বাংলাদেশে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং জলবায়ু-সহনশীল জনপরিসেবা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ওয়াটারএইড বাংলাদেশ এবং জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটের (এনআইএলজি) মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) এ সমঝোতা স্মারক সই হয়।
এ অংশীদারত্বের লক্ষ্য হলো ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জলবায়ু-সহনশীল জনপরিষেবা-বিশেষত কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সমন্বিত পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা (আইডব্লিউআরএম), এবং পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) খাতের সেবার মানোন্নয়ন নিশ্চিত করা।
পাঁচ বছর মেয়াদি এই অংশীদারত্বের আওতায় ওয়াটারএইড বাংলাদেশ ও এনআইএলজি যৌথভাবে প্রশিক্ষণ মডিউল প্রণয়ন, গবেষণা পরিচালনা এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের প্রতিনিধিদের জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ আয়োজন করবে। প্রাথমিকভাবে এটি সুইজারল্যান্ডের সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন গোফরইমপ্যাক্ট কর্মসূচির আওতায় নওগাঁ ও সাতক্ষীরা জেলায় বাস্তবায়ন হবে এবং পরবর্তীতে সারা দেশে রূপায়ন করা হবে।
অনুষ্ঠানে জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিউট (এনআইএলজি) মহাপরিচালক মো. আব্দুল কাইয়ুম বলেন, এই অংশীদারত্ব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এনআইএলজি ও ওয়াটারএইড বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগ স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও জনগণমুখী করে তুলবে।
ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর (ইনচার্জ) আজমান আহমেদ চৌধুরী বলেন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরসমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধি হলো অন্তর্ভুক্তিমূলক ও জলবায়ু-সহনশীল কার্যকর জনপরিষেবা প্রদানের মূল ভিত্তি।
এনআইএলজির সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা এমন সক্ষম ও কার্যকর স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান ও সরকারি দপ্তর গড়ে তুলতে চাই, যারা তৃণমূল পর্যায়ে কার্যকর জনপরিষেবা প্রদানের মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে স্থায়ী ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার বিভাগ (এলজিডি)-এর অতিরিক্ত সচিব সুরাইয়া আখতার জাহান অংশীদারিত্বের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের (এলজিআই) সক্ষমতা ঘাটতি নিরসনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বিশেষ করে তিনি সমন্বিত পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা (আইডব্লিউআরএম) ও কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (এসডব্লিউএম) খাতে সক্ষমতা উন্নয়নের দিকে মনোযোগ দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন।
ওয়াটারএইড বাংলাদেশের পলিসি এডভাইজার (সাবেক অতিরিক্ত সচিব) এম শফিকুল ইসলাম তার উপস্থাপনায় এই অংশীদারিত্বের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, প্রত্যাশা এবং পরবর্তী পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন।
এনআইএলজির পরিচালক, প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ মো. কায়েসুজ্জামান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে উভয় প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে সরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) বিশেষ করে লক্ষ্য ছয় (নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন), লক্ষ্য ১১ (টেকসই নগরায়ন ও সমাজ), এবং লক্ষ্য ১৩ (জলবায়ুবিষয়ক পদক্ষেপ) অর্জনে উভয় প্রতিষ্ঠান একযোগে কাজ করবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন কায়েসুজ্জামান।
এএটি