ঢাকা, শনিবার, ১১ আশ্বিন ১৪৩২, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪ রবিউস সানি ১৪৪৭

জাতীয়

ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না, গাজায় গণহত্যা নিয়ে জাতিসংঘে ড. ইউনূস

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩:৪০, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৫
ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না, গাজায় গণহত্যা নিয়ে জাতিসংঘে ড. ইউনূস ড. মুহাম্মদ ইউনূস

গাজা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদাসীনতা ও সর্বোচ্চ চেষ্টা না করাকে দুঃখজনক উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সবার চোখের সামনে নির্বিচারে গণহত্যা চলছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না।

শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সংস্থাটির ৮০তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে তিনি এ মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি বক্তব্য দেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সবচেয়ে মর্মান্তিক চিত্র আমরা দেখছি গাজায়। শিশুরা না খেয়ে অকাল মৃত্যুবরণ করছে, বেসামরিক জনগোষ্ঠীকে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে, হাসপাতাল, স্কুলসহ একটি গোটা জনপদ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে।

অধ্যাপক ড. ইউনূস বলেন, জাতিসংঘের স্বাধীন তদন্ত কমিশনের সঙ্গে আমরাও একমত—আমাদের চোখের সামনেই একটি নির্বিচার গণহত্যা সংঘটিত হচ্ছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে মানবজাতির পক্ষ থেকে এর অবসানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে না। এ অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না।

পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জোর দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ ও বিশ্বের বিবেকবান নাগরিকদের পক্ষ থেকে আমি আবারও দাবি জানাচ্ছি—এখনই দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান বাস্তবায়ন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র ১৯৬৭ সালের পূর্বের সীমারেখার ভিত্তিতে, যেখানে ইসরাইল ও ফিলিস্তিন শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে থাকবে, তখনই ন্যায়বিচার কার্যকর হবে।

বিশ্বজুড়ে চলমান সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, আমি সবসময় মানুষকে আশার বাণী শুনিয়েছি, কখনো ভয় দেখিয়ে কিছু করার পক্ষপাতী নই। কিন্তু আজ আমাকে ভয়ংকর কিছু কথা বলতে হচ্ছে। সতর্ক করছি—চরম জাতীয়তাবাদ, ক্ষতিকর ভূরাজনীতি ও অন্যের দুর্ভোগের প্রতি ঔদাসীন্য বহু দশকের পরিশ্রমে অর্জিত অগ্রগতি ধ্বংস করছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে বিশ্বে ১২০টিরও বেশি সশস্ত্র সংঘাত চলছে। পারস্পরিক অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতা ভেঙে গেলে এ ধরনের সংঘাত আরও বাড়বে, ব্যাহত হবে উন্নয়ন ও বিনষ্ট হবে বিশ্ব শান্তি।

শান্তি ও সহনশীলতার সংস্কৃতি গড়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে আমরা বিশ্বাস করি, শান্তির সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে—যেখানে সর্বস্তরে সহনশীলতা, অহিংসা, সংলাপ ও সহযোগিতার মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠিত হবে।

এমইউএম/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।