ঢাকা, রবিবার, ১২ আশ্বিন ১৪৩২, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৭

সারাদেশ

দুই দশক খালি পড়ে থাকা সিনেমা হলের জায়গায় এখন ‘মার্কাজ মসজিদ’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:৫০, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫
দুই দশক খালি পড়ে থাকা সিনেমা হলের জায়গায় এখন ‘মার্কাজ মসজিদ’ সিনেমা হলের জায়গায় এখন ‘মার্কাজ মসজিদ’

নড়াইলের কালিয়ায় প্রায় ২০ বছর ধরে বন্ধ ও খালি পড়ে থাকা ‘আল্পনা’ সিনেমা হলকে তাবলিগের ‘মার্কাজ মসজিদে’ রূপান্তর করেছে উপজেলা ওলামা ও ইমাম পরিষদ।

গত বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার বিভিন্ন মাদরাসা ও মসজিদের মুহতামিম ও ইমামদের উপস্থিতিতে ওলামা ও ইমাম পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাও. হাফিজুর রহমান উদ্বোধনের মাধ্যমে সিনেমা হলটি ‘কালিয়া উপজেলা তাবলিগী মার্কাজ মসজিদ’ হিসেবে রূপান্তরিত করেন।

জানা গেছে, তাবলিগের ‘আলমী শুরায়ী নেজাম’ নামে একটি সংগঠনের পক্ষে মাওলানা শহিদুল এটি ইজারা নিয়ে ধর্ম প্রচারের জন্য তাবলিগী মার্কাজ মসজিদে রূপান্তরে সহযোগিতা করেছেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা ওলামা ও ইমাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুফতি শহিদুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুফতি হুসাইন আহমেদ, সহ-সভাপতি মাওলানা মফিজুর রহমান ও মাওলানা শফিকুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি নুরে আলম, প্রচার সম্পাদক হাফেজ মাওলানা আবুল হাসান, অর্থ সম্পাদক মুফতি আবু জার গিফরী, দপ্তর সম্পাদক মুফতি ওহিদুজ্জামান সরদার, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মাওলানা শামিম আহমাদ, মুলখানার হুজুর মাওলানা আব্দুর রহমান, বাঐসোনা মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আব্দুল আজিজসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের জামে মসজিদের ইমাম ও খতিবরা।

উদ্বোধনের পর জামাতে জোহরের নামাজ আদায় করা হয়। এরপর অপ্রয়োজনীয় স্থাপনা ভাঙা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু হয়। পুরোপুরি ব্যবহার উপযোগী করতে এখনও চলছে সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ।

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৪ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক শাফায়াত আলী ভবনটির উদ্বোধন করেন ‘টাউন হল’ নামে। পরবর্তীতে ইজারা নিয়ে এখানে ‘আল্পনা’ সিনেমা হল চালু হয়। প্রায় ২০ বছর আগে সিনেমা হলটি বন্ধ হয়ে গেলে ভবনটি আর ব্যবহার হয়নি। দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থেকে ভবনটি এখন জরাজীর্ণ হয়ে যায়।

উপজেলা ওলামা ও ইমাম পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাওলানা হাফিজুর রহমান বলেন, পূর্বের সেটআপ ভেঙে ভেতরে ও বাইরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। শিগগিরই সংস্কার করে এর পূর্ণতা আনা হবে। কালিয়ায় কোনো তাবলিগী মার্কাজ মসজিদ না থাকায় দাওয়াতি কাজে নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হতো। কালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সার্বিক সহযোগিতায় সব সমস্যা দূর হয়েছে -ইনশাল্লাহ।

স্থানীয় ওলামায়ে কেরাম বলেন, যে স্থানটির নাম শুনলেই ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা নাউজুবিল্লাহ বলত, আজ সেখানে আল্লাহু আকবর ও কালেমার ধ্বনিতে মুখরিত হবে।

কালিয়া ইউএনও মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে ভবনটি প্রতিবছরই ইজারা দেওয়ার কথা থাকলেও সিনেমা হল কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দেওয়ার পর গত ২০ বছর এটি ইজারা হয়নি। ফলে জায়গাটি মাদকসেবীদের আড্ডায় পরিণত হয়েছিল। সরকারি সম্পত্তি রক্ষায় ও রাজস্ব আদায়ে ভবনটি ইজারা দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, নড়াইলে একসময় তিনটি সিনেমা হল ছিল—সদরে চিত্রাবাণী, লোহাগড়ায় সন্ধ্যা ও কালিয়ায় আল্পনা। বর্তমানে কোনোটিই আর চালু নেই। সদরে চিত্রাবাণী বন্ধ হওয়ার পর অদূরে আরেকটি সিনেমা হল তৈরি হলেও দর্শক সংকটে এক বছরের মধ্যেই তা বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ওই হলটি মাদরাসায় রূপান্তরিত হয়।

এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।