ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

আইয়ুব বাচ্চুর স্মরণে কনসার্ট করবে ‘এবি লাউঞ্জ’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৮
আইয়ুব বাচ্চুর স্মরণে কনসার্ট করবে ‘এবি লাউঞ্জ’ এবি লাউঞ্জে সেলফি তোলার ধুম। ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম: ১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে যান আইয়ুব বাচ্চু। লসএঞ্জেলসে দেখলেন একটি লাউঞ্জ। সবাই গিটার বাজাচ্ছেন। ভাবলেন নিজেও বাজাবেন। তখন ম্যানেজারের কাছে নিজের ইচ্ছের কথা জানালেন। ম্যানেজার একটি রেজিস্টার বের করে বললেন, তিন মাস পর খালি আছে!

এ গল্প যখন এবি’র মুখে শুনলাম, তখন বললাম আমি একটি ‘এবি লাউঞ্জ’ করবো। এবি বললেন, তুই পারবি! যেখানে নিয়মিত বাংলা ইংরেজি গান হবে, শিল্পীরা সমঝোতার ভিত্তিতে সম্মানী পাবে।

সেই এবি লাউঞ্জ গত ২৫ আগস্ট বাচ্চু ভাই নিজে এসে উদ্বোধন করলেন। সেদিন ১৯টি গান গাইলেন।
যে এবি’ একটি প্রোগ্রামে ৬ লাখ টাকা সম্মানী নেন, তিনি টিকিট পর্যন্ত নিলেন না। এত খুশি হয়েছিলেন, আমাকে জড়িয়ে ধরলেন।  

আরও খবর>>
** 
মায়ের পাশে কবর দিতে বলেছিলেন আইয়ুব বাচ্চু
** সবার কাছে ক্ষমা চাইলেন আইয়ুব বাচ্চুর ছেলে
** আইয়ুব বাচ্চুর 'শেষ ঠিকানা' তৈরি

সোমবার (২২ অক্টোবর) নগরের দুই নম্বর গেট এলাকার ‘উইন্ড অব চেঞ্জ’ রেস্টুরেন্টের সেই এবি লাউঞ্জে বসেই কথাগুলো বললেন উদ্যোক্তা সৈয়দ রুম্মান আহাম্মেদ। বিখ্যাত ব্যান্ড স্করপিয়নসের লিরিক ‘উইন্ড অব চেঞ্জ’।

‘উইন্ড অব চেঞ্জ’ রেস্টুরেন্টের সেই এবি লাউঞ্জ।  ছবি: সোহেল সরওয়ারতিনি বললেন, ‘আমি ছোটকাল থেকে এবি’র ভক্ত। চট্টগ্রামে কোনো কনসার্ট মিস করতাম না। যদিও আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম। কিন্তু সেখানে কনসার্ট হতো না। কারণ শিবিরের আধিপত্য ছিল। তাই কনসার্ট হতো না। কিন্তু চুয়েট, সরকারি সিটি কলেজ, এমইএস কলেজ, ইসলামিয়া কলেজ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে প্রচুর কনসার্ট হতো। সেখানে চলে যেতাম। মেডিকেলে অনেক কনসার্ট উপভোগ করেছি উনার। ’

এবি লাউঞ্জে প্রতি শনিবার সংগীতায়োজন হয়। প্রথম ও শেষ গানটি হয় এবি’র। অবশ্য গত শনিবার (২০ অক্টোবর) হয়নি। ওই দিন এবি’র স্মরণে আমরা বন্ধ রেখেছিলাম। এ পর্যন্ত ব্যান্ডদল নাটাই, তীরন্দাজ, ওয়ার্নিং, মুখোশ, মানবিক, এনথেন, সাসটেইন (২ বার), শিল্পী শাপলা পাল, ইমরান গান করেছেন এবি লাউঞ্জে। আগামী দুই মাসের প্রতি শনিবারের জন্য ব্যান্ডদল তালিকাভুক্ত হয়েছে। এবি লাউঞ্জে সেলফি তোলেন ভক্তরা।

সেলফি তোলার সময় কথা হয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা হৃদয় বসাকের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমরা এসেছিলাম এবি লাউঞ্জ দেখতে। জীবদ্দশায় এবি এখানে এসেছেন, এটা ভাবলেই চোখে পানি চলে আসে।   

এবি লাউঞ্জের উদ্যোক্তা সৈয়দ রুম্মান আহাম্মেদসৈয়দ রুম্মান আহাম্মেদ বলেন, গত বছর জুলাইতে এবি’র সঙ্গে চট্টগ্রামে দেখা হয়। সেপ্টেম্বরে ওয়েক আপ চিটাগাং নামে একটি অনুষ্ঠান করি। এবি’কে লাইফ টাইম এচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড দিই। যা তুলে দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সানশাইন গ্রামার স্কুলের অধ্যক্ষ সাফিয়া গাজী রহমান, পিএইচপি ফ্যামিলির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মহসিন ভাইয়ের উপস্থিতিতে ওই অ্যাওয়ার্ড দিয়েছিলাম। এবি’ কি-নোট স্পিকার ছিলেন। তার জীবন নিয়ে ২০ মিনিটের বক্তব্য দেন। সেখানে ৬০০ টাকা নিয়ে ঢাকা গিয়ে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার গল্প শুনিয়েছিলেন। ওই সময় এবি’র ছোটবেলা থেকে নানা ছবি সংগ্রহ করে একটি ডকুমেন্টারি ছেড়েছিলাম। বাচ্চু ভাই তো দেখে কান্না করে দিয়েছিলেন।  

এবি লাউঞ্জ নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাইলে সৈয়দ রুম্মান আহাম্মেদ বলেন, এখানে এবি’র একটি বড় ছবি রাখব। একটি সেলফ থাকবে, যাতে এবি’র সব সিডি, পোস্টার থাকবে। তার স্মৃতিধন্য গিটার থাকবে। এবি’র স্মৃতিকে জাগরূক রাখতে ট্রাস্ট গঠন, শিল্পী সম্মাননাসহ অনেক কিছু করার ইচ্ছে আছে।

আবেগাপ্লুত কণ্ঠে তিনি বলেন, এবি লাউঞ্জ উদ্বোধনের দিন উনাকে একটি স্মারক দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি নেননি। কারণ উনার জন্ম সাল ছিল ১৯৫৮, আমরা লিখেছিলাম ১৯৬২। উনি বললাম এটি সংশোধন করে দেবে। কিন্তু তিনি তো এখন না ফেরার দেশে। দেবো কীভাবে! আমরা এবি লাউঞ্জের উদ্যোগে এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে আইয়ুব বাচ্চুর স্মরণে একটি কনসার্ট আয়োজনের পরিকল্পনা করেছি। আশাকরি, জেমসসহ দেশের জনপ্রিয় সব শিল্পী আসবেন সেই কনসার্টে।

বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৮
এআর/টিসি          

       

   

 

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।