মেহেরপুর: প্রথম আলোর মেহেরপুর প্রতিনিধি আবু সাঈদের নামে ৫০ লাখ টাকার মানহানির মামলা দায়ের হয়েছে।
রোববার (০৫ অক্টোবর) মেহেরপুরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহা. নাসির উদ্দিন ফরাজির আদালতে মামলাটি দায়ের করেন দৈনিক কালবেলার মেহেরপুর প্রতিনিধি খান মাহমুদ আল রাফি।
বিচারক মামলাটি গ্রহণ করে মেহেরপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
আবু সাঈদ গাংনী উপজেলার কাথুলী ইউনিয়নের গাড়াবাড়িয়া গ্রামের শওকত হোসেনের ছেলে। মানহানির মামলাটি মেহেরপুরে জেলা জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, আবু সাঈদ প্রতিহিংসার কারণে ইচ্ছাকৃতভাবে রাফির বিরুদ্ধে লন্ডন প্রবাসী শহিদুল ইসলাম শাহীনকে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করেন। ওই তথ্যের ভিত্তিতে শহিদুল ইসলাম ফেসবুক লাইভে এসে রাফিকে নিয়ে প্রকাশ্যে বিদ্রুপ, মশকরা ও মানহানিকর বক্তব্য দেন।
লাইভে তিনি দাবি করেন, রাফি অনলাইন ক্যাসিনো এজেন্টের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়েছেন। তবে পরে আরেকটি লাইভে এসে শহিদুল স্বীকার করেন, তথ্যটি তাকে দিয়েছেন আবু সাঈদ, কিন্তু কোনো প্রমাণ তিনি দিতে পারেননি।
খান মাহমুদ আল রাফি তার আরজিতে উল্লেখ করেছেন, তিনি দীর্ঘদিন মেহেরপুরে অনলাইন জুয়া ক্যাসিনো নিয়ে ধারাবাহিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করছেন। তার লেখা ‘রাজধানী মেহেরপুর, হেডকোয়ার্টার রাশিয়া’ শিরোনামের রিপোর্ট দৈনিক কালবেলায় ছয় কলামে লিড নিউজ হিসেবে প্রকাশিত হলে সারা দেশে আলোড়ন তোলে।
এর প্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সিআইডি একাধিকবার তাকে ডেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছে এবং অনলাইন জুয়া প্রতিরোধ আইনের সংশোধনেও তার রিপোর্ট প্রভাব ফেলেছে।
রাফির দাবি, তার এই সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হয়ে আবু সাঈদ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দিয়েছেন, যা তার সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন করেছে এবং পেশাগত সুনামে আঘাত হেনেছে। এর ফলে তার এবং তার কর্মরত প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে।
তিনি মানহানির ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫০ লাখ টাকা দাবি করেছেন।
মামলার সাথে ফেসবুক লাইভের ভিডিও, ভয়েস রেকর্ড ও চ্যাট কনভার্সেশন আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় দৈনিক কালবেলার মেহেরপুর প্রতিনিধি খান মাহমুদ আল রাফি বলেন, ‘সারাদেশেই মফস্বল পর্যায়ের সাংবাদিকদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ির একটা নোংরা খেলা সব সময় চলতে থাকে। যেগুলোর কোন ভিত্তি থাকেনা। প্রতিহিংসাবশত অন্যের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই এগুলো করা হয়। এই নোংরামির বিরুদ্ধে প্রতিবাদস্বরূপ আমি আইনের আশ্রয় চেয়েছি’।
রাফির আইনজীবী মিজানুর রহমান মামলার বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, আদালত মামলাটি মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তদন্ত করার নির্দেশনা দিয়েছেন। তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা হওয়ার পর বিস্তারিত বলা যাবে।
মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মেজবাহ উদ্দীন বলেন, তদন্তের আদেশ এখনো তিনি হাতে পাননি। আদেশ আসলে তদন্ত শুরু করবেন।
বিষয়টি নিয়ে প্রথম আলো’র মেহেরপুর প্রতিনিধি আবু সাঈদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, কেন আমার বিরুদ্ধে মামলা করা হলো তা বুঝতে পারছি না। আমিতো সাংবাদিক রাফির বিরুদ্ধে ফেইসবুকে কিছু লিখিই নি। তারপরও বিষয়টি নিয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হবে-বলেন আবু সাঈদ।
এসএইচ