ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মায়ের পাশে কবর দিতে বলেছিলেন আইয়ুব বাচ্চু

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৮
মায়ের পাশে কবর দিতে বলেছিলেন আইয়ুব বাচ্চু আইয়ুব বাচ্চুর নানার বাড়ি। ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম: নগরের স্টেশন রোডের পাশে বাইশ মহল্লার চৈতন্য গলি কবরস্থান। যার উত্তরে এনায়েত বাজার। সেখানে জন্ম ও বেড়ে ওঠা কিংবদন্তির শিল্পী ‘এবি’ খ্যাত আইয়ুব বাচ্চুর। দক্ষিণে পূর্ব মাদারবাড়িতে নানাবাড়ি। চট্টগ্রামে এলে এক ঘণ্টার জন্য হলেও ছুটে যেতেন মায়ের স্মৃতিধন্য সেই বাড়িতে।

দুই বাড়ির লোকজনের একই অভিমত। রবিন (বাচ্চুর ডাকনাম) বলে গেছেন, চৈতন্য গলিতে মায়ের কবরের পাশেই যাতে কবর দেওয়া হয়।

সব কিছু ঠিক থাকলে ওই কবরস্থানেই চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন তিনি।

আইয়ুব বাচ্চুর মামাত ভাই মো. আবদুল্লাহ আল মেহেরাজকে পাওয়া গেল পূর্ব মাদারবাড়ির আকতার শাহ লেনের মামা বাড়িতে।

একের পর এক ফোন আসছে তার মোবাইল ফোনে। বাচ্চুর বড় মেয়ে থাকেন অস্ট্রেলিয়া, ছেলে কানাডায়। দুইজনেই আসছেন বাবার মুখটি শেষবার দেখতে। এদিকে ঢাকায় মরদেহ রাখা, জানাজা, চট্টগ্রামে আনা, জানাজা, দাফন অনেক প্রস্তুতিও নিতে হচ্ছে স্বজন-শুভাকাঙ্ক্ষীদের। আইয়ুব বাচ্চুর জন্ম ও বেড়ে ওঠা এ বাড়িতে।  এ গলিতে খেলতেন ক্রিকেটও।  ছবি: সোহেল সরওয়ারআবদুল্লাহ বলেন, সর্বশেষ কোরবানিতে ঘণ্টাখানেকের জন্য এসেছিলেন বড় ভাই। সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করে চলে যান। ২০০৪ সালে উনার মা মারা যাওয়ার পর থেকে চট্টগ্রামে এলে নানার বাড়িতেই ছুটে আসতেন। তখনও বলে যান, যদি কিছু হয়ে যায় তবে যেন চট্টগ্রামের মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়।

এনায়েত বাজারের জুবিলি রোডে বাচ্চুর জন্মস্থানেও শোকের ছায়া। খবর পেয়ে ছুটে আসেন ছেলেবেলার বন্ধু, আত্মীয়-স্বজন আর শুভানুধ্যায়ীরা। বাচ্চুর জেঠাত ভাই মো. সোলায়মান খোকা। তার চোখ ছলছল করছে। কণ্ঠ চেপে আসছে।

বাকরুদ্ধ কণ্ঠেই স্মৃতিচারণ করে বলেন, গানের জন্য অনেক কষ্ট করেছেন বাচ্চু ভাই। গিটার জোগাড় করা কঠিন ছিল। রাত করে বাড়ি ফিরতেন। চাচি ভাত-তরকারি টেবিলের ওপর রেখে দিতেন। দারোয়ানকে কয়েক টাকা বকশিশ দিয়ে গেট খোলাতেন। তারপর সেই ঠাণ্ডা ভাত খেয়ে ঘুমিয়ে পড়তেন। স্মৃতিচারণ করছেন আইয়ুব বাচ্চুর জেঠাত ভাই ও সহপাঠীরা।  ছবি: সোহেল সরওয়ারতিনি বলেন, ছেলেবেলায় বাচ্চু সাইকেল চালাতে পছন্দ করতেন। স্কুল ফাঁকি দিয়ে সাইকেলের পেছনে আমাকে পেছনে বসিয়ে অনেক দূরে চলে যেতেন। একবার মোটরসাইকেলে নিয়ে গেলেন পতেঙ্গা সৈকতে। কিন্তু মাঝপথে স্টার্ট বন্ধ। এবার সেই মোটরসাইকেল রিকশায় তুলে গ্যারেজে নিয়ে গেলেন। তিনি ঘুড়ি উড়াতে ভালোবাসতেন।

বাচ্চুর ছেলেবেলার বন্ধু আমিন চৌধুরী দোতলায় উঠার সিঁড়ি দেখিয়ে বলেন, ওই সিঁড়িতে বসে কত আড্ডা মেরেছি। এ গলিতে কত ক্রিকেট খেলেছি। দোতলায় তার গিটারের টুং-টাং শব্দে মুখর থাকতো পাড়া। আমরা অনেক বড় সম্পদ হারিয়েছি।

** শুক্রবার ঢাকায় জানাজা, শনিবার চট্টগ্রামে দাফন
** কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চু আর নেই
** ‘গোল্ডেন বয়েজ’ থেকে ‘এলআরবি’
** এই রুপালি গিটার ফেলে একদিন...

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৮
এআর/টিসি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।