দেশের রাষ্ট্র মেরামতের প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন ধরনের সংস্কারের দরকার আছে, কিন্তু এসব পরিবর্তনে একমত না হওয়াকে গণতন্ত্রের স্বাভাবিক অঙ্গ হিসেবে দেখা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বিবিসি বাংলায় সম্প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব বলেন।
সংস্কারের বিভিন্ন বিষয়ে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির মতবিরোধ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তারেক রহমান বলেন, ‘এটি তো গণতন্ত্র হলো না, আমাকে অন্যের সঙ্গে একমত হতে হবে, আমি যদি দ্বিমত করি তাহলে গণতন্ত্র না, এটা কেমন গণতন্ত্র?’
‘এক ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা বা দলের প্রধান একইসঙ্গে থাকবেন না’- জামায়াতসহ কিছু রাজনৈতিক দলের এমন প্রস্তাবনা নিয়ে প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘বিএনপি আগে থেকেই রাষ্ট্রগঠন ও জাতীয় স্বার্থের কথা ধরে রেখেছে এবং অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েছে। ’
তারেক রহমান জোর দিয়ে বলেন, ‘একজন ব্যক্তি দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না, থাকবেন না, এ রকম আরও বিষয়গুলো আছে—বাংলাদেশে যখন স্বৈরাচার ছিল, তাদের মুখের ওপর তাকিয়ে আমরা বিএনপিই বলেছিলাম। ’
তবে ‘এক ব্যক্তি তিন পদে থাকলে তা স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা তৈরি করবে কিনা’—এসব আপত্তিকে তিনি কেবল আইন-পরিবর্তনের দ্বারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্বৈরাচারী বলে মানতে নারাজ।
তিনি ২০০৮ ও ২০০১ সালের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গুরুত্ব নিয়ে জনগণ যে প্রত্যাশা করে, তা আমরা বুঝি; কিন্তু ২০০৮ সালে টু-থার্ড মেজরিটি নিয়ে যারা কিছু করেছিলেন, তারা তা বদলে ফেলেছে। ২০০১ সালে বিএনপির টু-থার্ড মেজরিটি ছিল—তারা বদল করেনি। ’
তারেক রহমান বলেন, ‘কোনো ব্যক্তির হাতে ক্ষমতার একযোগিতা থাকলেই স্বৈরাচার হবে না; বিষয়টি নির্ভর করে ব্যক্তি ও প্রেক্ষাপটের ওপর, কেবল আইনের বদলেই সব ঠিক হয়ে যাবে না। ’
একইভাবে ২০২৩ সালে বিএনপি যে ৩১ দফা প্রস্তাব দিয়েছিল, তাতে তুলে ধরা ভারসাম্য এবং জবাবদিহিতার প্রয়োজন এখনও দলটির অবস্থানের কেন্দ্রবিন্দুতে আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের অবস্থান পরিবর্তন হয়নি; যতটুকু ভারসাম্য হওয়া উচিত, আমরা সে বিবেচনার মধ্যে আছি। ’
গণতন্ত্রে বিভিন্ন মতামতের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, যে বিষয়ে তার দৃষ্টিতে ঠিক মনে হয়, তিনি তা প্রকাশ করবেন; আর বিএনপি যদি কোনো প্রস্তাবে একমত না হয়, সেটিকে গণতন্ত্র-বহির্ভূত বলে বাতিল করে দেওয়া উচিত নয় বলেও মনে করেন তিনি।
এসবিডব্লিউ/আরবি