ঢাকা, শুক্রবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ মে ২০২৪, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

টাওয়ার শেয়ারিং বাধ্যতামূলক করা উচিত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৮ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০২২
টাওয়ার শেয়ারিং বাধ্যতামূলক করা উচিত

ঢাকা: মোবাইল ফোন অপারেটরদের জন্য অবকাঠামো তথা টাওয়ার শেয়ারিং অতি শিগগিরই বাধ্যতামূলক করা উচিত মতামত দিয়েছেন টেলিকম খাতের সংশ্লিষ্টরা। এতে ব্যয় কমার পাশাপাশি সেবার মান উন্নত হবে বলে মনে করছেন তারা।

মোবাইল ফোন অপারেটর এবং বিশেষজ্ঞদের এই মতে সায় দিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার অপারেটরদের তাদের টাওয়ারগুলো টাওয়ার কোম্পানির হাতে ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টার ইনে টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (টিআরএনবি) আয়োজিত ‘নেটওয়ার্ক উন্নয়নে অবকাঠামো ভাগাভাগির চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে তারা মতামত তুলে ধরেন।

বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল মতিন বলেন, পৃথকভাবে ইনভেস্ট না করে শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে কীভাবে জনগণকে সেবা দিতে পারি, তা নীতি নির্ধারকদের দেখতে হবে। শেয়ারিংয়ের জন্য বিটিসিএলে এলে ‘হ্যাঁ’ সূচক বক্তব্য পাবেন।

টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সাহাব উদ্দিন বলেন, অবকাঠামো তথা টাওয়ার শেয়ারিং হলে ছোট অপারেটররা বেশি উপকৃত হবে। কোয়ালিটি অব সার্ভিস বাড়াতে হলে টাওয়ার শেয়ারিং করতে হবে। এজন্য একটিভ শেয়ারিং প্রয়োজন।

বেসরকারি ফাইবার এ হোমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মইনুল হক সিদ্দিকী বলেন, অপারেটরদের সেবা দিতে এক লাখ টাওয়ার লাগবে। এজন্য কে কোথায় টাওয়ার করবে তা সেটা নির্দিষ্ট করে দেওয়া উচিত।

টেলিকম বিশেষজ্ঞ মনজুর হোসেন বলেন, উইন উইন সিচ্যুয়েশনে একই টাওয়ার শেয়ার করে অনেকে ব্যবহার করলে সেখানে বিনিয়োগের অর্থ অন্য খাতে ব্যবহার করা যাবে। এতে সেবার মান বাড়বে।

নেটওয়ার্ক ও অবকাঠামো শেয়ারিংয়ের দৃষ্টান্ত দিয়ে আইএসপিএবি সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, ব্রডব্যান্ডের ক্ষেত্রে তারা ধানমন্ডি এলাকায় ৫০টি পপ এর স্থলে তিনটিতে নামিয়ে এনেছেন। এতে ভোগান্তি এবং তাদের জট কমেছে। কোয়ালিটি অব সার্ভিসের জন্য একটিভ শেয়ারিং দরকার।

বাংলালিংকের চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, সব অপারেটরের জন্য টাওয়ার শেয়ারিং অতি শিগগিরই বাধ্যতামূলক করা উচিত বলে আমি মনে করি। দেশের বর্তমান জ্বালানি সংকটে আমাদের দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা যদি যৌথভাবে অবকাঠামো ব্যবহার করতে পারি তাহলে বিদ্যুৎ ও অন্যান্য শক্তির সঠিক ব্যবহার হবে। আমি সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি টাওয়ার শেয়ারিং দ্রুত বাধ্যতামূলক করার জন্য, যাতে সব পক্ষ এই ব্যবস্থা থেকে উপকৃত হতে পারে।

গ্রামীণফোনের সিসিএও হোসেন সাদাত বলেন, গত চার বছরে টাওয়ার শেয়ারের জন্য কোনো অপারেটরের পক্ষ থেকে অ্যাগ্রিমেন্টের প্রস্তাব করা হয়নি। অ্যাগ্রিমেন্ট না করতে পারলে কোনো অপারেটরকে শেয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে দোষারোপ করা ঠিক নয়।

রবির এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট (ইভিপি) অনামিকা ভক্ত বলেন, গত চার বছরে অপারেটরদের টাওয়ার শেয়ার করা যায়নি। তারা দুই অপারেটরকে প্রস্তাব দিলেও একটি অপারেটর থেকে ফিডব্যাক পেয়েছেন। অপারেটরদের কোন কোন টাওয়ার শেয়ার করা যায়, তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হলে তা দেখে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

অপারেটর এবং টেলিকম বিশেষজ্ঞদের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, এমএনওদের (মোবাইল ফোন অপারেটর) যে টাওয়ার আছে তা টাওয়ার কোম্পানিকে ছেড়ে দেন। এতে বড় ধরনের ইনভেস্টমেন্ট কমে যাবে। সেই অর্থ গুণগতমান উন্নত করতে ব্যবহার করতে পারবেন।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, একটিভ শেয়ারিং জরুরি বিষয়। এটাকে প্যাসিভ শেয়ারিংয়ের ভেতরে রাখলে যে সুবিধা তা পাওয়া যাবে না। আমরা চেষ্টা করছি এই নীতিমালা দ্রুত করবো। যতদিন নীতিমালা চূড়ান্ত না হবে ততদিন বিটিআরসির অনুমতি নিয়ে একটিভ শেয়ারিং করা যায়।

বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, গুণগত সেবা বৃদ্ধির জন্য অপারেটরদের থেকে প্রস্তাব এলে রেগুলেটর থেকে তা ইতিবাচক সাড়া দেওয়া হবে। তিনি অপারেটরদের সেবার গুণগত মান বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

টিআরএনবি সভাপতি রাশেদ মেহেদীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাসুদুজ্জামান রবিনের সঞ্চালনায় গোলটেবিল আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টেলিকম বিশেষজ্ঞ টি আই এম নুরুল কবির।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০২২
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।