ঢাকা, শনিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কলাগাছের আঁশ দিয়ে তৈরি হচ্ছে সোনালী রঙের সুতা ! 

উত্তম ঘোষ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০২২
কলাগাছের আঁশ দিয়ে তৈরি হচ্ছে সোনালী রঙের সুতা ! 

যশোর: যশোরে কলা কেটে নেওয়ার পরে অব্যবহৃত গাছের আঁশ থেকে তৈরি হচ্ছে সোনালী রঙের সুতা। দেশ-বিদেশের বাজারে পরিবেশবান্ধব এই সুতার চাহিদা প্রচুর, তবে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হিসেবে অর্থনৈতিক-যান্ত্রিক নানা সীমাবদ্ধতার কারণে সম্ভব হচ্ছে না বড় পরিসরের উৎপাদন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, যশোর সদর উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নের মুনসেফপুর গ্রামের শিমুল হোসেন নিজ বাড়িতে কলা গাছ থেকে সুতা তৈরির মেশিন বসিয়েছেন। কলাগাছ দিয়ে সুতা তৈরি করছেন তিনি। প্রতিকেজি সুতা পাইকারি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বিক্রি করে থাকেন শিমুল।

তরুণ উদ্যোক্তা শিমুল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, কৃষকরা কলা গাছ থেকে করা কেটে নেওয়ার পরে গাছ ফেলে দিলে তার কর্মীরা মাঠ থেকে পরিত্যক্ত এসব কলাগাছ সংগ্রহ করে নিজস্ব ইঞ্জিনচালিত ভ্যানে বাড়ি নিয়ে আসেন। এরপর প্রতিটি কলাগাছের দুই দিকের অংশ কেটে ফেলে খোলস করে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি বিদ্যুৎ চালিত সেমিঅটো মেশিনের মধ্যে দিযে বের করা হয় আশ যুক্ত সুতা। এই সুতা শুটকি শুকানোর মতো বাঁশের আড়ে দিয়ে রোদে শুকানো হয়। শুকানোর পর এই সুতার রং হয় সোনালী। তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ কেজি সুতা একজন মানুষ তৈরি করতে পারে। এতে খরচ বাদে প্রতিদিন ৮ থেকে ৯শ’ টাকা লাভ হয়। তবে, প্রযুক্তিগত পরিবর্তন ও অটোমেশন মেশিনে আরও বেশি উৎপাদন করা সম্ভব হতে পারে।

স্থানীয় আরেকজন উদ্যোক্তা এম.আর রুবেল বাংলানিউজকে বলেন, এই সুতা পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বিদেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সরকারি সুযোগ সুবিধা পেলে আরও বেশি সুতা উৎপাদন করা সম্ভব। এমনকি, সরকার ইচ্ছা করলে এই সেক্টরে সহযোগিতার মাধ্যমে আরও উদ্যোক্তা সৃষ্টি করে কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারে।  

এদিকে, অব্যহৃত কলাগাছ থেকে দেশীয় প্রযুক্তিতে সুতা তৈরিকে ইতিবাচক হিসাবে দেখছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগ। এ প্রসঙ্গে যশোর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার শেখ সাজ্জাদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, একদিকে ফেলে দেওয়া কলাগাছ থেকে সুতা তৈরি হচ্ছে। অন্যদিকে, ওই গাছের অব্যহৃত অংশ দিয়ে জৈব সার হচ্ছে।  

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করর্পোরেশন (বিসিক) যশোরের ডিজিএম গোলাম হাফিজ বাংলানিউজকে বলেন, কলাগাছ থেকে সুতা তৈরির বিষযটি তিনি জেনেছেন৷ এ ব্যাপারে বিস্তারিত খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করতে তারা প্রস্তুত রয়েছেন। সরকারি নিয়ম মেনে কেউ সুবিধা চাইলে অবশ্যই দেওয়া হবে।

তিনি মনে করেন, স্বল্প সুদে এসব তরুণ উদ্যোক্তাদের ঋণের ব্যবস্থা করা গেলে এ ধরনের উদ্যোগ টিকিয়ে রাখা সম্ভব। সেই সঙ্গে সরকারিভাবে তদারকি করলে বিদেশে সুতা রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যাবে বলেও মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০২২
ইউজি/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।