হাসপাতাল সূত্র জানায়, বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতাল শয্যা আছে ১৫০টি। গত ৩০ জুনের আগে প্রতিদিন রোগীর ভর্তি হতো ৪০-৫০ জন।
শুধু রোগীর ভর্তির সংখ্যা নয়, বিভিন্ন ডাক্তারকে দেখানোর জন্য চেম্বারে আসা রোগীর সংখ্যাও কমেছে। ১ জুলাইয়ের আগে যেখানে বিভিন্ন ডাক্তারের চেম্বারে প্রায় ৫০০ রোগী প্রতিদিন ভিড় করতেন, সেখানে এ সংখ্যা নেমে এসেছে শতাধিকে।
২৯ জুন (শুক্রবার) রাতে সমকালের চট্টগ্রাম ব্যুরোর স্টাফ রিপোর্টার রুবেল খানের আড়াই বছর বয়সী মেয়ে রাইফা খান ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। রাইফার মৃত্যুর পর তার পরিবার ও সাংবাদিকরা চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
ভুল চিকিৎসার জন্য দায়ী চিকিৎসকদের বিচারের দাবিতে সাংবাদিকদের চলমান আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। পরে ১ জুলাই (রোববার) কমিটির প্রধান স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) কাজী মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল কাজ শুরু করে।
রাইফার ঘটনার রেশ না কাটতেই অভিযোগ আসে নগর পুলিশের স্পেশাল রায়ট ফোর্সে (এসআরএফ) নায়েক জাহাঙ্গীর ভুল অপারেশনের শিকার হন ম্যাক্স হাসপাতালে। পরপর তিনবার মেরুদণ্ডের অস্ত্রোপচারের (অপারেশন) সময় চিকিৎসকদের অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার শিকার হন বলে অভিযোগ জাহাঙ্গীরের। যিনি গত ১৩ এপ্রিল ম্যাক্সে ভর্তি হয়েছিলেন।
ম্যাক্স হাসপাতালে সার্জারি ডিপার্টমেন্ট, নিউরো সার্জারি, কার্ডিওলজি, নেফ্রোলজি, মেডিসিন, গ্যাস্ট্রোলজি, নিউরো মেডিসিন, ফিজিক্যাল মেডিসিন, ডায়াবেটিক অ্যান্ড হরমোনি, চেস্ট ডিজিজ, ইএনটি, স্কিন, অ্যালার্জি ডিপার্টমেন্ট, চাইল্ড সার্জারি, চাইল্ড ডিজিজ, সাইকোলজি ডিপার্টমেন্ট, ইউরোলজি ডিপার্টমেন্ট, গাইনোকোলজি ও ক্যানসার ডিপার্টমেন্ট রয়েছে।
সার্জারি ডিপার্টমেন্টে বসেন ডা. শিব শংকর সাহা, ডা. নুরুল হোসেন ভূঁইয়া, ডা. এমএ রউফ, ডা. আশীষ দে ও ডা. বিপ্লব ভট্রাচার্য।
তাদের চেম্বারে দেখা যায়, চিকিৎসাসেবা নিতে আসা বেশিরভাগই আগের সিরিয়ালের রোগী। নতুন করে কেউ সিরিয়াল নিয়ে ডাক্তার দেখাচ্ছেন না।
রাউজান থেকে আসা ৫০ বছরের বৃদ্ধ আবুল কালাম। তিনি ডা. আশীষকে দেখাতে এসেছেন। তাকে নিয়ে আসা ছেলে মো. মারুফ (২৪) বাংলানিউজকে বলেন, ম্যাক্স হাসপাতালে অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি জানি। তবুও হঠাৎ করে বাবার হার্টের সমস্যা দেখা দেওয়ায় নিয়ে এসেছি। অন্য হাসপাতালে ডাক্তারের সিরিয়াল ছিল না। তাই বাধ্য হয়ে ডা. আশীষকে দেখাতে এসেছি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন ডাক্তারের সহকারী জানান, ১ জুলাই থেকে রোগীর সংখ্যা কমেছে। আগে রোগীদের সিরিয়াল দিতে হিমশিম খেতে হলেও বর্তমানে চাপ নেই।
ম্যাক্স হাসপাতালে মহাব্যবস্থাপক রনজন প্রসাদ দাশগুপ্ত বাংলানিউজকে বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করার কারণে রোগীর সংখ্যা কমেছে। এছাড়া মিছিল মিটিং হচ্ছে তাই রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক কমছে।
ডা. ফয়সলের জিম্মিদশা থেকে ১ কোটি মানুষকে মুক্ত করা হবে
রাইফার মৃত্যু: মেডিকেল মার্ডার কিনা খতিয়ে দেখার অনুরোধ
ম্যাক্স হাসপাতাল বন্ধ ও ফয়সালের সনদ বাতিলের দাবি
ম্যাক্স হাসপাতালের লাইসেন্স ত্রুটি আছে
চিকিৎসকরা আইনের ঊর্ধ্বে নন
রাইফার চিকিৎসায় ত্রুটি হলে ছাড় নয়
ম্যাক্স হাসপাতালে বৈঠক বয়কট, আন্দোলনে সাংবাদিকরা
ভুল চিকিৎসায় শিশুর মৃত্যু, সাংবাদিকদের প্রতিবাদ সমাবেশ
ম্যাক্স হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, জুলাই ০৪ , ২০১৮
জেইউ/টিসি