বরগুনা: বিস্ফোরকদ্রব্য ও ভাঙচুরের মামলায় হাজিরা দিতে এসে আদালত চত্বরে সাবেক খাদ্য উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ওপর ডিম নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) বরগুনার অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুজ্জামান মনিরের আদালতে হাজির করার সময় এ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে করে শম্ভুকে বরগুনা আদালত প্রাঙ্গণে আনা হলে বাইরে অপেক্ষমাণ বিক্ষুব্ধ একদল ব্যক্তি তার দিকে ডিম ছুড়ে মারেন।
এরপর আদালতে শম্ভুর জামিন আবেদন করা হলে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক তা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বরগুনা জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন বলেন, ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু একজন দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি। তিনি কখনও সুষ্ঠু নির্বাচনে জয়ী হননি। একসময় স্বতন্ত্র প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনের কাছে এবং সর্বশেষ আওয়ামী লীগেরই ডামি প্রার্থী টুকুর কাছেও পরাজিত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ঢাকায় দুটি হত্যা মামলা এবং দুদকের দুর্নীতির মামলাও রয়েছে।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী আখতারুজ্জামান বাহাদুর বলেন, মামলায় যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলো ভিত্তিহীন। ঘটনার দিন বরগুনা জেলা বিএনপি কার্যালয়ে কোনো ভাঙচুর বা নৈরাজ্য হয়নি। আমরা ডিভিশনের আবেদন করেছি এবং আদালত জেল কোড অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। তার সঙ্গে দেখা করে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৭ মার্চ বরগুনা জেলা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর, সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অগ্নিসংযোগ এবং হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় নৈরাজ্য সৃষ্টির অভিযোগে গত ৩০ এপ্রিল বরগুনা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি করেন বরগুনা জেলা বিএনপির প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক এসএম নজরুল ইসলামের ছেলে এসএম নঈমুল ইসলাম। ওই মামলায় ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে প্রধান আসামি করে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের আরও ১৫৮ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।
আদালত চত্বরে সাবেক এমপির ওপর প্রকাশ্যে ডিম ছুড়ে মারার ঘটনায় বরগুনায় রাজনৈতিক উত্তেজনা নতুন করে চাঙা হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের এমন আচরণ আইনশৃঙ্খলা ও সম্মানজনক বিচারপ্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। সাবেক উপমন্ত্রীর জামিন নামঞ্জুর ও তাকে কারাগারে পাঠানোর মধ্য দিয়ে বরগুনার রাজনীতিতে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এসআরএস