ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ১২ আগস্ট ২০২৫, ১৭ সফর ১৪৪৭

সারাদেশ

অপকর্ম দেখে ফেলায় শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় সোয়েবকে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩:৪৯, আগস্ট ১১, ২০২৫
অপকর্ম দেখে ফেলায় শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় সোয়েবকে গ্রেপ্তার সবুজ

নড়াইল: স্ত্রী-সন্তান থাকার পরও দীর্ঘদিন ধরে গোপনে এক নারীকে বিবস্ত্র অবস্থায় দেখার বিকৃত নেশায় পড়েন সবুজ শেখ (৩৫) নামে এক যুবক। এ ঘটনা দেখে ফেলায় তিনি নির্মমভাবে হত্যা করেন সোয়েবুর রহমান খান সোয়বকে।

 

অভিযুক্তকে আটকের পর তার দেওয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে তথ্য জানিয়েছেন লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম। রোববার (১০ আগস্ট) রাতে লোহাগড়া থানার হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।  

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মাইট কুমড়া গ্রামের মৃত ইউনুস খানের ছেলে সোয়েবুর রহমান খান সোয়বকে (৪৬) হত্যার ঘটনায় জড়িত সবুজ শেখকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।  

অভিযুক্ত সবুজের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ‘সোয়েবের সঙ্গে সবুজের শত্রুতা ছিলনা। একটা মেয়েকে বিবস্ত্র অবস্থায় দেখছিলেন সবুজ। তা সোয়েবের নজরে আসে। পরে তার কাছে ক্ষমা চেয়ে কাউকে বলতে নিষেধ করেন সবুজ। অঙ্গীকার করেন আর জীবনে এমন অপরাধ করবেন না।

কিন্তু সোয়েব গ্রামের লোকজনকে ডেকে বিচারের হুমকি দেন। সে কারণে তাকে গলা টিপে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ গোপন করতে গলায় গামছা পেঁচিয়ে টেনে পুকুরের কচুরিপনার মধ্যে নিয়ে ঢেকে রাখা হয়।  

গেপ্তার সবুজ শেখ লোহাগড়া উপজেলার কালনা গ্রামের মৃত আহাদ শেখের ছেলে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার (০৭ আগস্ট)  রাত ১০টার দিক সোয়েব বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। পরদিন শুক্রবার (০৮ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে মাইটকুমড়া গ্রামের কচুরিপনায় পূর্ণ একটি  পুকুরে তার মরদেহের খোঁজ পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। লোহাগড়া থানা পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠায়।  

পুলিশ আরও জানায়, হত্যাকাণ্ডের পর ছায়া তদন্ত শুরু করে লোহাগড়া থানা পুলিশ। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যার সাথে জড়িত ব্যক্তিকে সনাক্ত কওে রোববার (১০ আগস্ট) বিকালে সবুজ শেখকে আটক করে পুলিশ।  

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া স্বীকারোক্তিতে নিহত সোয়েবুরের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি অভিযুক্তের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যার কাজে ব্যবহৃত গামছাটি কালনা মধুমতি নদীর ঘাটে পুড়িয়ে পানিতে ফেলে দেন সবুজ।  

এ ঘটনায় হতবাক এলাকাবাসী। এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি। ভুক্তভোগী নারী নিজেও জানেন না দীর্ঘদিন ধরে তার ওপর নজর রাখছিলেন অভিযুক্ত সবুজ। এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাইলেন নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী।  

নিহতের স্ত্রী রিক্তা বেগম অভিযোগ করেন, ‘আমার স্বামীর মৃত্যুর পর সবুজ বৃষ্টির মধ্যে নিজে কবর খুঁড়েছে, লাশ মাটি দিছে। ভাবতেও পারছিনা সে আমার স্বামীকে নির্মমভাবে মারছে। আমাকে যে বিধবা করছে, আমার সন্তানদের এতিম করার পেছনে সবুজ ছাড়াও যদি আর কেউ জড়িত থাকে আমরা চাই তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক’।

ওসি শরিফুল ইসলাম আরও বলেন, সোয়েব হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী বাদী হয়ে ১০ আগস্ট রাতে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলায় গ্রেপ্তার সবুজকে আদালতে কাল হাজির করা হবে।

এসএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

সারাদেশ এর সর্বশেষ