ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৮ মে ২০২৪, ১৯ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

তাইওয়ানের উত্তাপ ঢাকায়

তৌহিদুর রহমান, ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ৫, ২০২২
তাইওয়ানের উত্তাপ ঢাকায়

ঢাকা: তাইওয়ান ইস্যুতে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে নতুন করে যে উত্তাপ ছড়িয়েছে, তার আঁচ লেগেছে ঢাকাতেও। শেষ পর্যন্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিবৃতি দিয়ে সব পক্ষকে সংযমের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।

 

এদিকে বাংলাদেশ ‘এক চীন নীতি’ মেনে চলবে বলে প্রত্যাশা করেছে চীন।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেই তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। শীর্ষ মার্কিন রাজনীতিবিদ ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রকে চীন ইতোমধ্যে কড়া বার্তা দিয়েছে। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র ঢাকা সফরের আগ মুহূর্তের এ ঘটনায় বাংলাদেশ তাইওয়ান ইস্যুতে তার অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে।

বাংলাদেশ বরাবরই এক চীন নীতিতে সমর্থন দিয়ে আসছে। তবে তাইওয়ান ইস্যু ঘিরে অতীতে বিভিন্ন সময়ে ঢাকা-বেইজিংয়ের মধ্যে টানাপোড়েনও তৈরি হয়েছিলো। বিশেষ করে ২০০৪ সালে ঢাকায় তাইওয়ানের একটি কনস্যুলেট অফিস খোলা হয়েছিলো। সেই ঘটনায় বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে ঢাকার কাছে তীব্র আপত্তি তোলা হয়। বেইজিংয়ের চাপে সেই কনস্যুলেট অফিস পরে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এছাড়া দু’বছর আগে তাইওয়ানের কাছ থেকে বাংলাদেশ কোভিড-১৯ প্রতিরোধ সামগ্রী উপহার নেওয়ার ঘটনায়ও আপত্তি তোলে চীন।

তাইওয়ান ইস্যু চীনের জন্য অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয় বলে বিবেচনা করে ঢাকা। সে কারণে ঢাকার পক্ষ থেকে বরাবরই এক চীন নীতিতে সমর্থন দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফর ঘিরে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়। এ প্রেক্ষিতে ঢাকা জানায়, তাইওয়ানের ঘটনা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা।  

তাইওয়ান ইস্যুতে উত্তেজনা বাড়াতে পারে এবং এই অঞ্চলে ও এর বাইরে শান্তি-স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে এমন কোনো কাজ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়াও বাংলাদেশ ‘এক চীন’ নীতির প্রতি তার দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করছে।

এদিকে ঢাকার চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং এক বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করেছেন, তাইওয়ান প্রশ্নে চীনের আইনস্মত ও ন্যায্য অবস্থান বাংলাদেশ বুঝবে এবং সমর্থন করবে। আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি রক্ষায় চীনের সঙ্গে বাংলাদেশ একসঙ্গে কাজ করবে বলে তিনি আশা করেন। চীন ও বাংলাদেশ একে অন্যের ভালো প্রতিবেশী। তিনি আরও বলেছেন, দুই দেশই একে অপরের বিশ্বস্ত বন্ধু এবং নির্ভরযোগ্য অংশীদার। দুই দেশ সব সময় নিজেদের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাসংক্রান্ত মৌলিক স্বার্থের বিষয়ে একে অপরকে বুঝেছে এবং সমর্থন করেছে।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, আমরা সব সময় এক চীন নীতিতে বিশ্বাস করি। বর্তমান বিশ্ব একটি কঠিন সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় আমাদের আহ্বান থাকবে, সব পক্ষই যেন জাতিসংঘ সনদ অনুসরণ করে। পুরো বিশ্ব আর একটি সমস্যার ভার নিতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

উল্লেখ্য, মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফর ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা চলছে।


বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৫, ২০২২
টিআর/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।