ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ কার্তিক ১৪৩২, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৭

সারাদেশ

টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহন মারা গেছেন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:৩১, অক্টোবর ২১, ২০২৫
টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহন মারা গেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা হামিদুল হক মোহন

টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হামিদুল হক মোহন মারা গেছেন।

সোমবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার দেওলী এলাকায় তার নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য শেষ করে এলাসিনে আরেকটি প্রচারণায় যোগ দিতে যাওয়ার পথে গাড়িতে হার্ট অ্যাট্যাক হয়।

এ অবস্থায় টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের দায়িত্বে থাকা ডা. মাহমুদুল আলম বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হামিদুল হক মোহনকে নিয়ে এলে ইসিজি করার পর আমরা দেখি, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।

দেলদুয়ার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এম ফেরদৌস বলেন, হামিদুল হক মোহন এবার টাঙ্গাইল-৬ (দেলদুয়ার-নাগরপুর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। যার কারণে বিভিন্ন জায়গায় জনসংযোগ করার জন্য সভা সমাবেশ করছিলেন কয়েকদিন ধরে। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার দেলদুয়ার উপজেলার দেওলী এলাকায় জনসভা শেষ করে এলাসিন এলাকায় অপর একটি প্রচারণায় অংশ নিতে যাওয়ার পথে হার্ট অ্যাটাক হয় তার।  

হামিদুল হক মোহন ৮ আগস্ট ১৯৫২ সালে টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলার মঙ্গলহোড় গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
বাবা মরহুম আইনউদ্দিন আহমেদ ছিলেন পাথরাইল ইউনিয়ন পরিষদের দীর্ঘদিনের চেয়ারম্যান ও সমাজসেবক।

শিক্ষাজীবন শুরু টাঙ্গাইল শহরে, পরে বিন্দুবাসিনী বালক উচ্চ বিদ্যালয় ও জামুর্কী নবাব স্যার আব্দুল গণি উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়েন। এসএসসি, এইচএসসি ও স্নাতক (১৯৬৮) সম্পন্ন করেন সা’দত কলেজ থেকে।

মাওলানা ভাসানীর ঘনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবে তিনি ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয় অংশ নেন।  

মহান মুক্তিযুদ্ধে টাঙ্গাইল হাই কমান্ডের সদস্য হিসেবে সাহসিকতার পরিচয় দেন। স্বাধীনতার পর নির্বাচিত হন বিআরডিবি টাঙ্গাইল ও দেলদুয়ারের চেয়ারম্যান।
শহীদ জিয়াউর রহমানের আমলে “দূতপুল”-এর সদস্য হিসেবে উপমন্ত্রীর মর্যাদা লাভ করেন। তিনি টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে টানা ১৭ বছর দায়িত্ব পালন করেন।

নিজ গ্রাম মঙ্গলহোড়ে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। সাত বার দায়িত্ব পালন করেছেন পাথরাইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে। একই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। তার তত্ত্বাবধানে গড়ে উঠেছে ফাজিলহাটি তমিজ উদ্দিন গার্লস হাইস্কুল, বরুহা হাইস্কুল, আটিয়া শাহানশাহী গার্লস হাইস্কুল। তাছাড়া তিনি ছিলেন টাঙ্গাইল নাট্যমহলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, সাংস্কৃতিক সংগঠন “সরগম”-এর অন্যতম চালিকাশক্তি।

টাঙ্গাইল জেলা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি, টাঙ্গাইল জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রথম নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান এবং দীর্ঘদিন টাঙ্গাইল জেলা ফুটবল লীগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

১৯৭১ সালে তিনি বিয়ে করেন ভাষাসৈনিক সৈয়দ আব্দুল মতিনের কনিষ্ঠ ভগ্নি নুরুন্নাহার পুটিকে।

তিনি পাঁচ সন্তানকে রেখে গেছেন। তারা হলেন- নিপা হক, মিল্টন হক, হাছিনা আফরোজ দিনা, হামিদা আফরোজ ও নাজমুল হক বাবু।

এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।