নানা সীমাবদ্ধতা ও জনবল সংকট সত্ত্বেও এবার ৬৫টি কোচ মেরামত করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ২৫টি কোচ রেলওয়ের ট্রাফিক বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে।
কারখানা সূত্রে জানা যায়, মধ্য জুলাই থেকে পুরাতন ৬৫টি কোচের মেরামত শুরু হয় কারখানায়। যথাসময়ে কোচগুলো সরবরাহের উদ্দেশ্যে কারখানায় প্রতিদিন ৯ ঘণ্টা বিরতিহীনভাবে কাজ চলছে।
বিদ্যমান পুরনো মেশিনপত্র দিয়ে অচল কোচকে সুসজ্জিত করে সচল করা হচ্ছে। এ জন্য কারখানার ৪টি শপে (উপ-কারখানা) চলছে মেরামতের কর্মযজ্ঞ। এ কাজ চলছে ক্যারেজ, বগি, জেনারেল ওভার হোলিং ও ক্যারেজ হেভি রিপেয়ার শপে। নির্ধারিত সময়ে মেরামত কাজ সম্পন্ন করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারখানার ২৯টি শপের শ্রমিক-কারিগর ও প্রকৌশলীরা।
সূত্রমতে, রেলওয়ের ট্রাফিক বিভাগের পার্বতীপুর, লালমনিরহাট, ঈশ্বরদী, রাজশাহী ও খুলনা রেলওয়ে ডিপোয় রাখা মেরামতযোগ্য পুরাতন কোচ সংগ্রহ করে সচল করা হচ্ছে কারখানায়। কোচ মেরামত করতে রেলওয়ে সরঞ্জাম বিভাগের মজুদ মালামাল ও রেল কারখানায় তৈরি করা নিজস্ব সরঞ্জাম ব্যবহার করা হচ্ছে। এ কাজ সম্পন্ন করতে দৈনিক কর্মঘণ্টার সঙ্গে অতিরিক্ত এক ঘণ্টা শ্রম বেশি দিচ্ছেন শ্রমিক কারিগররা। অতিরিক্ত এ কাজের জন্য শ্রমিক-কারিগরদের দেয়া হচ্ছে ওভারটাইম। মোট ৬৫ কোচের মধ্যে ৪০টি ব্রডগেজ ও ২৫টি মিটারগেজ রেলপথের কোচ। ইতোমধ্যে মেরামত সম্পন্ন ২০টি কোচ সরবরাহ করা হয়েছে। বাকি কোচ পর্যায়ক্রমে ট্রাফিক বিভাগে সরবরাহ করা হবে।
সূত্র মতে, ঈদ উপলক্ষে কর্মজীবী মানুষের বাড়ি ফিরতে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। সড়কপথে দুর্ঘটনা, যানজট ও বাড়তি ভাড়ার কারণে ট্রেনমুখী হয়ে উঠেছেন ঘরমুখো মানুষ। যাত্রীদের মাঝে ট্রেনযাত্রার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় ট্রেনে আসন সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। তাই রেলওয়ের যাত্রী চাপ সামলাতে অতিরিক্ত রেলকোচ মেরামত করা হচ্ছে। যাতে ঘরমুখী যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দে গন্তব্যে যেতে পারেন। এজন্য পশ্চিম রেলওয়ের প্রতিটি আন্তঃনগর ট্রেনে বৃদ্ধি করা হবে কোচের সংখ্যা। এছাড়াও ঈদের আগে ও পরে পরিচালনা করা হবে দুটি স্পেশাল ট্রেন। ফলে ঈদ যাত্রায় পশ্চিম রেলওয়ের ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত ৪০ হাজার যাত্রী রেলপথে যাতায়াতের সুবিধা পাবেন।
এ ব্যাপারে রেলওয়ে শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন বাংলানিউজকে বলেন, গণপরিবহন হিসেবে রেলওয়ের গৌরব ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ সংখ্যক কোচ মেরামতের কাজ করছেন কারখানার শ্রমিক কর্মচারীরা। তবে কাঁচামালের সীমাবদ্ধতা ও জনবল সংকট থাকলেও কাজ চলছে জোরেসোরে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ওয়ার্কস ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম বলেন, ঈদের সময়ে রেলওয়ের যাত্রী ধারণ ক্ষমতা বাড়াতে অতিরিক্ত কোচ মেরামত করা হচ্ছে। আসন্ন ঈদে পশ্চিম রেলওয়ের আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ও স্পেশাল ট্রেন বহরে ৬৫টি অতিরিক্ত কোচ যুক্ত করা হবে। এতে রেলওয়েতে ৪০ হাজারেরও বেশি যাত্রী গন্তব্যে যেতে পারবেন।
সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ট্রেন যাত্রার চাহিদা তৈরি হওয়ায় পশ্চিম রেলওয়ের পক্ষ থেকে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় প্রতি বছর দুই ঈদে অতিরিক্ত রেল কোচ মেরামত করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৭
জেডএম/