ঢাকা, শুক্রবার, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৩ জুন ২০২৫, ১৬ জিলহজ ১৪৪৬

সারাদেশ

লাউয়াছড়ায় ৪ দিনে সাড়ে ৪ লাখ টাকার রাজস্ব আদায়

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯:৪৪, জুন ১২, ২০২৫
লাউয়াছড়ায় ৪ দিনে সাড়ে ৪ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় লাউয়াছড়ায় আগত পর্যটক। ছবি: বাংলানিউজ

ঈদুল আজহার ছুটিতে দেশজুড়ে পর্যটকদের গন্তব্য হয়ে উঠেছে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ। দেশের অন্যান্য স্থানে কিছু নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষাপটে চায়ের রাজধানী খ্যাত এই অঞ্চলে বেড়েছে পর্যটকের চাপ।


 
সবুজের সমারোহ, পাহাড়-টিলা ঘেরা চা-বাগান আর জীববৈচিত্র্যে ভরপুর লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, হামহাম জলপ্রপাত, মাধবপুর লেক, রাজকান্দি বন, চা গবেষণা কেন্দ্র, দার্জিলিং টিলা, নীলকণ্ঠ সাতরঙা চা কেবিন, শমসেরনগর বিমানবন্দর, বধ্যভূমি ৭১, নুরজাহান চা-বাগানসহ শতাধিক স্পট ঈদের ছুটিতে ভ্রমণপ্রেমীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে। ৪ দিনে লাউয়াছড়ায় প্রায় ৪ হাজার পর্যটকের সমাগম ঘটেছিল।
 
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ঈদের পরের চারদিনে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ৩ হাজার ৯৪৬ জন পর্যটক প্রবেশ করেন। এতে রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
 
শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য, চা-বাগানের মনোরম দৃশ্য, এবং এখানকার শান্ত পরিবেশ প্রতিবছর হাজারো পর্যটককে আকৃষ্ট করে। ঈদের মতো ছুটিতে এ অঞ্চলের পর্যটন আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
 
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৯৯৬ সালে জাতীয় উদ্যান ঘোষণার পর থেকে পর্যটকদের আগমন ধীরে ধীরে বেড়েছে। রেস্টহাউস, ইকো-কটেজ, স্টুডেন্ট ডরমেটরি এবং ইউএসএআইডির অর্থায়নে ব্যাখ্যা কেন্দ্র স্থাপনের ফলে এ আগ্রহ আরও বেড়েছে। তবে উদ্যানসংলগ্ন এলাকায় গাছপালা ও মাটি কেটে স্থাপনা গড়ে তোলায় বন্যপ্রাণীর চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।
 
স্থানীয় বাসিন্দা সাজু মারচিয়াঙ, আহাদ মিয়া এবং কয়েকজন পর্যটক জানান, 'অতিরিক্ত ভিড় ও যানবাহনের হুড়োহুড়িতে বন্যপ্রাণী দেখতে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। দলবদ্ধ পর্যটকদের হইচই এবং বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডে বনাঞ্চলের জীববৈচিত্র্য ঝুঁকিতে পড়ছে। '
 
কমলগঞ্জ থানার ওসি আবু জাফর মো. মাহফুজুল কবীর বলেন, 'প্রতিদিন থানা পুলিশের একটি টিম ট্যুরিস্ট পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করছে। '
 
ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা আসিফ বলেন, 'এটা বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর এলাকা। প্রকৃতি ও চা-বাগানের পরিবেশ দারুণ লেগেছে। ' 

সাতক্ষীরা থেকে আসা তান্নী হাসান জানান, 'নুরজাহান চা বাগান ও গ্র্যান্ড সুলতান রিসোর্টে ঘুরে ভালো লেগেছে। পুরো এলাকা সবুজ আর শান্তিপূর্ণ। ' 

সিলেট থেকে আসা শিক্ষিকা মিলি আক্তার বলেন, 'শিশুরা খোলা মাঠে খেলেছে, শহরের বাইরে এমন খোলামেলা পরিবেশে ঈদের ছুটি কাটানো দারুণ আনন্দের। '
 
শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ জোনের ট্যুরিস্ট পুলিশের ওসি মো. কামরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, 'প্রতিটি স্পটে নিয়মিত টহল চলছে। ঈদ উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সর্বোচ্চ পর্যায়ে রাখা হয়েছে। '
 
লাউয়াছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা কাজী নাজমুল হক জানান, 'পর্যটকদের নিরাপত্তায় বনকর্মী, সিপিজি ও ট্যুরিস্ট গাইড কাজ করছেন। পাশাপাশি ট্যুরিস্ট পুলিশ ও থানা পুলিশের টিম মাঠে রয়েছে। '
 
সহকারী পুলিশ সুপার (শ্রীমঙ্গল সার্কেল) আনিসুর রহমান বলেন, 'ঈদের ছুটি নিরাপদ রাখতে মৌলভীবাজারের প্রতিটি ট্যুরিস্ট স্পটে পুলিশ মোতায়েন করা ছিল। পর্যটকদের নিরাপদে ভ্রমণ এবং বাড়ি ফেরা নিশ্চিত করাই ছিল আমাদের লক্ষ্য। '
  
বিবিবি/আরএ                                

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।