ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৫ আশ্বিন ১৪৩২, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭ রবিউস সানি ১৪৪৭

জাতীয়

আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে জিটিওকে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:৩৩, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৫
আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে জিটিওকে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা সাংবাদিক মেহদি হাসানকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়নি, তাদের নিবন্ধনও স্থগিত করা হয়নি। শুধুমাত্র দলের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) অধিবেশনের ফাঁকে জিটিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাংবাদিক মেহদি হাসানের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, কার্যক্রম স্থগিত থাকায় আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারবে না। তারা দল হিসেবে বৈধ রয়েছে, তবে কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার। কোন দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে নির্বাচন কমিশনই, কারণ তারাই নির্বাচন পরিচালনা করছে।

‘আওয়ামী লীগের সমর্থক রয়েছে, তবে তাদের লাখ লাখ সমর্থক আছে—এটা আমি মানি না’ মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, তাদের সমর্থকেরা সাধারণ ভোটারের মতোই ভোট দিতে পারবেন, তবে সেখানে আওয়ামী লীগের প্রতীক থাকবে না।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নিজেদের রাজনৈতিক দল দাবি করলেও বাস্তবে তারা রাজনৈতিক দলের মতো আচরণ করতে পারেনি। তারা মানুষ হত্যা করেছে, নিজেদের কর্মকাণ্ডের দায় স্বীকার করেনি এবং সব সময় দায় অন্যের ওপর চাপিয়েছে।

দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ড. ইউনূস তার সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা যে কোনো সময় তুলে নেওয়া হতে পারে’।

এ বিষয়ে প্রেস ইনস্টিটউট বাংলাদেশ- পিআইবির ফ্যাক্ট চেক ও মিডিয়া রিসার্চ ইউনিট- বাংলাফ্যাক্ট বলছে, জিটিওর ব্রিটিশ-মার্কিন সাংবাদিক মেহেদী হাসানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা যেকোনো সময় তুলে নেওয়া হতে পারে’ বলেননি। বেশ কিছু গণমাধ্যমে এ বিষয়ে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তা সঠিক নয়। আলোচিত সাক্ষাৎকারে ড. মুহাম্মদ ইউনূস আদতে বলেছেন, আওয়ামী লীগ ‘কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাতে পারবে না’। এমনকি আগামী নির্বাচনেও অংশ নিতে পারবে না। তার ভাষায়, ‘দলটির বৈশিষ্ট্য দেখে এবং তারা যে পুরো নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করবে সেই সম্ভাবনা বুঝে নির্বাচন কমিশন ভেবেছে যে, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি না দেওয়াই ভালো’।

স্পষ্টতার খাতিরে তিনি আরো বলেন, ‘অন্যথায়, আমরা নির্বাচন করতে পারবো না। ’

তবে একইসাথে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়টিকে তিনি ‘আপাতত’ বা ‘ফর দা টাইম বিয়িং’ বলতে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচার কাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত’ কথাটা বুঝিয়েছেন। এ বছরের ১০ মে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। কার্যক্রম নিষিদ্ধের সেই সিদ্ধান্তে বলা হয়েছিল, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচার কার্যসম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দলটির যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ’ থাকবে।  

সুতরাং মেহেদী হাসানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত’ সময়টাকেই ‘ফর দা টাইম বিয়িং’ হিসেবে বলেছেন। এবং ‘কোনো এক সময় এটা (কার্যক্রম) চালু হতে পারে’ বলে তিনি এই বিচারকাজ সম্পন্ন হওয়ার পরের সময়কেই বুঝিয়েছেন; বর্তমান সময় বা নির্বাচনকালীন সময় নয়।  

বাংলাফ্যাক্টের পক্ষ থেকে আলোচিত সাক্ষাৎকারের প্রাসঙ্গিক অংশের ইংরেজি ট্রান্সক্রিপ্ট এবং এর হুবহু অনুবাদও প্রকাশ করা হয়েছে।  

এনডি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ