যশোর: বিদ্যুতায়িত হয়ে ছাদ থেকে পড়ে যশোরে সাজ্জাদ হোসেন (২৫) নামে একজন নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে রোববার (০৫ অক্টোবর) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে শহরের খড়কী শাহ আব্দুল করিম রোডের রুপকথার গলির মোড়ে একসেনচিউর নিলাচল টাওয়ারের সামনে।
নিহত সাজ্জাদ যশোর সদর উপজেলার মঠবাড়িয়া গ্রামের আজগর আলীর ছেলে।
প্রতক্ষ্যদর্শী নাদিয়া ইসলাম জানিয়েছেন, তিনি আড়ং এর একজন কর্মী। রুপকথার গলিতে থাকেন। বিকেল পৌনে চারটার দিকে তিনি বাড়ি থেকে তার প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছিলেন। এমন সময় দেখতে পান একসেনসিউর নিলাচল টাওয়ারের নির্মাণাধীন দশতলা বিল্ডিং এর ছাদ থেকে একজন পড়ে গেছেন।
সাথে সাথে তিনিসহ অন্য কয়েকজন এগিয়ে যান। সেখানে আরো দুজন নির্মাণ শ্রমিক ছিলেন। তাদের ঠিক পাশে পড়ে যান সাজ্জাদ। সাথে সাথে তার নাক, মুখ কান দিয়ে প্রচুর রক্ত পড়ে। ঘটনাস্থলেই তিনি প্রাণ হারান।
তিনি জানিয়েছেন, চোখের সামনে ঘটনাটি ঘটলো। তিনি বিস্মিত। ভয়ও পেয়েছেন। এর আগেও যশোরে ছাদের কার্নিস ধসে আরো তিনজন মারা গেছেন। ওই বিল্ডিং এ তেমন কোন নিরাপত্তাবলয় নেই।
নিহতের চাচাতো ভাই সুমন ও অপর শ্রমিক রাজু জানিয়েছেন, দশতলা থেকে ময়লা আবর্জনা ক্রেনে করে সাজ্জাদ নিচে নামাচ্ছিলেন। বিকেলে পৌনে তিনটার দিকে দশতলার ছাদে ছিলেন তিনি। ক্রেনের নিচের অংশ ভারি। সেটি ওঠানোর সময় দোল খেয়ে বিল্ডিং এর সামনে ইলেক্ট্রিক তারের সাথে লাগে।
সাথে সাথে তিনি বিদ্যুতায়িত হয়ে নিচে পড়ে যান। নিচে যেখানে পড়েন সেখানে কংক্রিটের মেঝে করা। সাথে সাথে তার মুখমন্ডল রক্তে ভিজে যায়। কিছুক্ষণ পরে তার মৃত্যু হয়।
তারা জানান, ঘটনার সময় বাইরে তেমন কোন লোকজন ছিলেন না। ফলে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয়নি।
শ্রমিক আশানুর রহমান জানিয়েছেন, বছর দেড়েক হলো ৫০/৬০জন শ্রমিক ওই বিল্ডিং এ কাজ করছেন। এমন ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। নিহত সাজ্জাদ শুরু থেকে কাজ করছেন। প্রতিদিন তিনি বাড়ি থেকে যাতায়াত করেন। তিন ভাইয়ের মধ্যে সাজ্জাদ দ্বিতীয়। বিয়ে করেছেন আড়াই বছর আগে। তার কোন সন্তান নেই।
সংবাদ পেয়ে নিহতের মা ও শ্বাশুড়ি ঘটনাস্থলে যান। সেখানে এক হৃদয়বিদায়ক ঘটনার অবতারণা হয়। তার সব সহকর্মীরাও কান্নায় ভেঙে পড়েন।
সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন কোতোয়ালি থানার এসআই শহিদুল ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন, ক্রেন দিয়ে কাজ করার সময় অসাবধানবসত বিদ্যুতের তারে লাগে। ফলে তিনি দশতলা থেকে নিচে পড়ে যান। ঘটনাস্থলেই তিনি প্রাণ হারান বলে জানতে পেরেছেন।
একসেনসিউর নিলাচল টাওয়ারের নির্মাণ কাজের ব্যবস্থাপক মিঠুন জানিয়েছেন, নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যুর কথা শুনেছি। টাওয়ারে যথেষ্ট প্রটেক্ট রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এর আগে যশোর শহরের সার্কিট হাউজ পাড়ার একটি বাড়ি নির্মাণ করার সময় ছাদের কার্নিশ ভেঙে নিচে পড়ে প্রকৌশলীসহ তিনিজন মারা যান। সে সময়ও বিল্ডিং এ কোন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল না।
এসএইচ