শুক্রবার (৩১ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে মেয়ের মরদেহ দেখতে যান তারা বাবা-মা।
সেখানে মেয়ে রাওদার মরদেহে দেখার পর রাওদার বাবা ডা. মোহাম্মদ আথিফ পুলিশকে ময়নাতদন্তের সিদ্ধান্তের কথা জানান।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (পূর্ব) আমীর জাফর সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন দুপুরের মধ্যেই রাওদার মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হবে।
এরই মধ্যে রাওদার মরদেহ এরই মধ্যে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘর থেকে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর তার মরদেহ নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশের উপ-কমিশনার বলেন, এখন পর্যন্ত তার পরিবার এই ঘটনায় কোনো মামলা দায়েরের কথা বলেননি। তাই আপাতত অপমৃত্যুর মামলাই রুজু থাকছে শাহ মখদুম থানায়।
এদিকে, রাওদার মরদেহ দেখার পর তার বাবা ও পরিবারের সদস্যরা রাজশাহীর নওদাপাড়ায় ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান।
রাওদার বাবা ডা. মোহাম্মদ আতিফ, মা আমিনাথ মুহারমিমাথের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূত আইশাদ শান সাকির ও কমনওয়েলথের সেকেন্ড সেক্রেটারি ইসমাইল মুফিদও রয়েছেন।
এর আগে রাওদার মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ রিয়াদ জানান, কলেজের উপাধক্ষ ডা. আব্দুল মুকিত সরকারকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। তিন কার্য দিবসের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়া রাওদার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) খোঁজ-খবর নেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূত আইশাদ শান সাকির। বিকেল চারটার দিকে তিনি রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। এ সময় তিনি রাওদার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তার সহপাঠী, শিক্ষক ও কলেজ অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলেন।
এদিকে, ময়নাতদন্তের জন্য দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক ডা. মনসুর রহমানকে প্রধান করে টিম গঠন করা হয়েছে। টিমের অন্য সদস্যরা হলেন, ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক ডা. এমাদাদুর রহমান ও ডা. এনামুল হক।
গত বুধবার (২৯ মার্চ) রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ ছাত্রী হোস্টেলের ২০৯ নম্বর কক্ষে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় রাওদার ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়।
এই মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ১৩তম ব্যাচের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন রাওদা। বিদেশি কোটায় ভর্তির পর গত বছরের ১৪ জানুয়ারি মহিলা হোস্টেলের দ্বিতীয় তলার ওই কক্ষে ওঠেছিলেন রাওদা। ওই ব্লকে আরও ১৪জন বিদেশি ছাত্রী থাকেন।
এক সময় প্রখ্যাত ভোগ ম্যাগাজিনের মডেল হয়েছিলেন শখের বসে। শিক্ষার টানে মালদ্বীপ থেকে বাংলাদেশে এসে ভর্তি হয়েছিলেন এই মেডিকেল কলেজে। এরপর লাশ হলেন সদ্য টিন অতিক্রান্ত এই মালদ্বীপীয় মেয়েটি।
এখানে লেখাপড়ার পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগে সার্টিফিকেট কোর্সও করছিলেন রাওদা।
মডেল রাওদার মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি
রাওদার বিষয়ে খোঁজ নিতে রাজশাহীতে মালদ্বীপ রাষ্ট্রদূত
হিমঘরে রাওদার মরদেহ, ময়নাতদন্ত হয়নি
ভোগ মডেল, মেডিকেল ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ রাজশাহীতে
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৭ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০১৭
এসএস/এমএমকে
