ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

পর্যটন

ফুরফুরে মনের খোরাক ‘ফুরোমন পাহাড়’

অপু দত্ত, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২১
ফুরফুরে মনের খোরাক ‘ফুরোমন পাহাড়’ ফুরফুরে মনের খোরাক ‘ফুরোমন পাহাড়’

রাঙামাটি ঘুরে: ফুরোমন। রাঙামাটির প্রবেশমুখে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এক পাহাড়।

গেলো পাহাড় ধসের কিছুটা ক্ষত বয়ে বেড়ানো পাহাড়টি অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয়দের বেশ পছন্দের। আঁকাবাঁকা পথ পাড়ি দিয়ে ফুরোমন জয় করার আনন্দ শুধু তারাই বুঝবেন!

ফুরোমন ট্রেকিং করার ইচ্ছেটা বহু পুরনো। বহুবার পরিকল্পনা করেও ভেস্তে গেছে। সবশেষ গত ১৩ মার্চ টিম নিয়ে জয় করে এলাম রূপবতী ফুরোমন পাহাড়। এ এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা। এর আগে বিভিন্ন পাহাড় ট্রেকিং করলেও ফুরোমন পাহাড় ট্রেকিং আমাদের জন্য মোটেও সহজ ছিল না।

ফাল্গুনের শেষে প্রখর রোদের তাণ্ডব। শুষ্ক প্রাণহীন প্রকৃতি তখন বৃষ্টির অপেক্ষায়। রোদ ও জুম পাহাড়ের আগুনে বারবার চোখ রাঙানি দিচ্ছিল।

চাকমা জাতিগোষ্ঠীর ভাষায় ফুরোমন অর্থ ফুরফুরে মন। রাঙামাটির শহরের প্রবেশমুখের সাপছড়ি ইউনিয়নে ফুরোমান পাহাড়ের অবস্থান। প্রায় ১ হাজার ৫১৮ ফুট উচ্চতার পাহাড়টির যাত্রাপথ ঝুঁকিপূর্ণ হলেও পাহাড়ের চূড়া থেকে পাহাড়ের ফাঁকে সুবিশাল কাপ্তাই লেক এবং সবুজের সৌন্দর্যে আপনি মুগ্ধ হতে বাধ্য।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আমাদের যাত্রা শুরু হয়। রাঙামাটির ঘাগড়া সড়কের সাপছড়ি পুলিশ ফাঁড়ি সড়ক দিয়ে আমাদের প্রবেশ। ইটের রাস্তা ধরে প্রায় ১০ মিনিটের পথ পাড়ি দিয়ে আমরা নামলাম ফুরোমনের পাদদেশে। সেখান থেকে পাঁচজনের টিম নিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু। কড়া রোদ পাশ কাটিয়ে আঁকাবাঁকা, খাঁড়া রাস্তা ধরে আমাদের ছুটে চলা। প্রচণ্ড গরমে এই যাত্রা আমাদের জন্য সত্যিই ক্লান্তিকর ছিল। প্রায় এক ঘণ্টা পর আমরা পৌঁছে গেলাম ফুরোমন পাহাড়ে।

সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি ক্যাম্প রয়েছে। আছে একটি বৌদ্ধ বিহারও। মূলত ক্যাম্প সংলগ্ন হেলিপ্যাড হচ্ছে ফুরোমনের উঁচু স্থানটি।

এখান থেকে দাঁড়িয়ে যতদূরে চোখ যাবে দেখবেন সবুজের সমারোহ। বিশাল কাপ্তাই লেকের নীল জলরাশি, পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে রাঙামাটি শহর। এখান থেকে সূর্যোদয় কিংবা সূর্যাস্তের ঈর্ষণীয় রূপ দেখা যাবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। আমাদের ট্রেকিংয়ের সময়কাল ঠিক ছিল না বলে হয়তো পরিপূর্ণ রূপ দেখা হয়নি। তবে প্রাপ্তি হচ্ছে আমরা ফুরোমন জয় করেছি।

ট্রেকিংয়ে গেলে অবশ্যই শুকনা খাবার, পানি সঙ্গে রাখবেন। ফুরোমনের উপরে খাবারের দোকান নেই। আপনি চাইলে সাপছড়ি পুলিশ ফাঁড়ির পথের শুরুতে পাহাড়িদের কাছ থেকে ফল মূল কিনে নিতে পারেন। আর ভ্রমণের সময় মনে রাখবেন প্রকৃতি যেন অক্ষুণ্ন থাকে।

আপনি ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের যেকোনো জায়গা থেকে রাঙামাটি আসতে পারেন। সেখান থেকে যেকোনো গাড়িতে করে যেতে পারেন ফুরোমন পাহাড়ের পাদদেশে। চট্টগ্রাম থেকে এলে ঘাগড়া সাপছড়িতে নেমে সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে চলে যেতে পারেন সেখানে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২১
এডি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।