এখন সদ্য টিন অতিক্রান্ত রাওদা আতিফের (২০) মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের হিমঘরে।
বুধবার রাওদার ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায় তার রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হোস্টেল রুমে।
এই ব্যাপারে ঢাকায় নিযুক্ত মালদ্বীপ হাই কমিশনার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। হাই কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিবারের সদস্যরা এরই মধ্যে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবারের মধ্যে পৌঁছানোর কথা রয়েছে তাদের।
রাজশাহীর শাহ মখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, মালদ্বীপ হাই কমিশন ও পরিবারের কারণে তারা এখন পর্যন্ত নিহত মেডিকেল ছাত্রীর মরদেহের ময়নাতদন্ত করতে পারেন নি। তবে পরিবার এসে চাইলেই মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে।
এর পরই আইনি প্রক্রিয়া শেষে রাওদা আতিফের মরদেহ মালদ্বীপ নিয়ে যেতে পরিবারের কাছে তুলে দেওয়া হবে।
তবে এই ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর (ইউডি) একটি মামলা করা হয়েছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
ওসি বলেন, আন্তজার্তিক মডেল কন্যা ও মেডিকেল ছাত্রী রাওদা আতিফের মৃত্যুর ঘটনাটি তারা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। তাই এর নেপথ্যের কারণ উদঘাটনে সবদিক বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত বিষয়টি আত্মহত্যা বলেই মনে করছে পুলিশ বিভাগ। তবে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে পুলিশের তদন্তে এগিয়ে যাচ্ছে।
এর আগে রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের ওই বিদেশি ছাত্রী মহিলা হোস্টেলের নিজ কক্ষে আত্মহত্যা করেছেন বলে নিশ্চিত হওয়ার কথা জানায় পুলিশ। সুরতহালের সময় তার মরদেহ থেকে তেমন আলামত মিলেছে বলে জানানো হয়। তবে শেষ কথা বলার জন্য ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
আত্মহত্যার কারণ অনুসন্ধান করেও এ পর্যন্ত কোনও সুরাহা করতে পারেনি পুলিশ।
রাওদা আতিফ নামের এই মেডিকেল ছাত্রী মালদ্বীপের নাগরিক। তার বাবার নাম আবদুল আতিফ ও মায়ের নাম আমিনা মহাসিমাত।
তিনি রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ এমবিবিএস ১৩তম ব্যাচের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। বিদেশি কোটায় ভর্তির পর গত বছরের ১৪ জানুয়ারি কলেজের মহিলা হোস্টেলের দ্বিতীয় তলার ২০৯ নম্বর ওই কক্ষে ওঠেন রাওদা। এর পর থেকে সেখানেই থাকতেন। হোস্টেলের ওই ব্লকে আরও ছয়জন বিদেশি ছাত্রী থাকেন।
কলেজ হোস্টেলের ইনচার্জ লাইলা আক্তার পুলিশকে জানিয়েছেন, ক্লাশে দেখতে না পেয়ে বুধবার (২৯ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে রাওদার সহপাঠীরা তাকে ডাকতে ওই কক্ষে যান। এ সময় অনেক ডাকাডাকি করলেও রাওদার সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে দরজা ভেঙ্গে তার মরদেহ ঝুলতে দেখেন সহপাঠীরা।
সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় পাওয়া যায় রাওদাকে।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন ইউনিটকে নিয়ে মরদেহের সুরতহাল করেছে পুলিশ। কিন্তু গলায় ফাঁসের চিহ্ন ছাড়া নিহতের মরদেহে তারা আর কোনো নির্যাতনের আলামত মেলেনি।
এদিকে সুনির্দিষ্ট কারণ জানা না গেলেও, ধারণা করা হচ্ছে প্রেমঘটিত বিষয়ের সূত্র ধরে এই আত্মহননের ঘটনা ঘটতে পারে।
রাওদা আতিফ এক সময় ভোগ ম্যাগাজিনের মডেল হয়েছিলেন। তার মডেলিংয়ের কিছু ছবি ফেসবুক প্রোফাইলে দেখা যায়। তবে বৃহস্পতিবার ব্রাউজ করে দেখা যায় ওই ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৪ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৭
এসএস/এমএমকে