ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বাঁশের সাঁকোতে মন্থর জীবন-জীবিকার গতি    

মোমেনুর রশিদ সাগর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২২
বাঁশের সাঁকোতে মন্থর জীবন-জীবিকার গতি
 

 

গাইবান্ধা: দেশে পদ্মা-যমনা সেতুর মতো বড় প্রকল্প বাস্তাবায়িত হলেও উত্তরের জেলা গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার ১০ গ্রামের মানুষের চলাচলে ভরসা বাঁশ দিয়ে বানানো একটি সাঁকো। একটি ব্রিজের অভাবে যুগের পর যুগ সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।


 
তাদের দাবি, আমবাগান ঘাটে একটি ব্রিজ নির্মিত হলে তাদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘবের পাশাপাশি জীবন-অর্থনীতিতে আসবে গতি।
 
উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের জাফর গ্রামে আখিরা নদীর আমবাগান ঘাটে সাঁকোটির অবস্থান। স্কুল-কলেজ, হাট-বাজার ও চিকিৎসাসহ দৈনন্দিন নানা প্রয়োজনে এ সাঁকোর ওপর দিয়েই সীমান্তবর্তী দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলায় যাতায়াত করতে হয় ওইসব গ্রামের শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণকে।
 
আমবাগান ঘাট ঘুরে দেখা যায়, স্থানীয় জাফর, মুংলিশপুর, পালপাড়া, শীলপাড়া, গনকপাড়া, হাসানখোর, রামচন্দ্রপুর, জাইতরসহ অন্তত ১০ গ্রামের মানুষ নিয়মিত চলাচল করছেন বাঁশের সাঁকোটি দিয়ে। এর মধ্যে রয়েছে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা। তারা ঘোড়াঘাট শাহ ইসমাইল গাজী উচ্চ বিদ্যালয়, ঘোড়াঘাট মহিলা ডিগ্রি কলেজ, ঘোড়াঘাট কেসি পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঘোড়ঘাট রাজিয়া সুলতানা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও নূরজাহানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে।
 
ভুক্তভোগী জাফর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মজিদ প্রামাণিক বলেন, আমবাগান ঘাট থেকে পাশের ঘোড়াঘাট উপজেলা মাত্র এক কিলোমিটার দূরে। অপরদিকের আমাদের নিজ উপজেলা পলাশবাড়ীর দূরত্ব অন্তত ১৩ কিলোমিটার। সে কারণে লেখাপড়া-হাটবাজারসহ নানা প্রয়োজনে পলাশবাড়ীর পরিবর্তে ঘোড়াঘাটেই যাই আমরা।  

তিনি আরও বলেন, বর্ষা এলে মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়। নদীতে পানি বাড়ায় অনেকটা পথ নৌকায় পাড়ি দিতে হয়। এতে অথৈ নদীতে নৌকা ডুবির আশঙ্কার পাশাপাশি অতিরিক্ত সময় ব্যয় হয়। ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট সময়ে ক্লাসে পৌঁছাতে বিঘ্ন ঘটে।
 
জাফর গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদ ও আব্দুস ছাত্তার মিয়া জানান, আমাদের অনেকেরই বাড়ি নদীর এপাড়ে। কিন্তু জমি নদীর ওপাড়ে। ব্রিজ না থাকায় জমি থেকে ফসল ঘরে তুলতে বেশ বেগ পেতে হয়। আমাদের উৎপাদিত পণ্য চাইলেই হাটে-বাজারে নিতে পারি না। সাঁকোর ওপর দিয়েই বাইসাইকেল, মোটরসাইকেলসহ রিকশাভ্যানে কৃষিপণ্য পরিবহন করতে হয়। এতে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হতে হয়।
 
কিশোরগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান অবু বক্কর সিদ্দিক জানান, স্বাধীনতার ৫০ বছরেও আমবাগান ঘাটে একটি ব্রিজ হয়নি। এটি নির্মিত হলে এলাকার ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়াসহ ব্যবসা-বাণিজ্য ও কৃষি ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আসবে।
 
এ ব্যাপারে পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান নয়ন জানান, জনদুর্ভোগ লাঘবে আমবাগান ঘাটে ব্রিজ নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২২
এসআই


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।