ঢাকা, সোমবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ মে ২০২৪, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

অপচয় রোধ করে বিদ্যুৎ সংকট উত্তরণের আহ্বান রাজশাহীর ডিসির

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০২২
অপচয় রোধ করে বিদ্যুৎ সংকট উত্তরণের আহ্বান রাজশাহীর ডিসির

রাজশাহী: বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেছেন, চলমান বিদ্যুৎ নিয়ে বৈশ্বিক যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে- ‘বিদ্যুতের অপচয় রোধই হতে পারে সংকট উত্তরণের উপায়’। সেই লক্ষ্যে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং দেওয়া হয়েছে।

এর পাশাপাশি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চার্জিং স্টেশনগুলোতে বিশেষ নজরদারি বাড়াতে হবে। যেসব চার্জিং স্টেশনের অনুমোদন নেই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা মাধ্যমে সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ওসিদের নির্দেশনা দেওয়া হবে।

শুক্রবার (২৯ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী সার্কিট হাউজে চলমান বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে জেলার সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জেলা প্রশাসক বলেন, বিদ্যুতের ঘাটতি থাকায় ও বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষি জমি, শিল্পকারখানা ও ব্যবসায়ীদের অসুবিধা হচ্ছে। এ সমস্যা আগামী সেপ্টেম্বরে মধ্যে সমাধান করা হবে।

তিনি আরও বলেন, শিল্পহাবে বিদ্যুৎ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে বলা হয়েছে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতেও বিদ্যুৎ সব সময় রাখতে বলা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে যতটা সম্ভব কম লোডশেডিং করা হচ্ছে। কিন্তু শিল্প এলাকায় এটা মানা সম্ভব হচ্ছে না।

কারণ শুধু কল-কারখানার জন্য আলাদা বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন নেই। তাই কোনো এলাকায় লোডশেডিং করতে হলে সেই এলাকার শিল্প-কারখানাতেও সংযোগ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে কারখানার মালিকরা হতাশায় ভুগছেন বলেও তারা অভিযোগ করছেন।

আব্দুল জলিল বলেন, সাধারণ গ্রাহক ও শিল্প-কারখানার জন্য বিদ্যুতের আলাদা সঞ্চালন লাইন করতে পারলে ভালো হতো। তাহলে এমন হতো যে একটা বাটন চাপ দিলেই সাধারণ গ্রাহকদের সংযোগ বন্ধ থাকবে। আবার এক বাটনেই শিল্প প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ যাবে। এখন না হলেও আগামীতে বিদ্যুৎ বিভাগকে এমন পরিকল্পনা নিয়েই কাজ করতে হবে। তবে বৈশ্বিক সংকটের বিষয়টি সাধারণ মানুষ বুঝতে পেরেছেন। বিদ্যুতের অপচয় রোধে তারাও অনেক চেষ্টা করছেন। এছাড়া বর্তমান প্রেক্ষাপটে রাত ৮টার মধ্যেই যেন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয় সে বিষয়টি মনিটরিং করা হচ্ছে।

আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে জেলা প্রশাসক বলেন, বিদ্যুৎ সংকট নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে উত্তেজনা থাকতে পারে। তাই বিদ্যুৎ বিভাগের যে সমস্ত কর্মকর্তা গ্রাহক পর্যায়ে যান তাদের ধৈর্যশীল হতে হবে। তারা যেন গ্রাহকদের সঙ্গে উত্তেজিত না হন। সুযোগ হলে তারা গ্রাহকদের সমস্যার কথা বোঝানোর চেষ্টা করবেন, কোনোভাবেই বিশৃঙ্খলায় জড়াবেন না।

এদিকে মতবিনিময় সভায় বিদ্যুৎ সাপ্লাই কোম্পানি নেসকোর ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা, পল্লী বিদ্যুতের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে নিজ নিজ এলাকার বিদ্যুৎ পরিস্থিতি জানতে চাওয়া হয়। তারা প্রত্যেকে নিজ এলাকর বিদ্যুৎ পরিস্থিতি তুলে ধরেন এবং বিভিন্ন সমস্যার কথা জানান। এছাড়া এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়।

সভায় বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, রাজশাহীতে দৈনিক চাহিদার ১০ থেকে ১২ শতাংশ লোডশেডিং করার কথা। কিন্তু সরবরাহ কম থাকায় বাস্তবে এর চেয়েও বেশি লোডশেডিং করা হচ্ছে। নেসকো ও পল্লী বিদ্যুতের চাহিদার ঘাটতি থাকছে ২৫ শতাংশের বেশি। তাই লোডশেডিং বেশি হচ্ছে। আগে লোডশেডিংয়ের যে সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে তা মানা সম্ভব হচ্ছে না।

তারা আরও জানান, রাজশাহীতে এখন প্রতিদিন গড়ে ২৫ শতাংশের বেশি বিদ্যুতের ঘাটতি থাকছে। ঘাটতি বেশি থাকার কারণে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা লোডশেডিংয়ের সময়সূচি ঠিক রাখা যাচ্ছে না। বিশেষ করে গ্ৰামে সংকটের কারণে লোডশেডিং বেশি করতে হচ্ছে।

সভায় অন্যদের মধ্যে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দার (এনএসআই) রাজশাহীর যুগ্ম পরিচালক ছানোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) সুজায়েত ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) সনাতন চক্রবর্তী, নেসকোর নির্বাহী পরিচালক (অর্থ) এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) গোলাম আহমেদ, বিতরণ জোনের প্রধান প্রকৌশলী আবদুর রশিদ, বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রোকনুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০২২
এসএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।