ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সেই ম্যাক্স হাসপাতালে র‌্যাবের অভিযান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬১৮ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০১৮
সেই ম্যাক্স হাসপাতালে র‌্যাবের অভিযান ম্যাক্স হাসপাতালে র‌্যাবের অভিযান। ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম: ত্রুটিপূর্ণ লাইসেন্সে অদক্ষ-অনভিজ্ঞ ডাক্তার-নার্স দ্বারা পরিচালিত নগরের মেহেদিবাগের বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে অভিযান শুরু করেছে র‌্যাব।

রোববার (০৮ জুলাই) সকালে অভিযানে নেতৃত্ব দেন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারওয়ার আলম। অভিযানে সহযোগিতা দিচ্ছেন ঢাকার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধি ডা. দেওয়ান মো. মেহেদি হাসান, ওষুধ প্রশাসন চট্টগ্রামের তত্ত্বাবধায়ক গুলশান জাহান প্রমুখ।

সম্প্রতি আড়াই বছর বয়সী শিশু রাইফা খান ভুল চিকিৎসা ও ডাক্তার-নার্সদের অদক্ষতা ও অবহেলায় এ হাসপাতালে মারা যায়। এরপর স্বাস্থ্য অধিদফতরের পর্যবেক্ষণ এবং সিভিল সার্জন মো. আজিজুর রহমান সিদ্দিকীর নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এ হাসপাতালের নানা অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম উঠে আসে।

ম্যাক্স হাসপাতালে অভিযানে নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারওয়ার আলম

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘শিশু কন্যা রাফিদা খান রাইফা যখন তীব্র খিঁচুনিতে আক্রান্ত হয়, তখন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের অভিজ্ঞতা ও আন্তরিকতার অভাব পরিলক্ষিত হয় এবং ঐ সময় থাকা সংশ্লিষ্ট নার্সদের আন্তরিকতার অভাব না থাকলেও এ রকম জটিল পরিস্থিতি মোকাবেলা করার মতো দক্ষতা বা জ্ঞান কোনোটাই ছিল না।

শিশু কন্যা রাফিদা খান রাইফাকে অসুস্থতার জন্য ম্যাক্স হাসপাতালে জরুরি বিভাগে ভর্তি হওয়া থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত চিকিৎসা পাওয়া পর্যন্ত প্রতিটা ক্ষেত্রে তার অভিভাবকের ভোগান্তি চরমে ছিল।

শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. বিধান রায় চৌধুরী শিশুটিকে যথেষ্ট সময় ও মনোযোগ সহকারে পরীক্ষা করে দেখেননি। ডা. দেবাশীষ সেন গুপ্ত ও ডা. শুভ্র দেব শিশুটির রোগ জটিলতার বিপদকালীন আন্তরিকতার সঙ্গে সেবা প্রদান করেননি বলে শিশুর পিতা-মাতা অভিযোগ উত্থাপন করেছেন, যা এই তিন চিকিৎসকের বেলায় সত্য বলে প্রতীয়মান হয়।

তদন্তে স্পষ্ট হয় যে, হাসপাতালে রোগী ভর্তি প্রক্রিয়ায় ভোগান্তি প্রকট। চিকিৎসক নার্সদের সেবা প্রদানের সমন্বয়হীনতা ও চিকিৎসাকালীন মনিটরিংয়ের অভাব দেখা যায়। অদক্ষ নার্স ও অনভিজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগের ফলে কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা অনেক দুর্বল রয়েছে, বিশেষত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা সেবায় বিশেষজ্ঞের সার্বক্ষণিক উপস্থিতির সংকটটি প্রবল। ’

তদন্ত কমিটিতে সদস্য ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক সবুর শুভ।

ম্যাক্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে অভিযুক্ত রাইফার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় তিন চিকিৎসকের মধ্যে দুইজনকে বহিষ্কারও করেছে।  

রাইফার মৃত্যু: দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বাবা
তিন চিকিৎসকের মধ্যে দুইজনকে বহিষ্কার করলো ম্যাক্স
যেসব  ডাক্তার রাইফাকে অবহেলা করেছে, তাদের শাস্তি হবেই
ম্যাক্স হাসপাতালে রাইফার মৃত্যু তদন্ত প্রতিবেদনে যা আছে
বিধান-ফয়সলদের কারণে চিকিৎসায় আস্থা হারাচ্ছে মানুষ
ম্যাক্স হাসপাতালে ডাক্তার-নার্স-কর্মচারীর নিয়োগপত্র নেই

বাংলাদেশ সময়: ১২১৪ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০১৮
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।