ঢাকা, রবিবার, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২৫ মে ২০২৫, ২৭ জিলকদ ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে স্বতন্ত্র আই ইনস্টিটিউট

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪:১৭, মে ২৫, ২০২৫
চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে স্বতন্ত্র আই ইনস্টিটিউট ...

চট্টগ্রাম: মানবকল্যাণে চট্টগ্রামে যেসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও পরিচালনা করা হচ্ছে, এর মধ্যে রয়েছে স্বতন্ত্র আই ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা। এই ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম দ্রুততার সাথে এগিয়ে যাচ্ছে।

এটি পুরোদমে চালু হলে চট্টগ্রামবাসী উপকৃত হবে।  

রোববার (২৫ মে) দুপুরে নগরের সিএলএফ কমপ্লেক্সের হালিমা-রোকেয়া মেমোরিয়াল হলে লায়ন্স জেলা ৩১৫-বি৪ এর ২৮তম বার্ষিক জেলা সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন কর্মসূচি ও প্রকল্প উপস্থাপন করেন জেলা গভর্ণর (২০২৪-২৫) লায়ন কোহিনুর কামাল এমজেএফ।

এসময় তিনি বলেন, চট্টগ্রাম লায়ন্স ফাউন্ডেশন ভবন ঘিরে ১৫ বছর মেয়াদী মাস্টারপ্ল্যান তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। এ কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা করা গেলে এটিই হবে দেশের সর্ববৃহৎ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান। সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য সকল আঙ্গিকে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে এ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এখানে তৈরি হবে আই স্পেশালিস্ট, নিয়োগ পাবে অনেক লোকবল, সেবা পাবে প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ পুরো চট্টগ্রামের সুবিধাবঞ্চিত মানুষ। বিশেষায়িত চিকিৎসা সেবায় এগিয়ে যাবে চট্টগ্রাম। এ বছর এই ইনস্টিটিউটে ১০ জন ছাত্র ভর্তি করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।

রিজিয়ন চেয়ারপারসন হেডকোয়ার্টার চেয়ারম্যান (প্রেস কিমিট) লায়ন মোহাম্মদ শাহেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বর্তমান বাংলাদেশে মাল্টিপল জেলা ৩১৫ এর ৬টি লায়ন্স জেলার ৯১৯টি লায়ন্স ক্লাবের মাধ্যমে ২৪ হাজার ৪১৮ জন লায়ন সদস্য সেবা কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত রয়েছেন। বাংলাদেশে লায়ন্স জেলা ৩১৫-বি৪, চট্টগ্রাম একমাত্র জেলা, যা ঢাকার বাইরে কর্মকাণ্ডের ব্যাপ্তি ঘটিয়ে ইতিমধ্যেই ৯৬টি ক্লাবের মাধ্যমে ৩ হাজার ৩৬৮ জন লায়ন সদস্য দুস্থ মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে ভূমিকা পালন করে চলেছে। এ জেলা ছাড়াও কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটি স্বতন্ত্র লিও জেলা কাজ করে যাচ্ছে। এই বছর লায়ন্স জেলা ৩১৫-বি৪, চট্টগ্রাম ‘যত্নের ছায়া ছড়ায় মায়া’ স্লোগানে মানবকল্যাণে সেবা কর্ম পরিচালনা ও বাস্তবায়ন করছে।  

লায়ন্স জেলার প্রাক্তন জেলা গভর্নর লায়ন মনজুর আলম মনজু সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বেঁচে থাকার অধিকার, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, সার্বিক মানসিক বিকাশের লক্ষ্যে শিক্ষা নিশ্চিত করা এবং নৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক মূল্যবোধের বিকাশ সাধন করার লক্ষে ১০ বছর মেয়াদে ওয়ান ক্লাব ওয়ান চাইল্ড ভিত্তিতে একটি প্রকল্প চালু করেছেন। এ প্রকল্পের অধীন জেলা-৩১৫ বি-৪ এর আওতাধীন ৩১টি ক্লাবের পৃষ্ঠপোষকতায় ৬৯ জন সুবিধাবঞ্চিত শিশুর মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত লেখাপড়ার দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে।  

লায়ন্স চক্ষু হাসপাতালে লায়ন্স জেলার বিভিন্ন ক্লাবের উদ্যোগে চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলাতেই একাধিক আই ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে। এসব আই ক্যাম্প থেকে ৮ হাজার ৬৩৯ জনেরও বেশি গরীব রোগীর বিনামূল্যে ছানি অপারেশন করা হয়েছে। এছাড়া ডিটিই ক্যাম্পের মাধ্যমে চক্ষু অপারেশন ও চিকিৎসার পাশাপাশি বিনামূল্যে ওষুধপত্র বিতরণ করা হয়।

অন্যান্য প্রকল্প ও কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ক্ষুধা নিবারণ কর্মসূচি, ডায়াবেটিস সচেতনতা কর্মসূচি, তরুণদের জন্য কার্যক্রম, শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ, খৎনা ক্যাম্প, নতুন ক্লাব প্রতিষ্ঠা, সাদাছড়ি দিবস উদযাপন, লায়ন্স সেবা পদক প্রদান, দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের জন্য লায়ন্স স্কলারশীপ ট্রাস্ট গঠন, লায়ন্স ডেভলপমেন্ট ট্রাস্ট, লায়ন্স ওয়েলফেয়ার ফান্ড গঠন। এছাড়া দেশে করোনাকালীন সময়ে লায়ন্স জেলা ৩১৫-বি৪ এর প্রাক্তণ জেলা গভর্ণর লায়ন কামরুন মালেক এর নেতৃত্বে চট্টগ্রাম মা শিশু হাসপাতালে পরিপূর্ণ অক্সিজেন সুবিধাসহ সুসজ্জিত ২০টি বিশেষায়িত বেড স্থাপন স্থাপন করে সেবার জগতে অনন্য ভূমিকা পালন করেছেন।
 
চলতি বছরের সেবা কার্যক্রম প্রসঙ্গে লায়ন কোহিনুর কামাল এমজেএফ বলেন, এবছর লায়ন্স জেলা ৩১৫-বি৪, বাংলাদেশ এর আওতাধীন লায়ন্স চক্ষু হাসপাতালের সেবা কর্মসূচি আরও গতিশীল এবং গরীব রোগীদের চক্ষুসেবা বৃদ্ধির লক্ষ্যে উন্নত ও অত্যাধুনিক প্রয়োজনীয় মেশিনারী ক্রয় করার জন্য আন্তর্জাতিক লায়ন্স ফাউন্ডেশন হতে ৩ কোটি ৪৮ লাখ ৩৩ হাজার টাকার অনুদান প্রদান প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। অনুদান পাওয়া গেলে রোগীরা উন্নত চক্ষুসেবা গ্রহণ করার সুযোগ পাবে।  

এছাড়া কানাডিয়ান সংগঠন জিকো ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় ও লায়ন্স চক্ষু হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে বিনামূল্যে চক্ষু অপারেশন ও লায়ন্স চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম অব্যাহত আছে। বৃহত্তর চট্টগ্রামে দরিদ্র জনগোষ্ঠির স্বাস্থ্যসেবা ও আর্থ সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলার চকরিয়া, ফটিকছড়ি, বোয়ালখালী, রাউজানসহ বিভিন্ন এলাকায় ৪১টি স্থায়ী প্রকল্পের মাধ্যমে সেবা প্রদান করা হচ্ছে নিয়মিত।  

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান লায়ন মুসলেহ উদ্দিন আহমেদ অপু এমজেএফ, ২য় ভাইস চেয়ারম্যান লায়ন কামরুজ্জামান লিটন এমজেএফ, ক্যাবিনেট সেক্রেটারি লায়ন বেলাল উদ্দিন চৌধুরী, ট্রেজারার লায়ন ইমতিয়াজুল ইসলাম এমজেএফ, ২৮তম বার্ষিক জেলা সম্মেলন চেয়ারম্যান লায়ন শফিকুল ইসলাম এমজেএফ, সেক্রেটারি লায়ন সাব্বির আহমেদ, ট্রেজারার লায়ন এম এইচ শাহ বেলাল, সংবাদ সম্মেলন ট্রেজারার লায়ন খোরশেদ আনোয়ার চৌধুরী, সদস্য লায়ন জসিম উদ্দিন, নুরুল আবছার এমজেএফ, লায়ন সেলিম রেজা চৌধুরী।

সিনিয়র লায়নদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন লায়ন আবু বক্কর সিদ্দিকী, লায়ন পারভীন মাহমুদ এফসিএ, লায়ন ওসমান গণি এমজেএফ, লায়ন এম এস আই ভুইয়া, লায়ন জাহাঙ্গীর মিয়া, লায়ন শাখাওয়াত আলী, লায়ন সারওয়ার মিক্সিম, লায়ন তাহের আহমেদ।

এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।