ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বাংলাদেশে কিছু করার সামর্থ্য নেই উগ্রবাদীদের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৯
বাংলাদেশে কিছু করার সামর্থ্য নেই উগ্রবাদীদের অনুষ্ঠানে সিটিটিসি প্রধান মনিরুল ইসলামসহ অতিথিরা, ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: ‘শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলার ঘটনা বিশ্বজুড়ে ঝিমিয়ে পড়া উগ্রবাদীদের সজাগ করার আশঙ্কা থাকলেও বাংলাদেশে এরা কিচ্ছু করতে পারবে না। তারা মনে করতে পারে, কিছু করবো। কিন্তু বাংলাদেশে সুসংগঠিতভাবে কোনো ধরনের ঘটনা ঘটানোর সক্ষমতা তাদের নেই।’

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন ঢাকা মহানগর মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।

‘মিট উইথ মনিরুল ইসলাম’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব)।

অনুষ্ঠানে মনিরুল ইসলাম বলেন, হলি আর্টিজান হামলার পর বিভিন্ন দেশ ভেবেছে আমরা ঠেকাতে পারবো না। কিন্তু সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি এবং সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতায় জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণ করা গেছে, কিন্তু নির্মূল করা সম্ভব হয়নি।

সন্ত্রাসবাদ বা জঙ্গিবাদ যেহেতু একটা মতবাদ, তাই কেউ না কেউ এই মতাদর্শের থেকেই যায়। যারা এই মতবাদের, তাদের অনেককেই ইতোমধ্যে আইনের আওতায় আনা হয়েছে বা অনেকে নজরদারিতে রয়েছে।

তিনি বলেন, এক দেশের ঘটনায় অন্য দেশের সন্ত্রাসী সজাগ হতে পারে। কিন্তু আমারও সতর্ক। হলি আর্টিজান হামলার পর ইন্দোনেশিয়ার একটি গোষ্ঠী উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেদের মধ্যে প্রচারণা চালিয়েছিল। সর্বশেষ নিউজিল্যান্ডে হামলার পর কিছু গোষ্ঠী তাদের নিজেদের চ্যানেলগুলোতে খ্রিস্টান বা ইহুদিবিরোধী প্রচারণায় তৎপর হতে দেখা গেছে।

‘শ্রীলঙ্কায় হামলার ঘটনাও বিশ্বে বিভিন্ন দেশে উগ্রবাদীদের সজাগ করতে পারে। দেশে কারও কারও মনে আসতে পারে, আমরা কিছু করবো। কিন্তু কারও পক্ষে এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর সাংগঠনিক সক্ষমতা নেই। যারা আছে, তারা বিচ্ছিন্নভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। ’

এছাড়া ভবিষ্যতেও যেনো কোনো গোষ্ঠী প্রস্তুতি নিয়ে কোনো ধরনের নাশকতা চালাতে না পারে এমন তৎপরতার কথাও জানান তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে সিটিটিসি প্রধান বলেন, শ্রীলঙ্কায় দীর্ঘদিন ধরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের গৃহযুদ্ধ ছিল। এলটিটি নামে একটি সুইসাইডাল বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপ তৎপর ছিল সেখানে। গতবছর সর্বশেষ শ্রীলঙ্কায় যে দাঙ্গাটি হয়েছিল, সেটি বৌদ্ধ এবং মুসলমানদের মধ্যে। এছাড়া এলটিটি কখনও কোনো ধর্মীয় গোষ্ঠীকে টার্গেট করে হামলা চালায়নি। তাদের টার্গেট গভর্নমেন্ট মেকানিজমে যারা রয়েছে, তারা। কিন্তু শ্রীলঙ্কার গির্জা এবং হোটেলে যে হামলাটি হয়েছে, এটি নিঃসন্দেহে সন্ত্রাসবাদ।

‘নিউজিল্যান্ড হামলার পর বিশ্বের বিভিন্ন জায়গার উগ্রবাদী সংগঠনগুলো খ্রিস্টানদের ওপর ক্ষিপ্ত হতে দেখা গেছে। শ্রীলঙ্কায় খ্রিস্টানদের ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা হয়েছে, আর এটার ইমপ্যাক্ট বাড়ানোর জন্য হোটেলগুলোতে হামলা করা হয়েছে। ’

মনিরুল ইসলাম বলেন, হামলায় সাধারণত কোনো গোষ্ঠীর নেতা পর্যায়ের লোক অংশ নেন না। কিন্তু এখানে তাওহিদ জামাতের নেতৃত্ব পর্যায়ের একজন সরাসরি হামলায় অংশ নিয়েছে বলে প্রমান পাওয়া গেছে এবং তিনি নিহত হয়েছেন।

‘গত ১১ এপ্রিল সরাসরি তাওহিদ জামাতের নাম উল্লেখ করে গির্জা এবং ভারতীয় মিশনে হামলা চালাতে পারে বলে একটি গোয়েন্দা রিপোর্ট দেওয়া হয়েছিল। যারা হামলা চালিয়েছে, তারা সবাই সে দেশের নাগরিক বলে জানা গেছে। তবে হামলার যে ধরন এবং টার্গেট পর্যালোচনা করে বোঝা যায়, সেখানে বাইরের কোনো গোষ্ঠীর ইন্ধন রয়েছে।

মালদ্বীপ থেকে একটা বড় সংখ্যার লোক আইএসে যোগ দিয়েছে। মালদ্বীপের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার নৌপথে যোগাযোগ রয়েছে। এছাড়া তাওহিদ জামাতের একটা অংশও আইএসের বায়াত নিয়েছিল। তবে হামলাকারীদের মধ্যে তাদের কেউ ছিল কি-না এখন বলা মুশকিল বলেও মন্তব্য করেন সিটিটিসি প্রধান।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৯
পিএম/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।