ঢাকা, শুক্রবার, ১১ আশ্বিন ১৪৩২, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৭

খেলা

নতুন খেলার আকর্ষণ

বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটিতে প্যাডেল টেনিসের রোমাঞ্চ

রানা শেখ, সৌজন্যে: কালের কণ্ঠ |
আপডেট: ১০:৩৭, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৫
বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটিতে প্যাডেল টেনিসের রোমাঞ্চ প্যাডেল টেনিস খেলতে বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটিতে আসেন ক্রিকেটার তামিম ইকবাল।

চাকরিসূত্রে এ বছরের শুরুতে ইংল্যান্ড থেকে ঢাকায় এসেছেন নাটস মেট। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অফিসে ব্যস্ত থাকতে হয় তাঁকে।

টানা কাজের কারণে শারীরিক ও মানসিক চাপ জেঁকে ধরে। এই চাপ কমাতে ব্যস্ত ঢাকা নগরীতে খেলাধুলার জন্য সে রকম জায়গাও খুঁজে পাচ্ছিলেন না ৩০ বছরের এই তরুণ।

এক সহকর্মীর মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটির কথা, যেখানে প্যাডেল টেনিস খেলার সুব্যবস্থা রয়েছে। তখন থেকেই প্রতিদিন অফিস সেরে সন্ধ্যায় তিনি ছুটে আসেন প্যাডেল টেনিস কোর্টে। শুধু নাটস মেটই নন, জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকারসহ নানা বয়সের নারী ও পুরুষ এখন নিয়মিত বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটিতে আসছেন প্যাডেল টেনিসে ঘাম ঝরাতে।

বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে প্যাডেল বেশ পরিচিত নাম হলেও বাংলাদেশে একদমই নতুন।

বসুন্ধরা গ্রুপের হাত ধরে এ দেশে এর যাত্রা শুরু হয়েছে। ইংল্যান্ডে নিয়মিত খেলতে পারতেন নাটস, ঢাকায়ও সেই সুযোগ পেয়ে অত্যন্ত আনন্দিত তিনি, ‘কয়েক মাস হয়ে গেল বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটিতে এসে প্যাডেল খেলছি। বেশ উপভোগ্য সময় পার করছি এখানে। কাজের পর প্যাডেল খেলে নিজেকে সতেজ রাখার চেষ্টা করছি।

কিছুদিন আগে এখানে একটি টুর্নামেন্টও খেলেছি। দুর্ভাগ্য যে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা আমাদের চেয়েও ভালো। আমি হেরে গেছি। ’

কাচের দেয়াল ও নেট দিয়ে ঘেরা কোর্টে ডবলস ও সিঙ্গেলস পদ্ধতিতে খেলতে হয় প্যাডেল টেনিস। মূলত টেনিস ও স্কোয়াশের মিশ্রণ এই খেলাটি।

কোর্টের আয়তন ২০ মিটার লম্বা এবং ১০ মিটার চওড়া। পেছনের দিকে থাকে কাচে ঘেরা এবং সামনের দিকে নেট দিয়ে আটকানো। টেনিসের মতো একবার বাউন্স করে এলে সেটা রিটার্ন করতে হয়, দুইবার বাউন্স হলে সেটা ‘ফলস’। আর ওয়ান বাউন্স হয়ে নেটে কিংবা গ্লাসে লাগেলে সেটা রিটার্ন করার সুযোগ থাকে। গ্লাসে সরাসরি হিট করেও বল রিটার্ন করা যায়।

বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটিতে শুরুতে দুটি কোর্ট নিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল প্যাডেল টেনিসের। চার মাসের ব্যবধানে কোর্টের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫টিতে। সকাল ৭টা থেকে স্লট শুরু, যা চলে রাত ১১টা পর্যন্ত। দুপুর এবং সন্ধ্যায় বিরতি থাকে আধাঘণ্টার। প্রতিটি স্লটের সময় দেড় ঘণ্টা। এর জন্য গুনতে হয় পাঁচ হাজার টাকা করে। সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে বেশির ভাগ স্লটই ফাঁকা থাকে না। এতটাই ব্যস্ততা বেড়েছে যে এখন রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৯টার যে স্লট আছে, সেটা অন্তত সাত দিন আগে বুকিং দিতে হয়।

প্যাডেলের মাধ্যমে বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটি এখন পুনর্মিলনের জায়গাতেও পরিণত হয়েছে। পড়াশোনা শেষে কর্মক্ষেত্রের ব্যস্ততায় পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে অনেকেরই দেখা হয় না। কিন্তু এখন প্যাডেলের মাধ্যমে সেই উপলক্ষ তৈরি হচ্ছে বলে জানালেন স্পোর্টস সিটিতে খেলতে আসা মধ্যবয়সী রায়েজ সাদমান, ‘এটা খুব মজার খেলা। সত্যি বলতে, এই খেলার মধ্যে নেটওয়ার্ক বাড়ে। এখানে খেলতে এসে নতুন অনেকের সঙ্গে দেখা হয়েছে। আমরা বন্ধুরা সব সময় একসঙ্গে হতে পারি না। এখন প্যাডেলের মাধ্যমে আমাদের নিয়মিত দেখা হচ্ছে। গেট টুগেদার করতে পারছি এখন। ’ শুধু তা-ই নয়, এই খেলার মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে বলে মনে করছেন তিনি, ‘বিভিন্ন বয়সের লোক এসে খেলছে। ১৫ বছর থেকে শুরু করে ৬০ বছর। এটা এমন একটি খেলা, যেখানে বয়সের কোনো বাধা নেই। নিয়মিত খেললে হৃদযন্ত্র ও রক্তনালি ভালো থাকে। তাই আমি সুযোগ পেলেই চলে আসি। ’ বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামলেই বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটির প্যাডেল কোর্টে যেন উৎসবের আমেজ তৈরি হয়!

এনডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।