ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ইলিশ আহরণ বন্ধ থাকাকালে বিকল্প কর্মসংস্থান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২২
ইলিশ আহরণ বন্ধ থাকাকালে বিকল্প কর্মসংস্থান

ঢাকা: ইলিশ আহরণ বন্ধ থাকাকালে ভিজিএফের পাশাপাশি মৎস্যজীবী-জেলেদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ইলিশ গবেষণা জোরদারকরণ প্রকল্পের আওতায় বলেশ্বর নদীতে ইলিশের প্রজনন ক্ষেত্র সংরক্ষণ বিষয়ক অংশীজন কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী রেজাউল করিম বলেন, মৎস্য আহরণের সময় এবং মৎস্য আহরণ বন্ধের সময় নির্ধারণের যৌক্তিক, গবেষণালব্ধ ও বাস্তবতাসম্পন্ন কারণ রয়েছে। মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকাকালে মৎস্যজীবীদের ভিজিএফ’র চাল দেওয়াসহ বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে সরকার। মৎস্যজীবীদের বিকল্প কাজের জন্য রিকশা, ভ্যান, গরু, হাঁস-মুরগির বাচ্চা দেওয়া হচ্ছে যাতে মাছ ধরা বন্ধ থাকার সময় তারা কর্মহীন না হয়।

তিনি বলেন, শূন্য থেকে দেশে মৎস্য উৎপাদন বর্তমান পর্যায়ে পৌঁছেছে। একসময় শঙ্কা তৈরি হয়েছিল, নতুন প্রজন্মকে বলতে হবে ইলিশ জাতীয় একপ্রকার মাছ ছিল, তার গায়ের রং এমন ছিল, স্বাদ এমন ছিল। একটা সময় একেবারেই ইলিশ হারিয়ে যাচ্ছিলো। সে জায়গা থেকে ইলিশের উৎপাদন এমন জায়গায় আনা হয়েছে যে বিজ্ঞানসম্মতভাবে সাত লাখ মেট্রিক টন আহরণের পর আরও দেড় লাখ মেট্রিক টন ইলিশ আহরণ করা যাবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের একটি প্রবণতা রয়েছে যতক্ষণ নদীতে মাছ আছে ততক্ষণ আমরা সব মাছ তুলে ফেলবো। এ ধারণাটা মৎস্যখাতে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটা পরিমাণ মাছ নদী বা জলাশয়ে থাকতে হবে। নদী থেকে কতটা মাছ তোলা যাবে তার বিজ্ঞানসম্মত অভিজ্ঞতা ও রিপোর্ট রয়েছে। সার্বক্ষণিক আমরা যদি মৎস্য আহরণ করতে দেই তাহলে একসময় পানি থাকবে কিন্তু কোনো মাছ থাকবে না।

রেজাউল করিম বলেন, নদী দূষণ, অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন, নদীর গভীরতা কমে যাওয়া, অভয়াশ্রমে অবৈধ মৎস্য আহরণ, অপরিকল্পিত মৎস্য আহরণ, নদীতে ডিম ছাড়ার পরিবেশ বিঘ্নিত করাসহ নানা কারণে ইলিশের উৎপাদন কমে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। তখন ইলিশ উৎপাদনে শীর্ষ দেশের পরিচয় আমাদের আর থাকবে না। এজন্য ইলিশের প্রজনন ক্ষেত্র ও অভয়াশ্রম সংরক্ষণ অত্যন্ত জরুরি।

তিনি বলেন, সমুদ্রে আমাদের বিশাল সম্ভাবনাময় মৎস্যসম্পদসহ অন্যান্য সম্পদ রক্ষার জন্য সামুদ্রিক মৎস্য আইন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে দুর্বৃত্ত, জলদস্যু ও দেশের বাইরের লোক এসে যাতে অবৈধভাবে আমাদের মৎস্যসম্পদ আহরণ করতে না পারে এজন্য এ আইন করা হয়েছে। এ আইন মৎস্যজীবী-জেলেদের সাজা দেওয়ার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে এমনটি নয়।

দেশের মৎস্যসম্পদ রক্ষায় সচেতনতা বাড়ানো ও কমিউনিটি সম্পৃক্তকরণের কার্যক্রম চলমান থাকবে বলেও জানান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী ও বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. আমিন উল আহসান। কর্মশালায় অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক।  

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএফআরআই’র ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আশরাফুল আলম। আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নিয়ামুল নাসের ও মৎস্য অধিদপ্তরের উপপ্রধান মাসুদ আরা মমি।

এছাড়া কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকরা, মৎস্য বিজ্ঞানী, সরকারি-বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা, মৎস্যজীবী ও ইলিশ জেলে প্রতিনিধিরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০২২
জিসিজি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।