খাগড়াছড়িতে কিশোরী ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সহিংসতার পর জানা গেল সেই কিশোরীর মেডিকেল পরীক্ষায় ধর্ষণের কোনো আলামত মেলেনি। খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের করা পরীক্ষায় রিপোর্টটিতে সব স্বাভাবিক রয়েছে।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি জেলা সদরের সিঙ্গিনালা এলাকায় অষ্টম শ্রেণির এক পাহাড়ি শিক্ষার্থীকে (১২) অচেতন করে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন। পরে জেলা সদর হাসপাতালে ভুক্তভোগী সেই কিশোরীর মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়। হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. জয়া চাকমার নেতৃত্বে তিন চিকিৎসক এ পরীক্ষা করেন।
ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায় এমন ১০টি সূচকের সবগুলোতে স্বাভাবিক লেখা রয়েছে। শরীরের ভেতর বাহির কোথাও ধর্ষণের চিহ্ন পায়নি চিকিৎসক দল। রিপোর্টটিতে ডা. জয়া চাকমাসহ সই করেন অপর দুই চিকিৎসক ডা. মীর মোশারফ হোসেন ও ডা. নাহিদা আক্তার।
এদিকে গত ২৪ সেপ্টেম্বর এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শয়ন শীল (১৯) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। অপর দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের দাবিতে চলে আন্দোলন যা সংঘাতে রূপ নেয়।
খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ছাবের আহম্মেদ বলেন, মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদনটি আমার কাছে জমা হয়েছে। পরে সিভিল সার্জন অফিস থেকে ডাক্তারি পরীক্ষার প্রতিবেদনটি পুলিশ সুপার কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
এদিকে খাগড়াছড়ি ও গুইমারা সেনা রিজিয়ন কমান্ডার জানিয়েছেন, ‘ধর্ষণ’ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইউপিডিএফ এর পাহাড় অশান্ত করার পরিকল্পনা ছিল। খাগড়াছড়ি সেনানিবাসে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ বলেন, ইউপিডিএফ ধর্ষণ ঘটনাকে পুঁজি করে সাধারণ পাহাড়ি নারী ও কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে দিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে। যা বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ।
গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল কালাম রানা বলেন, সব ধরনের সশস্ত্র সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এবং পাহাড়ে অস্থিতিশীল তৈরি করার পেছনে ইউপিডিএফ দায়ী। আমরা সব সময় তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করি এবং অস্ত্রসহ তাদের গ্রেপ্তার করে এ এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার প্রচেষ্টা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।
এদিকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা সড়ক অবরোধ আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেছে জুম্ম ছাত্র জনতা। দুর্গাপূজা ও প্রশাসনের দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়। তবে অবরোধ প্রত্যাহার হলেও এখনো ১৪৪ ধারা বলবৎ আছে। গত কয়েকদিনের টানা সংঘাতে তিনজন নিহত হয়। সেনাবাহিনী, পুলিশ, পাহাড়ি বাঙালি অনেকে আহত হন। গুইমারায় পুড়িয়ে দেওয়া হয় সরকারি অফিস, দোকান, বসতঘর, গুদাম, মোটরসাইকেল।
এডি/আরআইএস