নীলফামারী: ঈদ বা যেকোনো উৎসবের ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন নীলফামারীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা ওসমানিয়া উদ্যান থেকে। গ্রামীণ পরিবেশে পরিপাটি ও মনোরমভাবে সাজানো এ উদ্যানটি পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম।
উদ্যানটি অবস্থিত নীলফামারী সদর উপজেলার ইটাখোলা ইউনিয়নের কানিয়াল খাতা গ্রামে। ব্যক্তি মালিকানায় গড়ে ওঠা এই দৃষ্টিনন্দন পার্কটি জেলা শহর থেকে খুব বেশি দূরে নয়। চারপাশে সবুজের আবরণে ঘেরা ওসমানিয়া উদ্যান যেন প্রকৃতির কোলে এক খণ্ড সৌন্দর্যের স্বর্গ।
পার্কের বহিরাংশ এবং অভ্যন্তর এককথায় নয়নাভিরাম। মনে হবে যেন কোনো দক্ষ চিত্রশিল্পীর তুলিতে আঁকা কল্পলোকের ছবি। প্রবেশদ্বার পেরিয়েই চোখে পড়বে অপূর্ব এক কৃত্রিম ঝর্ণা, যেখানে একসঙ্গে অনেকগুলো ডলফিনের মুখ থেকে প্রবাহিত হচ্ছে জলের ধারা—যা মুহূর্তেই ভ্রমণপিপাসুদের দৃষ্টি আটকে রাখে।
গ্রীষ্মকাল মানেই রসালো ফলের সময়। তাই পার্কজুড়ে চোখে পড়বে গাছভর্তি পাকা, টকটকে লাল লিচুর থোকা। যদিও এসব লিচু বাণিজ্যিকভাবে আগেই বিক্রি হয়ে গেছে, তবে চোখের আরাম মিলবে বেশ।
সার্বিকভাবে পার্কজুড়ে রয়েছে ফুল, ফল, পাতাবাহার ও বনজ বৃক্ষের সমৃদ্ধ সমাহার, যা খুব সহজেই ক্যামেরাবন্দি হয়ে যাবে। শিশুদের বিনোদনের জন্য রয়েছে মিনি চিড়িয়াখানা ও শিশুপার্ক। চিড়িয়াখানায় দেখা মিলবে হরিণ, ময়ূর, বানর, ঘোড়া, কবুতর, চীনা ও টার্কি মুরগি, ইমু পাখিসহ নানা ধরনের পশুপাখি। এছাড়া সৌদি আরবের দুষ্প্রাপ্য প্রজাতির কয়েকটি দুম্বাও রয়েছে এখানে।
শিশুদের জন্য আছে টয় ট্রেন, নাগরদোলা, চরকি, দোলনাসহ বিভিন্ন রকম খেলার উপকরণ। সেই সঙ্গে রয়েছে সবুজে ঘেরা নীল জলের সুইমিংপুল। পার্কজুড়ে ছড়িয়ে আছে শিল্পসম্মত স্থাপনা ও ভাস্কর্য, যেগুলো একে অন্যান্য পার্ক থেকে আলাদা করে তোলে।
উদ্যানের শিল্পকর্মগুলোতে রয়েছে খ্যাতনামা শিল্পীদের নিপুণ কারুকাজ, যা বিভিন্ন স্থাপনাকে করে তুলেছে প্রাণবন্ত ও জীবন্ত। পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে একবার ঘুরে আসতে পারেন ওসমানিয়া উদ্যান থেকে। শুধুমাত্র শিশু নয়, বড়রাও দৃষ্টিনন্দন এই পার্কে এসে খুঁজে পাবেন একান্ত প্রশান্তি।
নীলফামারীবাসীর গর্ব ও অহংকার হয়ে ওঠা এই ওসমানিয়া উদ্যান ও পার্কে প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি মাত্র ৫০ টাকা। বাড়ির পাশে এমন একটি স্থানে স্বল্প খরচে সময় কাটাতে পারায় পার্কটি হয়ে উঠেছে সব বয়সী মানুষের জন্য জনপ্রিয় এক বিনোদনকেন্দ্র।
এসআরএস