটা ক্ষতবিক্ষত লাশ। এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই নিহতের বাবা আব্দুস সালাম রাঢ়ী বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নিহতের স্বজনরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শুরুতেই গৌরনদী মডেল থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত শুরু করেন। পরবর্তীতে থানা পুলিশ হত্যার কোন ক্লু-উদ্ঘাটন করতে না পারায় বাদী মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করেন। আদালতের বিচারক মামলাটি তদন্তের জন্য জেলা সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন। কয়েক দফা সিআইডির কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলসহ নিহতের নিজ গ্রাম পরিদর্শন করে সন্দেহভাজন একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলেছেন। তবে ঘটনার পাঁচ বছর অতিবাহিত হলেও অদ্যবর্ধি হত্যাকাণ্ডের কোন ক্লু-উদঘাটন, নিহতের ব্যবহৃত ইজিবাইক উদ্ধার কিংবা কোন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেননি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন হত্যাকাণ্ডের শিকার যুবক মামুনের স্বজনরা।

অপরদিকে ২০২৪ সালের ২০ জুলাই সকাল নয়টার দিকে উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের মো. গোলাম নবি হাওলাদারের পাট ক্ষেতের আইলে এক ব্যক্তির (পুরুষের) লাশ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। পরবর্তীতে থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।

মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লাশের গায়ে নেভি-ব্লু  রঙের একটি টি-শার্ট ও পরনে জলপাই রঙের একটি গ্যাবাডিং প্যান্ট ছিল। লাশের গায়ের রং কালো, উচ্চতা ৫ ফুট, কোঁকড়ানো দাড়ি ও চুল, মুখমণ্ডল লম্বাটে ও নাক ছোট। লাশটি ফুলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোসকা ও পচন ধরেছে। লাশের দুই পায়ের হাঁটুর নিচে গোড়ালির ওপরে মাংসপেশি বিচ্ছিন্ন অবস্থায় দেখা যায়। সে সময় পুলিশের ধারণা ছিল কোন অজ্ঞাত ব্যক্তি/ব্যক্তিরা ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই থেকে ২০ জুলাই মাসের যে কোনো সময়ে ওই ব্যক্তিকে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য ওই পাট ক্ষেতের আইলের ওপর ফেলে রেখে গেছে।

মামলার দ্বিতীয় তদন্তকারী কর্মকর্তা গৌরনদী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, উপজেলার খাঞ্জাপুর গ্রামের চৌকিদার মো. মাহবুব মৃধা বাদি হয়ে অজ্ঞাতপরিচয়দের আসামি করে লাশ উদ্ধারের দিন রাতেই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। অজ্ঞাত ওই ব্যক্তিকে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে বলে মেডিকেল পরীক্ষার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।  

তিনি আরও জানান, ১৫ মাস পেরিয়ে গেলেও আমরা এখন পর্যন্ত লাশের পরিচয় পাওয়া যায়নি। লাশটি বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়েছে। লাশের পরিচয় না পাওয়ায় হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করা সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে হত্যাকারীরা পার পেয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।  

এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।