ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

কুষ্টিয়া ছাত্রলীগের নেতা-নেত্রীর চরিত্র নিয়ে টানাটানি!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২২
কুষ্টিয়া ছাত্রলীগের নেতা-নেত্রীর চরিত্র নিয়ে টানাটানি!

কুষ্টিয়া: থানায় জিডি করে, পুলিশের কাছে বার বার জানিয়েও কোনো প্রতিকার না পাওয়ার অভিযোগ তুলে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলা ছাত্রলীগের এক নেত্রী।

বুধবার (২১ সেপ্টম্বর) সকাল ১১টায় কুষ্টিয়া শহরের বড়বাজারের একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নওরিন রহমান নামে এ ছাত্রলীগ নেত্রী বলেন, কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জের হাত ধরে ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করি।

তখন থেকে সে তার বাসায় আমাকে বিভিন্ন কারণে ডাকত। একদিন তার সঙ্গে দল করতে হলে তার যে কোনো শর্তে রাজি হতে বলে। আমি তার প্রস্তাব এড়িয়ে যাই, কিন্ত এক দাদার সঙ্গে আমার টি-শার্ট পরা একটি পারসোনাল ছবি চ্যালেঞ্জ কোনোভাবে হাতে পায়। পরে তার বাসায় ডেকে ছবিটি দেখিয়ে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করে অনৈতিক প্রস্তাব দেয় সে। আমি তার প্রস্তাবে রাজি না হলে ওই ছবি ভাইরাল করার ভয় দেখায়। বাট আমি ভয় পেয়ে তাকে খারাপ মানুষ বলে চলে আসি আর নিজেকে একা রাখার চেষ্টা করি। এ অপমানের প্রতিশোধ নিতে চ্যালেঞ্জ তার ছোট ভাইদের মাধ্যমে ওই ছবি এবং আমার কিছু এডিট করা ছবি ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে বাজে ভাষায় ক্যাপশন দিয়ে প্রচার করে। রাস্তায় দেখা হলে চ্যালেঞ্জের সহযোগীরা আজেবাজে কথাবার্তাসহ নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে আমাকে। দিন দিন এর মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় আমি কোনো উপায় না পেয়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি অভিযোগ দিই। কিন্তু তিনদিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো চ্যালেঞ্জ ও তার সহযোগীরা আমাকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। এমনকি তারপর থেকে বিভিন্ন ফেসবুক আইডি খুলে আমার নামে আরও বেশি আজেবাজে লেখা পোস্ট করছে। আমি বার বার পুলিশকে জানালেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, সহযোগিতা না পেলে আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনো পথ থাকবে না। আমি মঙ্গলবার এসপি আফিসে গিয়েছিলাম, তিনি অফিসে ছিলেন না। আমি এ বিষয়টি জেলার শীর্ষ নেতাদের জানিয়েছি, তারাও কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তারা শুধু আমাকে আশ্বাস দিচ্ছেন যে ‘তোমার ব্যবস্থা আমরা করব’।

এ ঘটনায় তিনি কুষ্টিয়া মডেল থানায় ২০ সেপ্টেম্বর জেলা ছাত্রলীগের ছয় নেতার নাম উল্লেখ করে একটি এজাহার দেন।

এদিকে বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে জেলা ছাত্রলীগ।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান অনিক ও সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ।

আতিকুর রহমান অনিক বলেন, ওই ছাত্রীর সব অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক।

সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ বলেন, কথিত ওই নেত্রী আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। ছাত্রলীগের নেতাদেরও ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, কথিত ওই নেত্রী বিবাহিত, অনেকের সঙ্গে তার অনৈতিক সম্পর্ক ও মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। বিভিন্ন পুরুষের সঙ্গে তার অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। কে বা কারা ছড়িয়েছে, তা আমাদের জানা নেই। কুষ্টিয়া জেলা শাখার কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার আগে বাচাই-বাছাই করতে গিয়ে ওই মেয়ের বিরুদ্ধে স্থানীয় আওয়ামী লীগ থেকে বিস্তর অভিযোগ পেয়েছিলাম। বিয়ে করে মামলা দিয়ে জোর করে অর্থ আদায়, অনৈতিক কাজে সম্পৃক্ততাও রয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে প্রস্তাবিত ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট জেলা কমিটিতে তার নাম দেওয়া হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২২
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।