লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে মা ও মেয়েকে হত্যার ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ভাগনে পারভেজকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আকতার হোসেন।
পুলিশ জানায়, অভাবের কারণে স্বর্ণের লোভে পারভেজ নিজের মামী জুলেখা বেগম ও মামাতো বোন মীমকে হত্যা করে। ঘটনার পর আলমারি ভেঙে প্রায় সাত ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যান। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি বিশেষ দল বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ঢাকার তুরাগ থানার একটি গ্যারেজ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
গত ৯ অক্টোবর বিকেলে রামগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের উত্তর চন্ডিপুর গ্রামে নিজ বাড়ির দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে মা ও কলেজপড়ুয়া মেয়েকে খুন করা হয়। নিহতরা উপজেলার সোনাপুর বাজারের ক্রোকারিজ ব্যবসায়ী ও সাবেক সেনা সদস্য মিজানুর রহমানের স্ত্রী ও কন্যা।
জেলা পুলিশ জানায়, ক্লু-লেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশের একটি দল মাঠে নামে। তদন্তে ব্যবসায়ী মিজানুর রহমানের ভাগিনা পারভেজকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে পারভেজ জানান, দুই মাস আগে তিনি সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরেন। পরে স্থানীয় একটি এনজিওতে ঋণ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টে থাকা এক লাখ ৭০ হাজার টাকা তুলতে না পারায় আর্থিক সংকটে পড়েন। অভাবের তাড়নায় মামা মিজানুর রহমানের বাসা থেকে স্বর্ণালংকার লুটের পরিকল্পনা করেন।
ঘটনার দিন বিকেলে রামগঞ্জ শহর থেকে একটি ছুরি কিনে মামার বাড়ি চন্ডিপুরে যান। তখন বাড়িতে মামী জুলেখা ও মামাতো বোন মীম একাই ছিলেন। তারা পারভেজকে আপেল ও আমড়া খেতে দেন। পরে মীমের সঙ্গে দ্বিতীয় তলার কক্ষে গিয়ে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন। এরপর নিচতলায় নেমে মামী জুলেখাকে ওপরতলায় ডেকে নিয়ে পেছন দিক থেকে প্লেট ও টি-টেবিল দিয়ে আঘাত করেন। তিনি পড়ে গেলে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন। পরে একটি শাবল দিয়ে আলমারি খুলে স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে শ্বশুরবাড়িতে যান। যাওয়ার সময় নিজের জামা-কাপড় বদলে মামাতো ভাইয়ের জামা পরে নেন।
পুলিশ জানায়, পারভেজ লুটকৃত স্বর্ণের প্রায় এক ভরি লক্ষ্মীপুরের দুটি দোকানে বিক্রি করে দেন। বাকি প্রায় ছয় ভরি স্বর্ণসহ ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। তাকে গ্রেপ্তারের পর স্বর্ণগুলোও উদ্ধার করা হয়েছে।
এসআরএস