ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ মে ২০২৪, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ায় শিশুকে হত্যা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট     | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২
প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ায় শিশুকে হত্যা

হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় তাকমিনা আক্তার লিজা নামে নয় বছরের শিশু হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন হত্যা মামলার দুই আসামি।

শিশুটির কারণে তাকবীর হাসান (২০) নামে এক তরুণের সঙ্গে তার বান্ধবীর প্রেমের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়। সেই ক্ষোভ থেকে তাকবীর শিশুটিকে গলাটিপে হত্যা করেন ও পরিবারের সদস্যদের সহায়তার বাঁশঝাড়ে তার মরদেহ ফেলে রাখেন বলে জবানবন্দির বরাত দিয়ে জানিয়েছে পিবিআই।

বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) হবিগঞ্জ পিবিআইয়ের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শাহনেওয়াজ বাংলানিউজকে এ তথ্য জানান। এর আগে, গত মঙ্গলবার ও বুধবার দুইদিনে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ঝুমুর সরকার ১৬৪ ধারায় দুইজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

আদালতে জবানবন্দি দেওয়া আসামিরা হলেন- মাধবপুর উপজেলার গন্ধবপুর গ্রামের সাইদুর রহমানের মেয়ে খাদিজা আক্তার তাজরীন (২৭) ও একই গ্রামের সফু মিয়ার ছেলে বাহার উদ্দিন (২১)। নিহত লিজা বহরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. সাগর আলীর মেয়ে।

জবানবন্দির বরাত দিয়ে এসআই শাহনেওয়াজ জানান, তাকবীর হাসান জবানবন্দি প্রদানকারী তাজরীনের ছোট ভাই। পাশের বাড়ির একটি মেয়ের সঙ্গে তাকবীরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। একদিন সন্ধ্যায় তাকবীর সেই মেয়েটির সঙ্গে দেখা করতে গেলে লিজা দেখে ফেলে ও মেয়েটির মাকে গিয়ে জানায়। পরে মেয়েটির মা তাকে গালাগাল দেন ও মোবাইল কেড়ে নেন। এতে তাকবীরের সঙ্গে মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়।

তখন থেকেই তকবীর শিশু লিজার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেন। গত বছরের ২১ জুলাই সকাল ঈদের দিন সকাল ৭টার দিকে লিজা গন্ধব্যপুর গ্রামের দোকান থেকে নুডুলস ও জর্দ্দার কৌটা কিনে বাড়ি ফিরছিল। পথে তাকে ওয়েফার ও চকলেটের লোভ দেখিয়ে একটি মাটির ঘরে নিয়ে গলাটিপে হত্যা করেন তাকবীর। পরে মরদেহটি বস্তাবন্দি করে গোয়ালঘরে লুকিয়ে রাখেন। চারদিন পর মরদেহ থেকে দুর্গন্ধ বের হলে পরিবারের লোকজন ও বাহার উদ্দিনের সহায়তায় সেটি বাঁশ বাগানে ফেলে রাখেন।

এরপর ২৫ জুলাই পর্যন্ত শিশুটির সন্ধান না পেয়ে সেদিন মাধবপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তার মা সেলিনা আক্তার। ওইদিনই দুইজন মহিলা গ্রামের বাঁশ ঝাড়ের ভিতরে লাকড়ি কুড়াতে গিয়ে লিজার অর্ধগলিত মরদেহ দেখতে পান। এরপর লিজার বাবা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পরে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। ঘটনার প্রায় ছয় মাস গত মঙ্গলবার ও বুধবার দুইদিনে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বাহার উদ্দিন, খাদিজা আক্তার তাজরীন এব তার মা আমেনা খাতুন আঞ্জুকে আটক করা হয়। এদের মধ্যে দুইজন আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। প্রধান আসামি তাকবীর হাসানকে আটকের চেষ্টা চলছে বলেও পিবিআই জানিয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।