ঢাকা, শনিবার, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২৪ মে ২০২৫, ২৬ জিলকদ ১৪৪৬

বসুন্ধরা শুভসংঘ

বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় বদলে যাবে হাজারো জীবনের গল্প

উপকূলের দরিদ্র নারীদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দিয়ে সেলাই মেশিন দিল বসুন্ধরা 

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১:৫০, মে ২৪, ২০২৫
উপকূলের দরিদ্র নারীদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দিয়ে সেলাই মেশিন দিল বসুন্ধরা 

বাবার মৃত্যুর এক মাস পরই এসএসসি পরীক্ষায় বসতে হয়েছে সুমাইয়াকে। কল্পনাও করা যায় না এমন কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছিল সুমাইয়া আফরিন।

দিনমজুর বাবা দীর্ঘদিন পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগে ভুগেছেন। চিকিৎসার খরচে পরিবার হারিয়েছে সব কিছু।

শেষ পর্যন্ত গত ১২ মার্চ সুমাইয়ার বাবা পৃথিবী থেকে বিদায় নেন। তখনই যেন আলোহীন গহিন অরণ্যে হারিয়ে গিয়েছিল সুমাইয়ার ছোট্ট পৃথিবী। চোখের পানি শুকিয়েছে কান্নায়। কিন্তু এখানেই থেমে থাকেনি তার গল্প।

সদ্য এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া সুমাইয়ার জীবন বদলে দিতে পাশে এসে দাঁড়ায় বসুন্ধরা শুভসংঘ। বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ আর একটি সেলাই মেশিন পেয়ে আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখছে এই মেধাবী কিশোরী। বেতাগী উপজেলার পুটিয়াখালী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া সুমাইয়া বলে, ‘বাবা মারা যাওয়ার পর যখন অসহায় হয়ে কাঁদছিলাম, ঠিক তখনই বসুন্ধরা শুভসংঘ আমাকে সেলাই প্রশিক্ষণে যুক্ত করে। আমি অনেক কষ্টে, ভাত না খেয়েও পরীক্ষা দিয়েছি।

সেলাইয়ের কাজ শিখে আজ আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। এই মেশিন দিয়ে আমি আয় করতে পারব, মাকে খাওয়াতে পারব, ছোট ভাইকে পড়াতে পারব। আমি নিজেও কলেজে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারব। ’ সুমাইয়ার মতো ক্ষুদ্র আয়ের পরিবারে বেড়ে ওঠা বনানী বিশ্বাস। বাবার সঙ্গে কখনো মাঠে কৃষিকাজ আবার কখনো বাঁশ-বেতের কাজে সহযোগিতা করা তার নিত্যদিনের বাস্তবতা।

তবু চোখে ছিল স্বপ্ন। নিজের পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া এবং স্বাবলম্বী হয়ে পরিবারকে সাহায্য করা। বসুন্ধরা শুভসংঘের সহায়তায় সেই স্বপ্ন এখন ধীরে ধীরে বাস্তব রূপ নিচ্ছে তার। বাবা বাবুল বিশ্বাস দিনমজুর। বেতাগী উপজেলার বাসণ্ডা গ্রামের এই মানুষটি কখনো মাঠে কৃষিকাজ করেন, কখনো বাঁশ-বেত দিয়ে বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করেন। তার উপার্জনেই চলে পাঁচ সদস্যের সংসার। মা কানন বিশ্বাস গৃহিণী। পরিবারের আয় এমনিতেই সীমিত, তার ওপর মেয়ের কলেজের খরচ চালানো যেন এক যুদ্ধের বিশাল প্রস্তুতি। এসব প্রতিকূলতার মাঝেও এ বছর বেতাগী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে বনানী বিশ্বাস। তার প্রতিদিনের রুটিনে ছিল ক্লাসের পড়ালেখার পাশাপাশি বাবার সঙ্গে মাঠে কাজ করা। কাঁদামাখা পায়ে, রোদে পুড়ে, ধুলায় ভরা দিনে সে জানত, একমাত্র শিক্ষাই পারে তার জীবনের দিক পরিবর্তন করতে। বসুন্ধরা শুভসংঘ আয়োজিত তিন মাসব্যাপী সেলাই প্রশিক্ষণে অংশ নেয় বনানী। প্রশিক্ষণ শেষে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে একটি সেলাই মেশিনও পেয়েছে। বনানী বলে, ‘বাবার সামান্য আয়ে পরিবার চালানোই কঠিন। আমার পড়ালেখার খরচ জোগানো অনেক কষ্টের। এখন আমি সেলাইয়ের কাজ শিখেছি, নিজের আয় দিয়ে নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারব। বসুন্ধরা শুভসংঘ আমার ভবিষ্যতের স্বপ্নের ঠিকানা দেখিয়ে দিয়েছে। ’


উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগী উপজেলায় বসুন্ধরা শুভসংঘ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে তিন মাস বিনামূল্যে সেলাই ও কাপড় কাটার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন দরিদ্র পরিবারের ১৫ জন অসচ্ছল নারী। প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষতা অর্জনের সঙ্গে সঙ্গেই তাঁদের সামনে খুলে যায় এক বিশাল সম্ভাবনার দরজা। সম্প্রতি বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে প্রত্যেককে উপহার দেওয়া হয় একটি করে সেলাই মেশিন। এই উপহারে আনন্দে উচ্ছ্বসিত সবাই। প্রতিটি মুখেই হাসি, চোখে ভবিষ্যতের নতুন স্বপ্ন। তাঁদের জীবনে যেন বইতে শুরু করেছে সুখের এক নির্মল বাতাস। এই ১৫টি পরিবারের সুখের আলো পৌঁছে দেওয়ার নেপথ্যে কাজ করেছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। এটি বসুন্ধরা গ্রুপের একটি মানবিক উদ্যোগ, যেখান থেকে জন্ম নেয় স্বপ্ন, সাহস আর সম্ভাবনার গল্প।

কালের কণ্ঠের বেতাগী উপজেলা প্রতিনিধি স্বপন কুমার ঢালীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান। এখন পর্যন্ত সারা দেশে দুই হাজারের বেশি নারীকে স্বাবলম্বী করতে সেলাই মেশিন দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি উপকারভোগীদের অনুরোধ করেন, তাঁরা যেন সেলাই মেশিনটি যথাযথভাবে কাজে লাগান এবং নিজেদের আত্মনির্ভরশীল করে তোলেন। বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বশির গাজী বলেন, ‘দেশে সামাজিক ও মানবিক কাজের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে অসহায়, বিধবা, এতিম, দরিদ্র অসচ্ছল নারীদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিনামূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। প্রশিক্ষণ শেষে প্রত্যেকের হাতে বিনামূল্যে সেলাই মেশিন তুলে দেওয়া হচ্ছে। এমন মহতী কাজের জন্য বসুন্ধরা গ্রুপকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ’

আয়োজকরা জানান, এই ১৫টি পরিবার এখন আত্মবিশ্বাসী হবে। তারা শুধু নিজের স্বপ্ন পূরণ করবে না, বরং পরিবারের দুঃখ-কষ্টের অবসান ঘটাবে। সমাজের এই সাহসী মেয়েদের মতো অনেকেই যদি সুযোগ পায়, তাহলে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় কেউ পিছিয়ে থাকবে না। বসুন্ধরার সহায়তায় শুভসংঘের এই সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেওয়া বদলে দিচ্ছে হাজারো জীবনের গল্প।

আত্মনির্ভর হওয়ার স্বপ্ন সত্য করেছে বসুন্ধরা 
চাঁদনী আক্তার, শিক্ষার্থী

বেতাগী উপজেলার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে থাকি আমরা। পরিবারে স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি আর আড়াই বছরের মেয়েকে নিয়ে পাঁচজন সদস্য। স্বামী একটি ছোট দোকান চালায়। সেই দোকানের আয়ে আমাদের সংসার খুব কষ্টে চলে। সব সময় চাইতাম কিছু একটা করতে, যাতে নিজের খরচ নিজেই চালাতে পারি আর পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পারি। এই বছর বেতাগী সরকারি কলেজে বিএ ভর্তি হব। পড়াশোনার পাশাপাশি একটি কাজ শিখে উপার্জনের চিন্তা মাথায় ছিল অনেক দিন ধরেই। তখনই বসুন্ধরা শুভসংঘ আমার কথা জানতে পারে। তারা আমাকে বিনামূল্যে তিন মাসের সেলাই প্রশিক্ষণের সুযোগ দেয়। প্রশিক্ষণ শেষে একটি সেলাই মেশিন উপহার দেয় আমাকে। মেশিনটি হাতে পাওয়ার পর আমি যেন নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছি। এখন আমি ঘরে বসেই অর্ডার নিয়ে কাজ শুরু করতে পারব। নিজে কিছু আয় করতে পারব, মেয়ের ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করতে পারব। এই উপকার আমি কোনো দিন ভুলব না। বসুন্ধরা শুভসংঘ শুধু একটি মেশিন দেয়নি, একটি নতুন জীবন দিয়েছে। আমি সত্যি কৃতজ্ঞ, তারা আমার আত্মনির্ভর হয়ে ওঠার স্বপ্নকে সত্যি করেছে। আমার মতো আরো অনেক মেয়ে যেন এভাবে সাহস পায় নিজের পায়ে দাঁড়াতে।

নতুন স্বপ্নে বিভোর বনানী বিশ্বাস

বরগুনার বেতাগী উপজেলার মেধাবী শিক্ষার্থী বনানী বিশ্বাস। দারিদ্র্যের কঠিন বাস্তবতার মধ্যেও স্বপ্ন দেখে স্বাবলম্বী হওয়ার। দিনমজুর বাবা ও গৃহিণী মায়ের সংসারে অভাবের ছায়া দীর্ঘদিন ধরে, তবু সে হার মানেনি। এইচএসসি পরীক্ষার্থী বনানী পড়াশোনার পাশাপাশি সংসারের দায়িত্ব নিতে বাধ্য হয়।

আর্থিক সংকট তাকে বারবার পিছিয়ে দিচ্ছিল। এমন সময় বসুন্ধরা শুভসংঘের সহায়তা তার জীবনে নতুন আলো আনে। বসুন্ধরা শুভসংঘ তাকে বিনামূল্যে তিন মাসের সেলাই প্রশিক্ষণ দেয় এবং বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে একটি সেলাই মেশিন প্রদান করে। এই সুযোগটি বনানীর জন্য স্বপ্নপূরণের মতো।

সেলাই মেশিন পেয়ে বনানী কৃতজ্ঞচিত্তে বলে, ‘বসুন্ধরা শুভসংঘ আমার জীবনে আশার আলো এনে দিয়েছে। তাদের দেওয়া এই প্রশিক্ষণ এবং সেলাই মেশিন শুধু আমারই নয়, আমার পুরো পরিবারের ভাগ্য বদলে দিয়েছে। আজ আমি নিজের পায়ে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখতে পারছি। বসুন্ধরা গ্রুপ ও শুভসংঘের এই মহৎ উদ্যোগের জন্য আমি সারা জীবন কৃতজ্ঞ থাকব। ’

তার কথায় ফুটে উঠেছে অকৃত্রিম কৃতজ্ঞতা। সে আরো বলে, ‘আমার মতো গরিব মেয়েদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বসুন্ধরাকে ধন্যবাদ। তারা শুধু একটি মেশিনই দেয়নি, দিয়েছে স্বাবলম্বী হওয়ার হাতিয়ার, দিয়েছে সম্মানজনক জীবনের স্বপ্ন। ’

রিয়ার অভাবের সংসারে আলোর ঝলকানি

নারায়ণগঞ্জ থেকে ভালোবাসার টানে বরগুনার বেতাগীতে এসেছিলেন রিয়ামনি। স্বপ্ন দেখেছিলেন স্বামীকে নিয়ে সুখের নীড় বাঁধবেন, কিন্তু বিধাতা তাঁদের ভাগ্যে হয়তো অন্য কিছু লিখে রেখেছিলেন। রিয়ার স্বামী একটি হোটেলে কাজ করেন, কিন্তু হোটেল মালিকের খেয়ালখুশির ওপর নির্ভর করে তাঁদের সংসার। একদিন দোকান খুললে তিন-চার দিন বন্ধ রাখেন।

নিয়মিত মজুরিও মেলে না। রিয়ামনির শ্বশুর অচল হয়ে পড়ে আছেন। পুরো পরিবারের ভরসা শুধু তাঁর স্বামী। এমনও দিন গেছে, যখন না খেয়ে থাকতে হয়েছে।
অভাব নিত্যসঙ্গী হলেও রিয়ামনির ছিল একরাশ স্বপ্ন। নিজের হাতে কিছু করে পরিবারের আর্থিক কষ্ট কিছুটা লাঘব করতে চেয়েছিলেন তিনি। তাঁর সেই স্বপ্নপূরণে পাশে দাঁড়িয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। প্রশিক্ষণ শেষে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে নতুন সেলাই মেশিন পেয়ে রিয়ামনির মুখে ফুটে ওঠে অন্য রকম হাসি, যেন অভাবের সংসারে দেখা দিয়েছে আলোর ঝলকানি।

চোখেমুখে চিকচিক করছে নতুন স্বপ্ন। রিয়া বলেন, ‘ভাবিনি কখনো একটি নতুন সেলাই মেশিন পাব। এবার নিজে কাজ করে পরিবারের জন্য রোজগার করতে পারব। আর না খেয়ে থাকতে হবে না। ’

শিল্পী বেগমের জীবনে নতুন পথের দিশা

বেতাগী উপজেলা বাসস্ট্যান্ডে ছোট্ট একটি টং দোকান চালান শিল্পী বেগম। তাঁকে সহায়তা করে ছোট ছেলে। প্রতিবন্ধী স্বামী নিয়ে জীবনের বোঝা অনেক ভারী হয়েছে শিল্পীর। বড় ছেলে বিয়ের পর আলাদা হয়ে গেছেন, মেয়ে শ্বশুরবাড়িতে।

সংসারের সব দায়িত্ব এখন শিল্পী আর ছোট ছেলের কাঁধে। দুই বেলা ভালো খাওয়ার চিন্তায় দিন যায় তাদের। অনেক সময় এক বেলা খেয়ে অন্য বেলা না খেয়েই কাটাতে হয়। ছোট ছেলেটি পাশে থেকে সাহস দেয়।

কিন্তু অসুস্থ স্বামী আর সংসার চালাতে চালাতে হাঁপিয়ে উঠেছেন তিনি। শিল্পী বেগমের এই কঠিন সময়ে বসুন্ধরা শুভসংঘ আশার আলো হয়ে আসে। তাঁকে সেলাই প্রশিক্ষণের সুযোগ করে দেয়। শিল্পী বেগম এলন, ‘প্রশিক্ষণ শেষে ভাবছিলাম, যদি একটি সেলাই মেশিন কিনতে পারতাম, তাহলে দোকানের পাশাপাশি সেলাই করে বাড়তি আয় করতে পারতাম। কিন্তু মেশিন কেনার সামর্থ্য কই! ঠিক তখনই বসুন্ধরা শুভসংঘ আমাকে চমকে দেয়। তারা আমাকে বসুন্ধরা গ্রুপের উপহার হিসেবে একটি নতুন সেলাই মেশিন দেয়। আমি তো বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না! এত দিন পর মনে হলো কেউ একজন আমার কষ্টটা বুঝেছে, আমার পাশে দাঁড়িয়েছে। অল্প অল্প করে আয় বাড়ছে, ছেলের মুখে হাসি ফুটেছে। আমার স্বামীও খুশি।

বসুন্ধরা শুভসংঘ আমাকে স্বপ্ন দেখার সাহস দিয়েছে, নিজের পায়ে দাঁড়ানোর শক্তি দিয়েছে। আমি বসুন্ধরা গ্রুপ ও বসুন্ধরা শুভসংঘের জন্য অন্তরের গভীর থেকে দোয়া করি। আমি বিশ্বাস করি, চেষ্টা আর সাহস থাকলে নতুন করে শুরু করা যায়। যেমনটা আমি পেড়েছি বসুন্ধরা শুভসংঘের হাত ধরে। ’

মহতী কাজের জন্য বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ
মো. বশির গাজী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেতাগী, বরগুনা


সারা দেশে সামাজিক ও মানবিক কাজের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। তারা দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে বসুন্ধরা শুভসংঘের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের অসহায়, বিধবা, এতিম ও দরিদ্র অসচ্ছল নারীদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। বিনামূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। প্রশিক্ষণ শেষে প্রত্যেকের হাতে বিনামূল্যে সেলাই মেশিন তুলে দিচ্ছে।

সরকারিভাবে অনেক সময় প্রশিক্ষণ না দিয়ে সুবিধাভোগীদের সেলাই মেশিন দেওয়া হয়। এটি খুব কাজে আসে না। কিন্তু বসুন্ধরা শুভসংঘ প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তারপর সেলাই মেশিন দেয়। এই কাজটি সবচেয়ে ভালো হয়েছে।

এই মেশিনে কাজ করে একটি পরিবার ভালোভাবে বাঁচতে পারবে। ভালো কাজের জন্য আপনাদের সঙ্গে আমাদের একটি যোগসূত্র তৈরি হয়েছে। দরিদ্র মানুষকে স্বাবলম্বী করার এমন মহতী উদ্যোগ নেওয়ার জন্য বসুন্ধরা গ্রুপকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।

দরিদ্র পরিবারে সচ্ছলতা ফিরে আসবে
বিপুল সিকদার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) বেতাগী, বরগুনা

বসুন্ধরা শুভসংঘ সারা দেশে অসচ্ছল নারীদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দিয়ে সেলাই মেশিন বিতরণ করছে। বরগুনার বেতাগীতেও তারা দরিদ্র পরিবারের নারীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ করল। বসুন্ধরা শুভসংঘ একেকটি অসচ্ছল পরিবারকে সমাজে প্রতিষ্ঠা করে দিল। প্রশিক্ষণ ও সেলাই মেশিন পেয়ে মেশিনটি কেউ ঘরে বসিয়ে রাখবে না।

শুভসংঘের আপনারা যাঁরা দায়িত্বে আছেন, তাঁরা ফলোআপ করবেন এরা মেশিন দিয়ে যথাযথ কাজ করে কি না। তাদের সফলতার গল্প শুনবেন এবং প্রচার করবেন। প্রত্যেককেই সফলতা অর্জন করতে হবে। তাহলেই সবাই আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারবে।

সেলাই মেশিনে উপার্জিত টাকায় পরিবারে সচ্ছলতা ফিরে আসবে। আমরা সমাজের সবাই মিলে যদি বসুন্ধরা শুভসংঘের মতো ভালো কাজ করি, তাহলে বাংলাদেশ স্বনির্ভর দেশ হিসেবে খ্যাতি লাভ করবে। অর্থনীতির উন্নয়ন হবে। এমন মহতী উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বসুন্ধরা গ্রুপকে অনেক ধন্যবাদ জানাই।

অসচ্ছল নারীরা ঘুরে দাঁড়াবেন
আফরোজা আক্তার, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা বেতাগী, 

অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বসুন্ধরা শুভসংঘের সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন। পিছিয়ে পড়া নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও তাঁরা যাতে সংসারে সচ্ছলতা আনতে পারেন এ জন্য সেলাই মেশিন দিচ্ছেন। নারীদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ ও সেলাই মেশিন দিচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপ। এই সেলাই মেশিন দিয়ে কাপড় সেলাই করে পরিবারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে পারবেন দরিদ্র নারীরা।

আমার দপ্তরও এ ধরনের কাজ করে থাকে। আমরা মূলত সমাজে অবহেলিত, অসচ্ছল ও সুবিধাবঞ্চিত নারীদের নিয়ে কাজ করি। বসুন্ধরা শুভসংঘও এই অবহেলিত নারীদের নিয়ে কাজ করে। বসুন্ধরা শুভসংঘের এই মহতী উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।

এমন দুর্গম উপকূলীয় অঞ্চলের নারীদের স্বাবলম্বী করতে এগিয়ে এসেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। সাধারণত কেউ এত দুর্গম জায়গায় এসে কাজ করতে চায় না। বসুন্ধরা গ্রুপের এই সহায়তা পেয়ে ঘুরে দাঁড়াবেন অসচ্ছল নারীরা, এমনটাই প্রত্যাশা করছি।

পিছিয়ে পড়া নারীদের জন্য কাজ করছে বসুন্ধরা
মো. মিজানুর রহমান খান, সদস্যসচিব, পৌর বিএনপি, বেতাগী, বরগুনা

প্রশিক্ষণ শেষে দরিদ্র নারীদের প্রত্যেকের হাতে বিনামূল্যে সেলাই মেশিন তুলে দেওয়া হচ্ছে। এভাবে দেশে সামাজিক ও মানবিক কাজের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। গ্রামীণ অসচ্ছল ও পিছিয়ে পড়া নারীদের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে বসুন্ধরা শুভসংঘ কাজ করে যাচ্ছে। যাঁরা সেলাই মেশিন পেয়েছেন, তাঁরা পোশাক তৈরি করে পরিবারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে পারবেন।

সমাজে যাঁরা অবহেলিত নারী রয়েছেন, তাঁদের বিনামূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ ও মেশিন বিতরণ করে অনেক মহতী কাজ করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। যে নারী সেলাই মেশিনটি পাবেন, তিনি ভাগ্যবতী। কারণ তিনি একটি পরিবারকে সচ্ছল করতে পারবেন। এসব পরিবার এই সেলাই মেশিন দ্বারা চলতে পারবে।
বাংলাদেশের তৈরি করা পোশাক এখন নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। বসুন্ধরা সারা দেশে মানবিক কাজ করছে। বেতাগী পৌর বিএনপির পক্ষ থেকে বসুন্ধরা গ্রুপকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

সবাই এগিয়ে এলে নারীরা অবহেলিত থাকবেন না
মো. শাহাদাত হোসেন মুন্না, সেক্রেটারি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বেতাগী, বরগুনা

দরিদ্র নারীদের স্বাবলম্বী করতে বসুন্ধরা গ্রুপ যে উদ্যোগ নিয়েছে, এমন উদ্যোগ যদি সমাজের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান নেয়, তাহলে আমাদের প্রিয় স্বদেশ স্বনির্ভরশীল হয়ে যাবে। এভাবে যদি সবাই এগিয়ে আসে, তাহলে অবহেলিত বলতে কোনো শব্দ থাকবে না। একটি সেলাই মেশিন দিয়ে একটি পরিবার চালানো সম্ভব। আজ আমাদের মায়েরা যাঁরা রয়েছেন, আমাদের বোনেরা যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা বসুন্ধরা শুভসংঘ থেকে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।

তিন মাস প্রশিক্ষণ শেষে তাঁদের হাতে সেলাই মেশিন তুলে দিয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ। এই মেশিন দিয়ে আপনারা ঘরের কাজগুলো করবেন এবং এক পর্যায়ে আপনাদের এলাকায় একটা চাহিদা তৈরি হবে। এরপর এই মেশিন দিয়ে টাকা আয় করতে পারবেন। আপনারা আর পরিবারের জন্য বোঝা হয়ে থাকবেন না। যে নারী এই সেলাই মেশিনটি পেয়েছেন, তিনি ভাগ্যবতী। কারণ তিনি একটি পরিবারকে বাঁচাতে পারবেন। বসুন্ধরা গ্রুপের একটি মানবিক কাজ এটি।

সৌজন্যে কালের কণ্ঠ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বসুন্ধরা শুভসংঘ এর সর্বশেষ