গাজীপুর: এবারও চামড়ার দাম কম থাকায় বেশিরভাগ মানুষই কোরবানির পশুর চামড়া মাদরাসায় দান করেছে। তবে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ সেই চামড়া বিক্রি করেছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা দরে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই কোরবানির পশুর চামড়ার দাম কম। ফলে কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করতেও মানুষকে পড়তে হয়েছে নানা বিপাকে। চামড়া বিক্রি করতে বাজারে গেলেও তার পরিবহন খরচ উঠাতে পারেনি। এ কারণেই পশুর চামড়া বিক্রি করতে মানুষ অনিহা প্রকাশ করে। ফলে কোরবানির পশুর চামড়া সমাজ বা এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন মাদরাসায় দান করে দেন। ঈদের আগেই স্থানীয় লোকজন বা সমাজের মুরব্বিরা আগে থেকেই বিভিন্ন মাদরাসায় চামড়া দান করার সিদ্ধান্ত নেন। পশু কোরবানির পর তারা এসব চামড়া বিভিন্ন মাদরাসায় পাঠিয়ে দেন। এদিকে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ অটোরিকশা ও পিকআপে করে এসব চামড়া সংগ্রহ করে। পরে তারা ব্যবসায়ীদের কাছে তা বিক্রি করে থাকে। বিগত বছরের ন্যায় এ বছরও গাজীপুরে চামড়ার দাম কম। ছোট, বড় ও মাঝারি আকারের পশুর চামড়ার গড় মূল্য নির্ধারণ করে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি করে থাকে। এছাড়া পাইকারি ব্যবসায়ীদের ও আনাগোনা কম। পশুর চামড়া বিক্রি করতে ঘুরতে হয় ব্যবসায়ীদের ধারে। এতে চামড়ার মূল্য আরও কমে যায়।
গাজীপুরের চন্দনা চৌরাস্তা এলাকার বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম জানান, কোরবানি পশুর চামড়ার দাম খুবই কম। বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে গেলে খরচ ওঠে না। ফলে চামড়া বিক্রি করার ঝামেলা এড়াতে এবং দাম কম থাকায় স্থানীয় মাদরাসায় দান করে দিয়েছি।
চামড়া ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দিন জানান, আমরা বিভিন্ন স্থান থেকে চামড়া সংগ্রহ করে বড় পাইকারদের কাছে বিক্রি করি। তারাও দাম দিয়ে চামড়া নিতে চায় না। তারা আমাদের দাম কম দেয় এতে আমাদেরও কম দামে চামড়া কিনতে হয়। এছাড়া চামড়া কেনার পরেও পরিবহনসহ বিভিন্ন খরচ হয়ে থাকে। সরকার চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিলেও সেই দামে বেচাকেনা হয় না।
রাজাবাড়ী মদিনাতুল উলুম মাদরাসার কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক জানান, বিভিন্ন সমাজ ও এলাকা থেকে মাদরাসায় কোরবানির পশুর চামড়া দান করে থাকে। অনেকেই চামড়া মাদরাসায় পৌঁছে দেয় আবার আমরা গিয়েও তা সংগ্রহ করি। এবছর ব্যবসায়ী কম থাকায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে। প্রতিটি পশুর চামড়া সরকারি গড় মূল্য ছিল ১৩৫০ টাকা। সেই চামড়া ৬০০ টাকা দরে বিক্রি করতে হয়েছে।
গাজীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামুনুর রশিদ বলেন, কোরবানির পশুর চামড়ার দাম কম অথবা সরকারি নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি হচ্ছে না এমন অভিযোগ পাইনি। তবে আমরা তা মনিটরিং করছি।
আরএস/আরআইএস